Date : 2024-04-26

আবাস যোজনা-মার্চের মধ্যে বাড়ি তৈরি করে ফেলুন, নাহলে কেন্দ্রের টাকা আসবে না: নবান্ন

সঞ্জু সুর, সাংবাদিক : আবাস যোজনার নতুন তালিকাভুক্ত প্রায় সাড়ে দশ লক্ষ বাড়ি তৈরি করতে হবে ৩১ মার্চের মধ্যে। তারজন্য প্রশাসনিক কর্তাদের যেমন দায়িত্ব নিতে হবে, তেমনি দায়িত্ব নিতে হবে উপভোক্তাদের‌ও। বাড়ি তৈরির স্টেপ বাই স্টেপ ডেটলাইন জানিয়ে দিল নবান্ন।

গত প্রায় মাস দুয়েকের বেশি সময় ধরে আবাস যোজনা নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দুর্নীতির অভিযোগে যথেষ্টই অস্বস্তিতে রাজ্য সরকার। আবাস যোজনায় বাড়ি পাওয়ার মান্যতা সূচকের বাইরে গিয়ে অনেকের নাম তালিকায় চলে আসায় সরকারের পক্ষ থেকে নতুন করে ঝাড়াই বাছাই করা হয়েছে। বাদ দেওয়া হয়েছে প্রচুর নাম, আবার অনেক নাম নতুন করে যোগ করাও হয়েছে। শেষমেষ তালিকা সম্পূর্ণ করে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রকে পাঠিয়েও দেওয়া হয়েছে। এবার সেই তালিকাভুক্ত বাড়ি যাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শেষ করে ফেলা যায় তার উপরে জোর দিচ্ছে নবান্ন। সোমবার মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী এই বিষয় নিয়ে বৈঠক করেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের সঙ্গে। বৈঠকে বাড়ি তৈরির নোডাল এজেন্সি (বা দফতর) পঞ্চায়েত দফতরের সচিব সহ প্রতিটা জেলার জেলা শাসক ও অন্যান্য দফতরের আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই বাড়ির নির্মাণ কাজের ডেটলাইন জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারণ হিসাবে বলা হয়েছে ৩১ মার্চের মধ্যে বাড়ির নির্মাণ কাজ শেষ করে শংসাপত্র দিতে না পারলে আবাস যোজনার পরের কিস্তির টাকা পাওয়া যাবে না। যাতে রাজ্যের ভাবমূর্তি ধাক্কা খেতে পারে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের বছরে যা কোনোমতেই চাইছেন না মুখ্যমন্ত্রী। সূত্রের খবর, বৈঠকে যে ডেটলাইন ঠিক করে দেওয়া হয়েছে তা এরকম –
১) জানালা অবধি কাজ শেষ করতে হবে কাজ শুরুর চল্লিশ দিনের মধ্যে।
২) পরের ধাপে লিন্টেল পর্যন্ত কাজ শেষ করতে হবে তার পরের ৩৫ দিনের মধ্যে। এবং,
৩) তার পরের পনেরো দিনের মধ্যে সম্পূর্ণ বাড়ি তৈরি ও ভেরিফিকেশন এর কাজ শেষ করে রিপোর্ট জমা দিতে হবে।
এই যে ডেটলাইন করা হয়েছে তাতে উপভোক্তাদের ভূমিকার উপরেও জোর দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনিক কর্তারা যেমন বাড়ির নির্মান কাজের অগ্রগতির দিকে কঠোর দৃষ্টি দেবেন ঠিক তার পাশাপাশি উপভোক্তারাও কিস্তির টাকা পাওয়ার পর যেন বাড়ির কাজ করানোর ক্ষেত্রে কোনো গড়িমসি না করেন, সেটাও নিশ্চিত করতে হবে। প্রয়োজনে উপভোক্তাদের সঙ্গে দেখা করে তাদের বোঝাতে হবে কেন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বাড়ি তৈরির কাজ শেষ করতে হবে। তাদের বোঝাতে হবে বাড়ি তৈরির প্রতিটা স্টেপ এর ছবি তুলে পাঠাতে হবে। যাকে জিও-ট্যাগিং বলে। আসলে তালিকা তৈরির ক্ষেত্রে যে জটিলতা বা বিতর্ক দেখা দিয়েছিলো, বাড়ির নির্মাণ কাজের ক্ষেত্রে যেন তেমন কোনো জটিলতা বা বিতর্ক না আসে সেটাই নিশ্চিত করতে চাইছে নবান্ন। তাই মুখ্যসচিবের এমন কঠোর ডেটলাইন বেঁধে দেওয়া। এমনটাই মনে করছেন বৈঠকে উপস্থিত আমলাদের অনেকে।