সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক – বর্তমান যুগের জীবন যাপনের ফলে বেড়েছে ফ্যাটি লিভারের মতো অসুখ। আগে এই অসুখ তেমন একটা দেখা না গেলেও এখন ঘরে ঘরে এই রোগী। তবে এই অসুখ যে হয়েছে তা বেশিরভাগ মানুষই বুঝতে পারেন না। ফ্যাটি লিভার রোগীরা কিছু খাবার খেলে রোগ জটিল দিকে ঘুরে যায়। আমাদের লিভারে কিছুটা ফ্যাট সঞ্চিত থাকে। তবে সেই ফ্যাটের পরিমাণ বাড়লেই সমস্যা বাড়ে। সেক্ষেত্রে ফ্যাটি লিভার রোগটি হয়। এবার এই অসুখটি ভিতরে ভিতরে বাড়তে থাকে। একটা সময় গিয়ে নানা জটিলতা তৈরি হয় এই রোগ থেকে। তাই প্রতিটি মানুষকে অসুখটি নিয়ে সতর্ক হতে হবে। বহু মানুষই এই রোগটিকে অগ্রাহ্য করেন। এমনকী ফ্যাটি লিভারের লক্ষণ জানে না। সেক্ষেত্রে অসুখটি সম্পর্কে অজ্ঞানতা সমস্যা বাড়ায়। যার ফলাফল স্বরূপ লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত হয় রোগীরা। খাবার নিয়ে সতর্ক হলে তবেই এই রোগে সুস্থ থাকা যাবে। বেশিরভাগ মানুষ কিন্তু ফ্যাটি লিভার নিয়ে সচেতন নন। এক্ষেত্রে কয়েকটি খাবার অবশ্যই এড়িয়ে যেতে হবে। তবেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।
১) রেডমিটকে না – রেডমিট খুবই খারাপ একটি খাদ্য। নানা ক্ষতিকর উপাদান এতে রয়েছে। দেখা গিয়েছে রেডমিট খেলে শরীরে কোলেস্টেরল বাড়ে। এমনকী বৃদ্ধি পায় ইউরিক অ্যাসিড। এবার মাথায় রাখতে হবে যে রেডমিট শরীরের অন্দরে নানা জটিলতা তৈরি করে। এই মাংসে থাকে স্যাচুরেটেড ফ্যাট। এই ফ্যাট কিন্তু লিভারে জমতে পারে। তাই ফ্যাটি লিভার রোগীরা সাবধান। রেডমিট একদম খাবেন না। এতে সমস্যা বাড়বে।
২) মদ্যপান একদম নয় – এই রোগের অন্যতম মুখ্য কারণ মদ্যপান। এক্ষেত্রে অ্যালকোহোলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ বলে একটি রোগ রয়েছে। এই রোগটি কিন্তু জটিলতা তৈরি করে। দেখা গিয়েছে যে মদ্যপান করলে সরাসরি লিভারের উপর পড়ে প্রভাব। তখন শরীরে সমস্যা দেখা দেয়। তাই যকৃতে মেদ জমলে আপনি এর থেকে দূরে যান। দিনে এক পেগ বা মাসে এক পেগও পান করা যাবে না। খেলেই শরীর খারাপ করতে পারে। এই কথাটা মাথায় রাখুন। তবেই ভাল থাকতে পারবেন।
৩) রিফাইন খাবার নয় – আসলে রিফাইন খাবার এখন প্রচুর মানুষ খেয়ে থাকেন। এই তালিকায় ময়দা থেকে শুরু করে চিনি রয়েছে। এবার এই খাবারগুলি দেহে নানা জটিলতা তৈরি করে। এমনকী খুব বেশি ক্যালোরি প্রবেশ করে শরীরে। তাই রিফাইন খাবার থেকে আপনাকে দূরে যেতে হবে। তবেই আপনি সুস্থ থাকবেন। ফ্যাটি লিভারকে আনা যাবে নিয়ন্ত্রণে। তাই সতর্ক থাকার চেষ্টা করুন। এছাড়া রিফাইন খাবার ডায়াবিটিস রোগীরাও খাবেন না।
৪) বড় মাছ – মাছ খাওয়া খুবই ভাল। এর মধ্যে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন। সেই প্রোটিন শরীর সহজে গ্রহণ করে। এছাড়া নানা খনিজ, ভিটামিন ও ফ্যাট থাকে যা আমাদের সুস্থ রাখে। তবে বড় মাছ খাওয়া একবারেই ভাল নয়। সেক্ষেত্রে ২.৩ থেকে ৩ কিলোর উপরের মাছে থাকে বেশি চর্বি। এই মেদ কিন্তু শরীরের জন্য খারাপ। তাই মাছ খাওয়ার হলে ছোট খান। বড় মাছ ফ্যাটি লিভার বাড়াতে পারে।
৫) ডিপ ফ্রায়েড ফুড – ডিপ ফ্রায়েড ফুড খেলে ফ্যাটি লিভারের সমস্যা বাড়বে। এই খাবার শরীরের জন্য খুবই খারাপ। প্রচুর তেল থাকায় তা ক্ষতি করে। এমনকী দেহে মেদের পরিমাণ বাড়ায়। তাই লুচি, পরোটা, ভাজা খাবার থেকে দূরে থাকুন। এছাড়া বাইরের ফাস্ট ফুড খাওয়া যাবে না। এতে সমস্যা বাড়ে। তাই সতর্ক হয়ে যান। তবেই সুস্থ থাকা যাবে।