সঞ্জু সুর,সাংবাদিক:- পঞ্চম দফার দুয়ারে সরকার ক্যাম্প শুরু হয়েছে রাজ্যজুড়ে। এই ক্যাম্প গুলোতে সাধারণ মানুষের হয়রানি রুখতে এগারো দফা নির্দেশিকা জারি করলো নবান্ন। বিশেষ করে দালাল রাজ রুখতে কঠোর পদক্ষেপের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গত চার দফার ‘দুয়ারে সরকার’ বা ‘পাড়ায় সমাধান’ ক্যাম্পে সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি মানুষকে সরকারি পরিষেবা পৌঁছে দিয়েছে রাজ্য সরকার। ‘দুয়ারে সরকার’ ক্যাম্পের এই সাফল্য যে পঞ্চম দফার ক্ষেত্রেও বজায় থাকবে সেই বিষয়ে একপ্রকার নিশ্চিত নবান্নের কর্তারা। কিন্তু অতীতে এই ক্যাম্পে অর্থের বিনিময়ে পরিষেবা পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে বেশকিছু ক্ষেত্রে। ফলে এবার এই বিষয়টিতে বিশেষ নজর রাজ্য প্রশাসনের। নবান্নের পক্ষ থেকে দুয়ারে সরকার ক্যাম্প নিয়ে একটি সাধারণ নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে সংশ্লিষ্ট সব আধিকারিকদের। সেখানে যে এগারো দফা নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে তার সাত নম্বর পয়েন্টে বলা হয়েছে, দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে পরিষেবা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে যদি কেউ কারও কাছ থেকে টাকা আদায় করে (extortion) বা যদি কোনো দালাল (touts) কোনোরকম বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করে তাহলে তৎক্ষণাৎ তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। সেই সঙ্গে ক্যাম্পে আইনশৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকদের নজরদারি চালাতে হবে। সর্বোচ্চ পর্যায়ে পুলিশ মোতায়েন করতে হবে। প্রয়োজনে পর্যাপ্ত পরিমানে হোমগার্ড, সিভিক পুলিশ রাখতে হবে।
এছাড়াও নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ক্যাম্পে সব রকম বন্দ্যোবস্ত এমনভাবে করতে হবে যাতে সাধারণ মানুষ কোনো রকম নেতিবাচক ভাবনা নিয়ে ক্যাম্প থেকে ফেরত না যান। শুধুমাত্র শহর বা আধাশহর নয়, এবার ক্যাম্প করতে হবে এমন চা বাগান বা আদিবাসী অধ্যুষিত এলাকায় যেখানে এর আগে ক্যাম্প করা হয় নি। ক্যাম্পগুলোতে পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা রাখার নির্দেশ যেমন দেওয়া হয়েছে তেমনি পর্যাপ্ত বাথরুম, ফার্স্ট এইড এর ব্যবস্থাও রাখতে হবে। বিগত চার দফার তুলনায় এবারের দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে অনেক বেশি পরিষেবা সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হচ্ছে। রাজ্য সরকারের ১৬ টি দফতরের মোট ২৭ টি প্রকল্পের পরিষেবা একমাস ধরে চলা এই ক্যাম্পে পাওয়া যাবে। ফলে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ যে ক্যাম্পমূখী হবেন তা বলাই যায়।
এদিকে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সম্ভবতঃ এটাই শেষ দুয়ারে সরকার ক্যাম্প। এদিকে ক্যাম্পে এসে সাধারণ মানুষ যদি কোনো রকম হয়রানির শিকার হন তাহলে তার এফেক্ট নির্বাচনে পড়তে পারে। সেই কারণেই এগারো দফা নির্দেশিকা বলে মনে করছেন অনেকে। তবে নবান্নের কর্তাদের মত, প্রতিটা ক্যাম্পের আগেই এই ধরনের সাধারণ নির্দেশিকা পাঠানো হয়ে থাকে। নির্বাচনের সঙ্গে এর কোনো যোগ নেই।