ময়নাতদন্তের রিপোর্টে খুনের মত আঘাতের উল্লেখ থাকলেও কেন খুনের ধারা যোগ করা হল না এই প্রশ্ন তুলে এবার বারাকপুর পুলিস কমিশনারেটের কমিশনারকে সশরীরে হাজির হয়ে কারণ ব্যাখ্যার নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট।
ঘটনার সূত্রপাত গত বছরের ২৩ জুন। খড়দহ থানা এলাকার টিটাগড়ের লক্ষ্মীঘাট এলাকার ঘটনা। ভাড়াটিয়াদের মধ্যে বিবাদকে কেন্দ্র করে গুরুতর আহত হন গোবিন্দ যাদব নামে এক ব্যক্তি। গোবিন্দ ছিলেন বাড়ির মালিক। তিনি বাড়ি ভাড়ার টাকা দেওয়ার জন্য এক ভাড়টিয়াকে ডেকে পাঠান। মুন্নী যাদব নামে এক ভাড়াটিয়া তাঁর বোনকে বাড়ির মালিক গোবিন্দর সঙ্গে কথা বলতে পাঠালে গোবিন্দ তাঁতে গালি গালাজ করে বলে অভিযোগ। এরপর সেদিন রাতে মুন্নী যাদবের অত্মীয়রা গোবিন্দ বাড়ি চড়াও হয়ে তাঁকে বেধড়ক মারধর করে বলে অভিযোগ। গুরুতর আহত অবস্থায় গোবিন্দকে প্রথমে বিএন বোস হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু পরিস্থিতি সঙ্গীন হওয়ায় পরে তাঁকে আর জি কর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু ওইদিন মারা যান গোবিন্দ।
ঘটনার দিনই মুন্নী যাদবের আত্মীয় ঋত্বিক যাবদ, জ্যোতি যাদব, মুন্নী যাদব, আমন রাজভর সহ আরও অনেকের বিরুদ্ধে খড়দহ থানায় অভিযোগ জানান গোবিন্দর প্রতিবেশী বিজয় কুমার সাউ। এরপর আগাম জামিনের আবেদন জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন আমান রাজভর-সহ বেশ কয়েক জন অভিযুক্ত। গত বছর অক্টোবর মাসে প্রথম মামলার শুনানিতে তাদের হয়ে সওয়াল করেন আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী ও দেবায়ন ঘোষ। এরপর মঙ্গলবার ছিল মামলার পরবর্তী শুনানি। এদিন বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চে মামলাটি শুনানির জন্য উঠলে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দেখে বিস্ময় প্রকাশ করে আদালত। ওই রিপোর্টে খুনের মত আঘাতের কথা উল্লেখ থাকলেও ভারতীয় দন্ডবিধির ৩০২ ধারার বদলে শুধু মাত্র ৩০৪ নম্বর অর্তাৎ অনিচ্ছাকৃত খুনের ধারা যোগ করে মামলা করা হয়েছে। আর এতেই চটেছে আদালত। ময়নাতদন্ত রিপোর্টে খুনের মত আঘাতের কথা উল্লেখ থাকলেও কেন ৩০২ ধারা যোগ করা হল না তা নিয়ে সরাসরি বারাকপুর পুলিস কমিশনারেটের কমিশনার অলোক রাজোরিয়াকে সশরীরে হাজিরা দিয়ে জবাব দিতে বলেছে ডিভিশন বেঞ্চ। আজ বুধবার তাঁকে আদালতে হাজির হতে হবে।