Date : 2024-05-02

শিক্ষকের অভাবে গভীর সংকটে সরকারি স্কুলগুলি।

নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক :

শিক্ষকের অভাবে গভীর সংকটে সরকারি স্কুলগুলি। প্রাক প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিকের বিষয়ভিত্তিক ক্লাস করাতে রীতিমতো হিমসিম খেতে হচ্ছে স্কুল কর্তৃপক্ষকে। শিক্ষক শিক্ষিকার অভাবে নেওয়া যাচ্ছে না একাধিক ক্লাস। সরকারি স্কুলের ভবিষ্যৎ নিয়ে তাই শঙ্কিত শিক্ষকমহল।

রাজ্যজুড়ে মোট সরকারি স্কুল ৩৯টি। এই সরকারি স্কুলগুলিতে শিক্ষকের অভাব ক্রমশ বেড়েই চলেছে। প্রায় স্কুলেই প্রধান শিক্ষক, সহকারী প্রধান শিক্ষক এবং প্রাতঃ বিভাগের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষকের পদ খালি রয়েছে। শিক্ষক মহলের বক্তব্য, সরকারি স্কুলের বর্তমান অবস্থা মাথাহীন কনিষ্কের মূর্তির মত। এছাড়া সরকারি স্কুলগুলিতে প্রায় ৪০-৫০ শতাংশ বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকের পদ শূন্য। হিন্দু, হেয়ার, সংস্কৃত কলেজিয়েট, বেথুন কলেজিয়েট, বালিগঞ্জ গভর্নমেন্ট, বেগম রোকেয়া বালিকা বিদ্যালয়ের মত ঐতিহ্যবাহী স্কুলগুলি এক সময় ভালো ফলের জন্য রাজ্যজুড়ে পরিচিত ছিল। এক সময় গোটা রাজ্য চিনত তাদের ভাল ফলের জন্য। সেই সব স্কুলগুলিই এখন শিক্ষক অভাবে চরম সমস্যায়।

ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং-এর সুপারিশ অনুযায়ী, প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে প্রতি ৩০ শিক্ষার্থীর জন্য একজন শিক্ষক ও উচ্চ মাধ্যমিকে প্রতি ৪০জন পড়ুয়ার জন্য একজন শিক্ষক থাকা দরকার৷ সেখানে শিক্ষকের অভাবে বিষয়ভিত্তিক সব ক্লাস নেওয়াই সমস্যার হয়ে পড়ছে।

এক নজরে কয়েকটি সরকারি স্কুলে শিক্ষকের সংখ্যা দেখে নেওয়া যাক- ২০০ বছরের পুরোনো হিন্দু স্কুল। এই স্কুলের মোট অনুমোদিত শিক্ষক পদের সংখ্যা ৭২ টি। বর্তমানে সেখানে শূন্যপদের সংখ্যা হল ৩৭টি।
হেয়ার স্কুল, ২০০ বছরের পুরোনো এই স্কুলেরও খুব খারাপ অবস্থা। এখানে মোট অনুমোদিত শিক্ষক পদের সংখ্যা ৬২ টি। এখানে শিক্ষকের শূন্য পদ ১৮টি।

বেথুন কলেজিয়েট স্কুল। নারী শিক্ষার প্রসারে বেথুন সাহেবের তৈরি এই স্কুলের অবদান অনস্বীকার্য। বেথুন স্কুল হল প্রথম মেয়েদের সরকারি স্কুল। কিন্তু সেই স্কুলে বর্তমানে নেই
প্রধান শিক্ষিকা, সহকারী প্রধান শিক্ষিকা। প্রাইমারি ইন চার্জের পদও খালি। মিলিয়ে
প্রায় ২০ টি শিক্ষক পদ খালি এই স্কুলে।

বেগম রোকেয়া বালিকা বিদ্যালয়। এই স্কুলের
মোট অনুমোদিত শিক্ষক পদের সংখ্যা ৩৯টি। যার মধ্যে শূন্য পদ ১৩টি।উত্তরপাড়া সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের
অনুমোদিত শিক্ষক পদের সংখ্যা ৫৩টি। যার মধ্যে শূন্য পদ ২২টি।এছাড়া অধিকাংশ সরকারি বিদ্যালয়ে নেই প্রধান শিক্ষক নেই সহকারি প্রধান শিক্ষক

ছাত্র শিক্ষকের অনুপাত যা থাকা দরকার তা বেশির ভাগ স্কুলেই নেই বলেই মত শিক্ষকমহলের। দ্রুত বিষয়ভিত্তিক শিক্ষক নিয়োগ না হলে শিক্ষক অভাবে মান কমতে পারে সরকারি স্কুলগুলির। স্কুলে স্কুলে বিভিন্ন বিষয় ভিত্তিক শিক্ষক না-থাকায় অনেক ছাত্রছাত্রীই নিজেদের পছন্দের বিষয় নিয়ে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারবে না এমনই আশঙ্কা শিক্ষকমহলের একাংশের।