Date : 2024-05-05

গোপন ক্যামেরায় পাকড়াও চোর প্রতিবেশী

সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক – প্রতিবেশীর বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে প্রতিবেশীর ফ্ল্যাটে দিনের পর দিন গয়না-টাকা চুরি। প্রায় ২১ লক্ষ টাকার গয়না ও ৬ লক্ষ ৬০ হাজার টাকার গয়না চুরি করে বলে অভিযোগ। প্রতিবেশীর উপর সন্দেহ হওয়ায় গোপন ক্যামেরা ফ্ল্যাটে বসান অভিযোগকারী। এই ক্যামেরাই চোর পাকড়াও করতে সাহায্য করে। গড়ফা থানায় অভিযোগ করেন কালিকাপুর রোডের বাসিন্দা কিশোর কুমার চৌধুরী। অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযুক্ত সরোজ রায়কে গ্রেফতার করে গড়ফা থানার পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে ১,০০,০০০ টাকা ও কিছু গয়না। ২০১৯ সালে কালিকাপুর রোডের একটি বহুতলে ফ্ল্যাট কেনেন মালদার বাসিন্দা কিশোর কুমার চৌধুরী। ২০১৮ সাল থেকে ওই বহুতলেই ফ্ল্যাট কিনে আসেন দমদমের একটি বেসরকারি স্কুলের শিক্ষক সরোজ রায়।

অভিযুক্ত সরোজ রায় ছাড়া ওই বহুতলে বেশিরভাগ বাসিন্দাই কলকাতার বাইরে থাকায় বহুতলের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকতেন সরোজ রায়। তাঁকে বিশ্বাস করে ওই ফ্ল্যাটের বেশিরভাগ বাসিন্দারাই নিজেদের ফ্ল্যাটের চাবি তাঁর কাছে রাখতে দিয়েছিলেন। সেই সুযোগই ব্যবহার করেছিলেন অভিযুক্ত। দীর্ঘদিন ধরে মালদার বাসিন্দা কিশোর কুমার চৌধুরীর ফ্ল্যাটে ঢুকে তাঁর আলমারি খুলে গয়না ও টাকা চুরি করতে থাকেন সরোজ রায়। তাঁর চুরির জিনিসের পরিমাণ এতোটাই কম ছিল যে দীর্ঘদিন ধরে চুরি করার পরেও কোনও ভাবেই তা টের পাননি কিশোর বাবুর পরিবার। গত বছর ডিসেম্বরে ছোট মেয়ের বিয়ের সময় টাকা ও গয়নার হিসেব মেলাতে না পারায় টনক নড়ে কিশোর বাবুর স্ত্রীয়ের। গতবছর জুলাই মাস থেকে কালিকাপুরের ফ্ল্যাটে রাখা গয়না ও টাকার হিসেব না মেলার পরই সরোজ রায়কেই সন্দেহ করেন তাঁরা।

এরপরই ফ্ল্যাটে গোপন ক্যামেরা বসায় চৌধুরী পরিবার। নিজেদের স্মার্ট ফোনের মাধ্যমে গোপন ক্যামেরায় নজরদারি চালাতে থাকেন তাঁরা। গত রবিবার সকাল ৭টা ৩৭ নাগাদ কিশোর কুমার চৌধুরীর ফ্ল্যাটে ঢোকেন সরোজ রায়। আলমারি খুলে কিছু গয়না- টাকা চুরি করে সকাল ৭ টা ৫৪ নাগাদ ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে যান সরোজ রায়। এই পুরো ঘটনা নিজেদের স্মার্ট ফোনে দেখে চৌধুরী পরিবার। এরপরই গড়ফা থানায় অভিযোগ দায়ের হয় সরোজ রায়ের বিরুদ্ধে। তদন্তে নেমে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে গড়ফা থানার পুলিশ। সরোজ রায় নিজে যেহেতু বিল্ডিংয়ের রক্ষণাবেক্ষণ দেখতেন তাই প্রমাণ লোপাটের জন্য অপরাধ করার সময় সমগ্র বিল্ডিংয়ের সিসিটিভি বন্ধ করে রাখতেন তিনি। শুধু কিশোর কুমার চৌধুরী নয় অন্য প্রতিবেশীদের ফ্ল্যাটে ঢুকে চুরিও করেছেন তিনি বলে জানা গেছে। অনেকেরই মূল্যবান জিনিস খোয়া গেছে বলে জানা গেছে। অভিযুক্তের থেকে উদ্ধার হয়েছে ১ লক্ষ টাকা। বাকি টাকা ও গয়নার খোঁজ চালাচ্ছে পুলিশ।