Date : 2024-05-03

Nabanna News : বানিজ্য সম্মেলন শেষ, সরকারি তৎপরতা শুরু। বৃহস্পতিবার‌ই বিশেষ বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী

সঞ্জু সুর, সাংবাদিক : বুধবার বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন শেষ হয়েছে। সমাপ্তি অনুষ্ঠানের ২৪ ঘন্টা পার হওয়ার আগেই শিল্প বিষয়ক বিশেষ বৈঠক ডাকলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বিকেল চারটায় নবান্ন সভাঘরে হবে এই বৈঠক। মূলতঃ বানিজ্য সম্মেলনে বিনিয়োগের যে প্রস্তাব এসেছে সেই প্রস্তাব যাতে শুধু প্রস্তাবের আকারেই পরে না থাকে, তা যাতে দ্রুত বাস্তবায়ন হয়, তার রুট ম্যাপ এই বৈঠকে তৈরি করা হবে বলেই নবান্ন সূত্রে খবর।

শিল্পায়নই তাঁর পাখির চোখ সেটা বলেছিলেন ২০২১-এ রাজ্যে তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় আসার পর। সেই লক্ষ্যেই এগিয়ে চলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই বানিজ্য সম্মেলনে আসা বিনিয়োগের প্রস্তাব ফেলে না রেখে, তার দ্রুত রূপায়নে কালক্ষেপ করতে রাজি নন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাই এই বিশেষ বৈঠক। বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মুখ্য সচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী ছাড়াও উপস্থিত থাকবেন বিভিন্ন দপ্তরের সচিবরা। থাকবেন ক্ষুদ্র মাঝারি ও কুটির শিল্প দফতরের সচিব। এছাড়াও বিশেষ করে সেইসব দপ্তর গুলোর সচিবদের উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে যেসব দফতরের ক্ষেত্রে এই বাণিজ্য সম্মেলনে বিনিয়োগের আশ্বাস পাওয়া গিয়েছে।

মঙ্গলবার বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনের উদ্বোধনী মঞ্চে দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন এর আগের ৬ টি এডিশনে এই সম্মেলনের মাধ্যমে এ রাজ্যে প্রায় ১৯০ বিলিয়ন ইউএস ডলার বিনিয়োগের আশ্বাস পাওয়া গিয়েছিল, যার মধ্যে ১২০ বিলিয়ন ইউএস ডলার এ রাজ্যে বিনিয়োগ হয়েছে। যদিও এই বিষয়ে কোন কোন ক্ষেত্রে কত টাকা বিনিয়োগ হয়েছে, সরকারিভাবে এখনো পর্যন্ত তার কোন ব্রেকআপ দেওয়া হয়নি। যা নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েন নি বিরোধীরা। এদিকে বুধবার সম্মেলনের শেষ দিন ধনধান্য অডিটোরিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন এবারের এই সপ্তম দফার বাণিজ্য সম্মেলনের মাধ্যমে এ রাজ্যের জন্য প্রায় ১৮৮ টি এমওইউ বা মেমোরান্ডাম অফ আন্ডারস্ট্যান্ডিং সাক্ষর করা হয়েছে এবং এলআই অর্থাৎ লেটার অফ ইনটেন্ট বা আগ্রহ পত্র প্রদান করা হয়েছে, যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৩ লক্ষ ৭৬ হাজার ২৮৮ কোটি টাকা। যা গতবছরের (২০২২ এ ছিলো ৩ লক্ষ ৪২ হাজার কোটি টাকা) তুলনায় প্রায় ৩৪ হাজার কোটি টাকা বেশি। এই যে বিপুল পরিমানে বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে, তা নিয়ে বিরোধীরা যাতে আবার কোনও কটাক্ষ না করতে পারে, তাই সেই প্রস্তাবগুলোকে শুধু প্রস্তাবের আকারে না রেখে তার যেন বাস্তবায়ন ঘটে, সেই লক্ষেই এগোতে চান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবারের এই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী একেবারে দফতর ধরে ধরে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বার্তা দিতে পারেন। শুধু তাই নয়, কাজ শেষ করার জন্য একেবারে সময় ও নির্ধারন করে দিতে পারেন তিনি। বিনিয়োগের যে ক্ষেত্রে সময় কম লাগবে, আনুষঙ্গিক জটিলতা কম, তেমন প্রস্তাব আগে বাস্তবায়নের পথে হাঁটতে হবে। আসলে সামনের লোকসভা নির্বাচনের আগে যত বেশি সম্ভব প্রস্তাব যদি বাস্তবের মাটিতে করে দেখানো যায় তাহলে তা যে লোকসভা ভোটে শাসক দলের প্রচারে বিশেষ জায়গা পাবে তা বলাই যায়।