Date : 2024-04-23

এজলাসে বসন্ত

সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক – ঘড়ির কাঁটায় তখন দুপুর ২.৫০। এজলাসে ভার্চুয়াল স্ক্রিণে দেখা গেল বহুল চর্চিত পার্থ- অর্পিতাকে। বহু দিন পর একে অপরকে দেখে মুচকি হাসলেন। ইশারায় একে অপরকে জিজ্ঞাসা করলেন ভাল আছেন কিনা! দুজনেই মাথা নেড়ে সম্মতি জানালেন ভাল আছেন।

এরপর ঘড়িতে তখন ২.৫৪। পার্থ ইশারায় অর্পিতার কাছে জানতে চাইলেন খেয়েছেন কিনা, পাল্টা একই প্রশ্ন জানতে চাইলেন অর্পিতা। এরই মধ্যে পার্থকে ইশারায় ফের অর্পিতা জিজ্ঞেস করে শুনতে পারছো? পার্থ উত্তর দেন না। আবারও ইশারায় একই প্রশ্ন পার্থ করেন অর্পিতা কে। অর্পিতাও জানায় না।

এরপর কিছুটা খুনসুটি ভঙ্গিতেই অর্পিতাকে উদ্দেশ্য করে জিভ বের করে ভেংচি কাটতে দেখা যায় পার্থকে। তা দেখে আর হাসি চাপতে পারে না অর্পিতা। হেসে ফেলেন তিনি। আবার অর্পিতার প্রশ্ন পার্থকে, খেয়েছে কিনা! এরপর আর এক ঘটনা। পার্থ অর্পিতার দিকে “হার্ট সাইন” দেখান। তা দেখে আবার হেসে ফেলেন অর্পিতা। বিকেল তখন ৩:০৮। নিজের নীল রঙের ফতুয়া পাঞ্জাবী হাত দিয়ে দেখাল পার্থ। তা দেখে অর্পিতা মাথা নেড়ে ভাল বলে সম্মতি জানালো। ৩.১০ মিনিট, আবার অর্পিতা পার্থকে ইশারায় জিজ্ঞেস করে চা খেয়েছে কিনা। ঠিক সেই সময় পার্থ বুকের বাঁ দিকে আঙুল দিয়ে কিছু লেখা ইশারা করে দেখায়। ঘড়ির কাঁটা ছুঁয়েছে ৩.১১ মিনিট। আবার একে অপরকে দেখে হাসতে থাকে। ৩:১২ মিনিটে হঠাৎ পার্থর স্ক্রিণ ৩০ সেকেন্ডের জন্য বন্ধ হয়ে যায়। অর্পিতাকে সেই সময় কৌতুহল চোখে স্ক্রিণের সামনে এগিয়ে আসতে দেখা যায়। পার্থর স্ক্রিণে তাঁর ছবি ভেসে উঠতেই স্বস্তি অর্পিতার চোখে-মুখে। ৩.১৭ মিনিট অর্পিতা চুলের গোছা সামনে আনতেই তা দেখে আবারও মুচকি হাসি পার্থর। পার্থর গোঁফ দেখে ভাল লাগছে বলে ইশারায় জানায় অর্পিতা। ৩.২২ নাগাদ আবার বন্ধ হয়ে যায় পার্থ। আবার স্ক্রিণের দিকে এগিয়ে এসে কি হল বোঝার চেষ্টা করে অর্পিতা। পার্থর স্ক্রিণ ফিরতেই ইশারায় অর্পিতা জানতে চায় কেন বন্ধ হল? পার্থ ইশারায় জানায় চা খাচ্ছিলাম। ৩.৩০ নাগাদ অর্পিতা ঠোঁট দেখিয়ে কিছু ইশারা করেন। পার্থ ইশারায় বলেন মাথা কী খারাপ হয়ে গিয়েছে? ৩.৩০ নাগাদ মানিক ভট্টাচার্য যখন বলতে শুরু করেন তখন তাঁরা কোর্টের শুনানিতে নজর দেন। বিচারকের সামনে নিজেদের বক্তব্য শেষ করার পর কোর্ট যখন শেষ হচ্ছে তখন পার্থ অর্পিতাকে লক্ষ্য করে “থাম্বস আপ” দেখাতে যায়। অর্পিতা প্রত্তুত্যরে কিছু লেখার ইশারা করেন। ইডি-সিবিআইয়ের দফতর, জেল, এজলাস,ভগ্ন শরীর; কোনও কিছুই দমাতে পারেনি পার্থ- অর্পিতার রসায়নকে তার সাক্ষী থাকল এদিনের গোটা এজলাস।