Date : 2024-04-19

রাজ্যের দুয়ারে কেন্দ্রের পুরষ্কার। উৎফুল্ল নবান্ন, উচ্ছ্বসিত রাজ্যের শাসক দল।

সঞ্জু সুর, সাংবাদিক :- অমিত শাহ্ কলকাতা থেকে দিল্লি ফেরার পরপরই দিল্লি থেকে এল সুসংবাদ। কেন্দ্রের বিচারে রাজ্যের মুকুটে আরেকটি পালক। সারা দেশের নিরিখে সরকারি পরিষেবা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার কাজে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের “দুয়ারে সরকার” কর্মসূচি পেল প্লাটিনাম পুরষ্কার। জানুয়ারী মাসে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মূর্মূ এই পুরষ্কার রাজ্যের হাতে তুলে দেবেন।

২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর থেকে রাজ্যে একটি ইউনিক কর্মসূচি নেওয়া হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত এই কর্মসূচির নাম রাখা হয় “দুয়ারে সরকার”। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য হলো সরকারের যাবতীয় বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা সরাসরি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা। রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় ক্যাম্প করা হয়। সেই ক্যাম্পে সরকারি আধিকারিকরা থাকেন। এলাকার সাধারণ মানুষ সরাসরি ক্যাম্পে গিয়ে বিভিন্ন প্রকল্পের বিষয়ে খোঁজখবর নেওয়া এবং তাঁর প্রয়োজনীয় প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে পারেন। লক্ষীর ভান্ডার থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য সাথী, জাতিগত শংসাপত্র, জমির মিউটেশন, কিষাণ ক্রেডিট কার্ড সহ একাধিক বিষয়ে আবেদন জমা দেওয়া যায় এইসব ক্যাম্পে। শুরু হ‌ওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত মোট পাঁচ দফায় “দুয়ারে সরকার” ক্যাম্প করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ৩ লক্ষ ৬১ হাজার ক্যাম্পে মোট ৬ কোটি ৬০ লক্ষের বেশি উপভোক্তা তাদের আবেদন জমা দিয়েছেন এবং সরকারি প্রকল্পের সুবিধা লাভ করেছেন। একটা মাত্র সরকারি কর্মসূচির মাধ্যমে এত বেশি মানুষের কাছে পৌঁছে যাওয়ার এই প্রচেষ্টাকেই পুরষ্কৃত করছে কেন্দ্রের তথ্য প্রযুক্তি দফতর। এই দফতরের বিচারে ২০২২ সালে দেশের সব রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্প বা কর্মসূচির মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের “দুয়ারে সরকার” কর্মসূচি পেয়েছে প্লাটিনাম পুরষ্কার। আগামি ৭ জানুয়ারি দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে রাজ্যের হাতে এই পুরস্কার তুলে দেবেন দেশের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মূর্মূ। “দুয়ারে সরকার”-এর পুরষ্কার প্রাপ্তির খবর আসার পর পরই নবান্নের এক শীর্ষ আমলা বলেন, “এই সম্মান একান্ত ভাবেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাপ্য।

এই ধরনের একটা কর্মসূচির কথা প্রথম তাঁর মাথাতেই আসে। তিনিই আমাদের প্রেরণা দিয়েছিলেন এবং এখনও প্রতিনিয়ত তিনি এই কর্মসূচি নিয়ে ভাবেন।” রাজ্য অর্থ দফতরের এক আধিকারিকের মন্তব্য, “একজন মুখ্যমন্ত্রী যেভাবে দুয়ারে সরকার ক্যাম্প নিয়ে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে খোঁজ নেন এবং মাঝে মাঝে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেন, তা না দেখলে বোঝা যাবে না।” এদিকে কেন্দ্রের এই পুরষ্কার পাওয়া নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই উচ্ছ্বসিত তৃণমূল নেতৃত্ব।

তৃণমূল কংগ্রেস মুখপাত্র কুনাল ঘোষ বলেন, “যে চার আনার বিজেপি নেতারা এখানে এসে বড় বড় রাজনৈতিক কুৎসা করেন, তাদের মুখে ঝামা ঘষে দিলো কেন্দ্রীয় সরকারেরই একটি রিপোর্ট, একটি সম্মান যা আগামি ৭ জানুয়ারি মাননীয় রাষ্ট্রপতি রাজ্যের হাতে তুলে দেবেন। এই সম্মান প্রমাণ করে দিলো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আজ যা ভাবে গোটা দেশ, ডবল ইঞ্জিনের সরকার, বিজেপির সরকার আগামিকাল তাই ভাবে।”