Date : 2024-04-20

“আপনাদের কাছে আঁচল ফেলে চাইবো, কিন্তু দিল্লির কাছে ভিক্ষা চাইবো না”- কেন্দ্রের বঞ্চনার প্রেক্ষিতে বললেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

সঞ্জু সুর, সাংবাদিক : সাম্প্রতিক সময়ে আবাস যোজনা, একশো দিনের কাজ সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কেন্দ্রের বঞ্চনার কথা বারবার উঠে এসেছে মুখ্যমন্ত্রী থেকে শুরু করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ তৃণমূলের প্রায় সব শীর্ষ নেতাদের বক্তব্যে। রাজ্যের বকেয়া টাকা না দেওয়া নিয়ে কেন্দ্রের প্রতি রাজনীতি করার অভিযোগে সরব হয়েছেন তাঁরা। এমন‌ই সময় মুখ্যমন্ত্রী জানালেন কেন্দ্রের কাছে আর টাকা চাইবেন না তিনি। প্রয়োজনে রাজ্যের মানুষের কাছে আঁচল পেতে টাকা নেবেন।

আলিপুরে প্রেসিডেন্সি জেলের ঠিক পাশেই প্রায় ৪৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে চার একর জমির উপর গড়ে উঠেছে অত্যাধুনিক ও আন্তর্জাতিক মানের ধন ধান্য প্রেক্ষাগৃহ। বৃহস্পতিবার নবনির্মিত এই অডিটোরিয়ামের উদ্বোধন করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই তিনি বলেন, “শুনেছি ২০২৪ পর্যন্ত কিছু দেবে না। না দেয় না দিক। আমি দিল্লির কাছে ভিক্ষা চাইতে যাবো না। প্রয়োজনে আমি আমার আঁচল পেতে আপনাদের কাছে চাইবো।” স্পষ্টত‌ই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দিলেন আর আবেদন নিবেদন নয়, কেন্দ্রের কাছে আর টাকা চাওয়া হবে না। রাজ্যের উন্নয়নের প্রয়োজনে তিনি রাজ্যের মানুষের কাছ থেকে হাত পেতে অর্থ নেবেন। মুখ্যমন্ত্রী এদিন নাম না করে বিজেপির দিকে তোপ দেগে বলেন, “আমরা ভাঙবো না। কার‌ও চাকরিও খাবো না।

তাজমহলকেও উঠিয়ে দেবো না, ভিক্টোরিয়াকেও উঠিয়ে দেবো না।” তাঁর মতে “ইতিহাস ইতিহাস‌ই”, সেটাকে ভুলিয়ে দেওয়া যায় না। রাজ্যের কিছ এলাকায় মাঝেমাঝেই অশান্ত পরিবেশ তৈরি হচ্ছে। সেকথা মাথায় রেখে এদিন মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “লোকাল এরিয়া যদি শান্ত থাকে তাহলে এসব (উন্নয়নমূলক কাজ) করতে সুবিধা হয়। কিন্তু দেখুন দার্জিলিং টা যদি দশ বারো বছর পর পর অশান্ত হয়ে, তাহলে ওখানে কেউ আর কিছু করতে চাইবে ? তাই তো আমি একটা নতুন দার্জিলিং করছি।” তবে সব ছাপিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর আঁচল পেতে অর্থ সংগ্রহ-এর এই নতুন দাবি কিন্তু ইতিমধ্যেই নতুন জল্পনার জন্ম দিয়েছে। একসময় এ রাজ্যের মানুষ বামপন্থীদের দেখেছে লাল শালু পেতে অর্থ সংগ্রহ করতে। মুখ্যমন্ত্রী কি তেমন কিছু ইঙ্গিত করলেন ! এদিকে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড ইন কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যখন বকেয়ার দাবিতে দিল্লিতে গিয়ে ধরনা দেওয়ার কথা বলছেন, এক কোটি চিঠি পাঠানোর কথা বলছেন, তখন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। রাজনৈতিক দল তার দাবি আদায়ে রাজনৈতিক পন্থা নেবে, পাশাপাশি সরকারে থেকে মুখ্যমন্ত্রী যদি রাজ্যের প্রকল্পের জন্য রাস্তায় নেমে আঁচল পেতে অর্থ সংগ্রহ করতে শুরু করেন, তা কিন্তু কেন্দ্রের সরকারের কাছেও বিড়ম্বনার হবে বলেই মনে করেছেন অনেকে।