সঞ্জু সুর, সাংবাদিক : দলীয় মঞ্চ থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহ্ কে তীব্র আক্রমণ করলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার নেতাজি ইনডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূল কংগ্রেসের বিশেষ অধিবেশনে নাম না করে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে জগাই-মাধাই বলে উল্লেখ করে আরএসএস এর উদ্দেশ্যে তৃণমূল নেত্রী আবেদন করেন ওদের সমর্থন করবেন না।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন আমি কয়েকদিন আগে ছট্ পুজোর জন্য গঙ্গার ঘাটে গিয়েছিলাম। সেখানে দেখি আরএসএস একটা স্টল করেছে। তারপরই তিনি সরাসরি আরএসএস কে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আপনারা ধর্ম করুন, আমার কোনও আপত্তি নেই। আমার আপনাদের বিরুদ্ধে কোনও কিছু বলার নেই। কিন্তু যে লোকটা সবচেয়ে বেশি ভারতবর্ষের ক্ষতি করেছে তাঁকে আর সাপোর্ট দেবেন না।” সঙ্ঘের উদ্দেশে মমতা আরও বলেন, “আপনারা বিভিন্ন সময়ে অনেককে সমর্থন করেছেন। কিন্তু এই লোকটাকে প্লিজ আর সাপোর্ট করবেন না। জগাই আর মাধাই… দেখলেই মনে হয় খেতে আসছে!” জগাই আর মাধাই বলতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে নরেন্দ্র মোদী আর অমিত শাহ্ কেই বুঝিয়েছেন, তা বুঝতে কারো অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। একসময় আরএসএস এর একটি অনুষ্ঠানে সঙ্ঘ নেতা বলবীর পুঞ্জ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে “দূর্গা” বলে অভিহিত করেছিলেন। তাই নিয়ে বিরোধীরা অনেকদিন ধরেই তৃণমূল নেত্রীর সঙ্গে বিজেপির ঘনিষ্ঠতা নিয়ে কটাক্ষ করে। এদিন সেই আরএসএস কে উদ্দেশ্য করে তৃনমূল নেত্রীর এই বার্তা সেই কটাক্ষ কে যে আরো হাওয়া দেবে তা বলাই যায়। যদিও দিল্লির রাজনীতিজ্ঞ অনেকের মতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরএসএসের প্রতি এই বার্তা দিয়ে একটা সুক্ষ চাল চেলেছেন। তাদের মতে এই মুহূর্তে কেন্দ্রের শাসকদলের সম্পূর্ণ রাশ রয়েছে স্রেফ দুই জনের হাতে। তাঁরা সঙ্ঘ কে খুব একটা পাত্তা দেয় না। এদিকে সঙ্গ ঘনিষ্ট নীতিন গডকড়ি থেকে শুরু করে রাজনাথ সিং, প্রত্যেকেই চলে গিয়েছেন পিছনের সারিতে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির সেই দলীয় ফাটলকেই উস্কে দিতে চেয়েছেন। এমনিতে বর্তমান কেন্দ্রিয় মন্ত্রীসভার সদস্যদের মধ্যে নীতিন গডকড়ি আর রাজনাথ সিং এর সঙ্গেই তাঁর সবচেয়ে ভালো সম্পর্ক রয়েছে। অতীতে যেমন ছিলো অটলবিহারী বাজপেয়ী, লালকৃষ্ণ আডবানি বা সুষমা স্বরাজ এর সঙ্গে। আরএসএস অবশ্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই বার্তা নিয়ে কিছু বলবে বলে মনে হয় না।