সঞ্জু সুর, সাংবাদিক : ১১ জানুয়ারি থেকে রাজ্যব্যাপি শুরু হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন কর্মসূচি ‘দিদির সুরক্ষা কবচ।’ এই কর্মসূচির অন্যতম অঙ্গ হল ‘অঞ্চলে একদিন’। এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের বাড়ি ও এলাকায় পৌঁছাচ্ছেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ, বিধায়ক থেকে শুরু করে অন্যান্য বিশিষ্ট নেতারা। সরাসরি শুনছেন মানুষের অভাব, অভিযোগের কথা। শুক্রবার এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে রাজ্যের ৫৯ টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় পৌঁছে যান তাঁরা।
গত ২ জানুয়ারি নজরুল মঞ্চে এক সাংবাদিক সম্মেলন করে তৃণমূল কংগ্রেসের নতুন এক কর্মসূচির ঘোষণা করেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেদিনই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন ১১ জানুয়ারি থেকে এই কর্মসূচির কাজ শুরু হবে। সেই মোতাবেক গত ১১ তারিখ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে একযোগে তৃণমূলের নেতা নেত্রীরা জনসংযোগ শুরু করেছিলেন। এখনও পর্যন্ত এই তিন দিনে মোট ১৫০ টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন তাঁরা। শুক্রবার রাজ্যের মোট ১৩ টি জেলার ৫৯ টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় গিয়েছিলেন শতাব্দী রায় থেকে শুরু করে খলিলুর রহমান সহ সাংসদ, বিধায়কেরা। জেলাগুলি হলো মুর্শিদাবাদ, নদীয়া, উত্তর চব্বিশ পরগনা, হাওড়া, হুগলি, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বর্ধমান ও বীরভূম। ‘অঞ্চলে একদিন’ এই কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে কোথাও মধ্যাহ্নভোজন করা বা ছোট জনসভা করা অথবা কোন সরকারি প্রতিষ্ঠান ঘুরে দেখার কাজ করছেন তৃণমূলের নেতারা। অনেক জায়গাতেই তাঁদের ঘিরে ধরে ক্ষোভ, বিক্ষোভ দেখিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
কোথাও তাদের ক্ষোভ কেন রাস্তা হলো না, তো কোথাও তাদের বিক্ষোভের কারণ আবাস যোজনায় ঘর না পাওয়া নিয়ে। তবে সব জায়গাতেই দিদির দূত হিসাবে যাওয়া এই নেতা বা নেত্রীরা মনোযোগ দিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের অভাব, অভিযোগের কথা শুনেছেন। নিজেদের সাধ্যমতো আশ্বাস বানী দিয়েছেন। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই কর্মসূচিকে হাতিয়ার করে বিশেষ করে গ্রাম বাংলার মানুষের ক্ষোভ প্রশমন করাই তৃণমূল কংগ্রেসের আসল লক্ষ্য, তেমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক তথ্যাভিজ্ঞ মহল। রাজ্যস্তরীয় এক বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতার বক্তব্য এগারো বছর ক্ষমতায় থাকা দলের বিরুদ্ধে কোনো কোনো জায়গায় মানুষের ক্ষোভ থাকবে এটাই তো স্বাভাবিক। তবে দিদি ও অভিষেকের মস্তিস্কপ্রসূত এই কর্মসূচি কিন্তু মানুষের সেই ক্ষোভকে অনেকটাই আটকাতে পারবে। কারণ মানুষ যতক্ষণ তার ক্ষোভ বা অভিযোগ মনের মধ্যে রেখে দিচ্ছে ততক্ষণ সেটা দলের জন্য খারাপ। একবার যদি সে তার মনের কথাটা প্রকাশ্যে শীর্ষ নেতাদের সামনে বলতে পারে, তাহলে আপনা আপনিই অনেকটা ক্ষোভ প্রশমন হয়ে যায়। মানুষের মনের ক্ষোভ সত্যিই প্রশমিত হলো নাকি তা তাদের মনের মধ্যে থেকে গেল , তার উত্তর পাওয়া যাবে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফলে।