ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক : প্রয়াত কলকাতা হাইকোর্টের প্রবীণ বিশিষ্ট আইনজীবী ইদ্রিশ আলি। দীর্ঘদিন ধরে মারণ রোগ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছিলেন প্রবীণ আইনজীবী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের ভগবানগোলার বিধায়ক ইদ্রিস আলী। আর এই মৃত্যুতে গভীর শ্রদ্ধা জানিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি সহ অন্যান্য বিচারপতিরা। দীর্ঘ প্রায় ৪৫ বছর আইনি জীবনের সমাপ্তি ঘটলো।
বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে হাওড়ার এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক তথা কলকাতা হাইকোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী ইদ্রিস আলী। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই কলকাতা হাইকোর্টে নেমে আসে শোকের ছায়া। প্রাক্তন সাংসদ তথা তথা বিধায়ক ইদ্রিস আলীর মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর।
রাজনৈতিক জীবনে বহু ওঠা পড়ার মধ্যে দিয়ে নিজেকে বারবার প্রমাণ করেছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের জন্ম লগ্ন থেকেই তিনি সক্রিয় কর্মী থেকে নেতা হয়ে উঠেছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাথেই তার নিবিড় সম্পর্ক ছিল। বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে প্রথম সারিতে দেখতে পাওয়া যেত ইদ্রিস আলীকে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আস্থাভাজন যে কজন নেতৃত্ব রয়েছেন তার মধ্যে অন্যতম ইদ্রিস আলীও।
করুণা অতিমারির পর থেকেই শরীরের অবনতি ঘটতে থাকে ইদ্রিস আলীর। শরীরে বাসা বেধে ছিল মারণ রোগ ক্যান্সার। অপ্রতিরোধ্য ইবলিশালীকে ক্যান্সার সেভাবে তাকে আষ্টেপিষ্টে জড়াতে পারেনি। সাম্প্রতিকলে একাধিক কর্মসূচিতে দেখতে পাওয়া গিয়েছিল তৃণমূল বিধায়ক ইদ্রিস আলীকে। শীতকালীন অধিবেশন বিভিন্ন সময় বিভিন্ন রকমের প্রতিবাদ করতে দেখা গিয়েছিল বিজেপির বিরুদ্ধে।
রাজনৈতিক জীবনে ২০১৪ সালে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্র থেকে সাংসদ হয়েছিলেন। তিনি শুধু তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক নন তিনি কলকাতা হাইকোর্টে একজন বিশিষ্ট আইনজীবীও। তবে রাজনৈতিক জীবনে তার বহু মন্তব্যই দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছিল। যে কারণে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেশ কয়েকবার তাকে সতর্ক পর্যন্ত করেছিলেন। ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে দল তাকে টিকিট না দিলেও উলবেরিয়া বিধানসভা উপনির্বাচনে তিনি বিপুল মার্জিনে ভোট পেয়ে জয়লাভ করেছিলেন। ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে মুর্শিদাবাদ ভগবানগোলা থেকে তিনি বিধায়ক হন।
শুক্রবার তার মরদেহ নিয়ে আসা হবে রাজ্য বিধানসভায়। সেখানেই তাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাবেন রাজ্য বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় বিধায়ক মন্ত্রীরা। তারপর তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হবে, পাক স্টিট কলিং স্ট্রিট লেনের পুরনো বাড়িতে। যেখান থেকেই তিনি তার রাজনৈতিক জীবন এবং বিভিন্ন সামাজিক মূলক কাজ শুরু করেছিলেন।