ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক : আয়কর দফতরের বেশ কিছু অফিসার তাদের চাকরির ক্ষেত্রে অযোগ্য। অবিলম্বে তাদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত: হাইকোর্ট। আয়কর দফতরকে ভৎসনা
অফিসার কে জরিমানা।হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও ফের নোটিশ। বিস্মিত হাইকোর্ট। আয়কর দপ্তরকে ভৎসনা বিচারপতি নিজামুদ্দিনের।
অরবিট প্রজেক্ট প্রাইভেট লিমিটেডকে পুনর্মূল্যায়নের নোটিশ জারি করে আয়কর দপ্তর।হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় অর্বিক প্রজেক্ট। প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে জানানো হয় যে প্রেক্ষিতে এই পুনর্মূল্যায়নের নোটিশ জারি করা হয়েছে তা কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ অরবিট প্রোজেক্ট প্রাইভেট লিমিটেডের অন্যান্য কোম্পানিগুলি সংযুক্ত হয়ে গেছে।
আয়কর দফতরের ওই নোটিশ খারিজ করে কলকাতা হাইকোর্ট।আয়কর দপ্তরের আধিকারিক বিতান রায় (কলকাতা ওয়ার্ড ৫ (১) এর অফিসার) এই নোটিশ ইস্যু করেছিলেন।
হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও একই মর্মে ওই আধিকারিক বিতান রায় (কলকাতা ওয়ার্ড ৫ (১) এর অফিসার) ফের ওই সংস্থার বিরুদ্ধে পুনর্মূল্যায়নের নোটিশ জারি করেন।প্রতিষ্ঠানের আইনজীবী অভ্র মজুমদার আদালতে বলেন আয়কর দফতর হাইকোর্টের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও একইভাবে বারংবার পুনর্মূল্যায়নের নোটিশ জারি করছে। আমরা আয়কর দপ্তরের কাছে নথি পেশ করে জানিয়েছি, সমস্ত কোম্পানিগুলি সংযুক্ত হয়ে গেছে। ফলে এই নোটিশের যৌতিকতা কোথায়? যেখানে কলকাতা হাইকোর্ট পূর্বের নোটিশকে একই বিষয়ের উপর ভিত্তি করে খারিজ করেছে সেখানে কি করে আয়কর দপ্তরের অফিসার পুনরায় নোটিশ জারি করতে পারে।
নথি দেখে বিস্মিত বিচারপতি নিজাম উদ্দিনের মৌখিক মন্তব্য করেন বিভিন্ন মামলাতে দেখা যাচ্ছে আয়কর দপ্তরের বেশ কিছু আধিকারিক ও অফিসার নিজের খেয়াল খুশিমতো কাজ করছেন। তারা কোন কিছুই গ্রাহ্য করছেন না। এইসব অফিসারদের অবিলম্বে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা উচিত। এরা এই চাকরির যোগ্য নয়। যেখানে কলকাতা হাইকোর্টের রায় রয়েছে সেখানে কি করে পুনরায় নোটিশ জারি করা হয়?
আয়কর দপ্তরের আইনজীবী সুমিতা দাস দে বলেন:— বিষয়টি নিয়ে আমি উপযুক্ত বিভাগের সাথে কথা বলব কেন এরকম হলো।
বিচারপতি নিজাম উদ্দিনের ফের মৌখিক মন্তব্য :— বিষয়টি নিয়ে অবশ্যই দেখুন। আয়কর দপ্তরের অফিসারদের জরিমানা করা হলেও তারা গ্রাহ্য করছেন না। এবারে এক লক্ষ টাকা জরিমানা করতে বাধ্য থাকব। সেই টাকা তাদের ব্যক্তিগতভাবে দিতে হবে। প্রয়োজনে উচ্চ পদস্থ আয়কর দপ্তরের আধিকারিক কে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ জারি করব।
বিচারপতি নিজামুদ্দিনের নির্দেশ মামলার নথি থেকে পরিষ্কার আয়কর দপ্তরের অফিসার বিতান রায়ের (কলকাতা ওয়ার্ড ৫ (১) এর অফিসার) গাফিলতি আছে। অন্য একটি মামলায় তার কাজের গাফিলতির জন্য আদালত চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছিল।এই মামলায় ফের গাফিলতির জন্য আদালত ২০ হাজার টাকা জরিমানা করল।জরিমানার অর্থ তার বেতন থেকে কেটে আবেদনকারী সংস্থাকে প্রদান করতে হবে।
কলকাতা হাইকোর্টের এই নির্দেশ পশ্চিমবঙ্গ ও সিকিমের আয়কর দপ্তরের প্রিন্সিপাল চিফ এবং আইন মন্ত্রককে অবহিত করতে হবে।
বিতান রায়ের বিরুদ্ধে অবিলম্বে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
আদালত তার নির্দেশ নামায় ওই অফিসারের সার্ভিস বুকে বিষয়টি নথিভুক্ত করার নির্দেশ জারি করলেও আয়কর দপ্তরের আইনজীবী সুমিতা দাসদের অনুরোধে বিচারপতি সেই নির্দেশ প্রত্যাহার করেন। আইনজ্ঞ মহলের মতে এই রায়ের ফলে আয়কর দপ্তরের অফিসাররা কিছুটা সংযত হবেন। অযথা হেনস্থা থেকে রেহাই পাবে ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলি।