Date : 2024-05-01

Jawan Movie Review: কে বলে সিনেমা হলে দর্শকদের অভাব ?

রাকেশ নস্কর, সাংবাদিক ঃ বহু বছর পর যেন সিনেমা হলে দর্শকদের নতুন ঢেউ এল। তাও আবার সকাল ৫টা থেকে। বাংলার বুকে প্রথমবার সিনেমার ইতিহাসে আজ পর্যন্ত কোনও ছবির জন্য ভোর ৫টায় শো হয়নি। একটি ছবি রিলিজকে ঘিরে এই উন্মাদনা বহুদিন দেখা যায়নি। নয়া ট্রেন্ডে ওটিটি প্ল্যাটফর্মের দিকে ঝুকেছে দর্শক। অতিমারীর পর থেকে সিঙ্গল স্ক্রিন মালিকদের মাথায় হাত পরেছিল। সিনেমা হলে সেই দর্শকদের ভাটা অনেকটা কাটিয়েছিল আল্লু অর্জুন অভিনীত পুষ্পা। তবে ভারতীয় সিনেমার একমাত্র কিং যে নতুন চমক দিতে চলেছেন কে বা জানতো ? সাম্প্রতিককালে মুক্তি পেয়েছে ছবি পাঠান। দিয়ে শাহরুখ খান ফের দর্শকদের সিনেমা হলে ফেরালেন। দেশজুড়ে হাউসফুল শো। ইন্ডাস্ট্রির সব চেয়ে বড় নায়ক যেন ইন্ডাস্ট্রির দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে নেমেছেন । এবার সারা দেশে শাহরুখের জওয়ান ঝড়। আর সেই ঝড় তছনছ করে দিল সব পরিসংখ্যান।

হ্যাঁ, ছবির রিভিউ করতে গিয়ে সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি বা সিনেমা হলের পরিস্থিতি নিয়ে কেন কথা বলা হচ্ছে ? সেই প্রশ্ন হয়তো আপনাদের মাথায় জাগবে। সেই প্রশ্নেরই উত্তর শাহরুখের জওয়ান। শুধু শাহরুখের উপস্থিতিতে হয়তো ছবি হিট করার ক্ষমতা রাঘে। কিন্তু এই ছবি শাহরুখের স্টারডমের বক্স অফিস কাঁপাচ্ছে না । এটা হলফ করে বলা যায়। অভিনয়, পরিচালনা, আবহসঙ্গীত, চিত্রনাট্য, গল্প আর অবশ্যই শাহরুখ খান। প্রতিটি বিভাগে ঠিক ঠাক মশলা দিয়ে জমজমাট এক ছবির পরিচালনা দিয়েছেন পরিচালক অ্যাটলি। ছবির গল্পে শাহরুখ ডাবল রোল যেমন তাক লাগিয়ে দিয়েছে। একদিকে বিক্রম রাঠোরের চরিত্রে শাহরুখের ড্যাডি কুল লুকে চোখা চোখা সংলাপ ও তুখোর অ্যাকশন। অ্যাটলি যেন শাহরুখের জন্য এসই গল্পটি বেছে রেখেছিলেন। অন্যদিকে বিক্রম রাঠোরের ছেলে আজাদের চরিত্রে শাহরুখের অভিনয়। দুটি চরিত্রকে সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। তবে পায়ে পা দিয়ে অভিনয়ের স্টেটমেন্ট তৈরি করেছেন ছবির খলনায়ক বিজয় সেতুপতি। এছাড়াও দীপিকা পাডুকোণ, নয়নতারা, সুনীল গ্রোভার থেকে সঞ্জয় দত্তের ক্যামিও। অভিনয় ও কাস্টিং-এর ক্ষেত্রে ভুল চুক নেই বললেন চলে। ছবির অ্যাকশন এই ছবির এক্স ফ্যাক্টর বলা চলে। দমদার স্টান্ট ও তুখোর অ্যাকশনে মোড়া বাইকে শাহরুখের চেজ সিন প্রশংসনীয়।
দেশের সমাজ ব্যবস্থা বা পরিকাঠামোকে প্রশ্ন ছুঁড়ে দেয় এই ছবি। কৃষি ঋণ, দুর্বল স্বাস্থ্য পরিসেবা থেকে অজস্র মানুষের অসহায় পরিস্থিতিতে একজন রবিনহুডের উতপত্তি। সেই পরিকাঠামোকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আজাদের জীবনের কাহিনী। তবে কিছু কিছু জায়গায় অহেতুক গানের চস্কা দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। যা একদম প্রয়োজন ছিল না। বিশেষ করে যখন বিক্রম রাঠোরের ফ্ল্যাসব্যাকের কাহিনী শুনছিলেন নয়নতারা। অবশ্য ভারতীয় ছবিতে গান না হলে চলে না। তাই না ? তাই শাহরুখের স্ক্রিন প্রেসেন্স, অভিনয়, অ্যাকশন আর অ্যাটলির পরিচালনা এই ছবির ইউএসপি বলা চলে। বহুদিন পর এমন একটি ছবি এসেছে যার জন্য একবার নয়, বার বার টিকিট কিনবেন দর্শক ছবিটি দেখার জন্য। ১৬৯ মিনিট স্ক্রিন থেকে চোখ সরাতে পারবেন না সেটা হলফ করে বলা যেতে পারে।