নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক : প্রযুক্তির কল্যাণে সাফল্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের। প্রতিবছরই প্রশ্ন ফাঁস বা প্রশ্ন পাচারের অভিযোগ ওঠে মাধ্যমিকে। গত কয়েক বছর ধরে শিরোনামে উঠে আসে এই এক খবর। তবে কে বা কারা এই কাজে যুক্ত তাদের খুঁজে বের করতে শিরেসংক্রান্তি অবস্থা হয় পর্ষদের। চলতি বছর ২রা ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়েছে মাধ্যমিক। চলবে ১২ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। মাধ্যমিকের প্রথমদিনই পরীক্ষা শুরু হওয়ার প্রায় ঘন্টা দুই পরে প্রথম ভাষার প্রশ্নের করেকটি পাতা সোসাল মিডিয়াতে ঘোরাঘুরি করে। এই ঘটনার এক ঘন্টার মধ্যেই ‘দোষী’দের ধরে ফেলে পর্ষদ। প্রযুক্তির কল্যাণেই এল সাফল্য বলে মত বিশেষজ্ঞমহলের।
এখন প্রশ্ন কীভাবে ধরা পড়ল অভিযুক্তরা ? এর প্রস্তুতি অবশ্য অনেকদিন আগেই নিয়েছিল পর্ষদ। আর তাতেই মিলল ফল। এবারের প্রশ্নপত্রে থাকা কিউআর কোডের সৌজন্যেই অভিযুক্তদের দ্রুত চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে বলেই জানায় পর্ষদ। শুধু প্রথম দিন নয়। এরপর যে কয়েকদিন এই ঘটনা ঘটেছে এই পদ্ধতি অবলম্বন করে অভিযুক্তদের ধরা হয়েছে। প্রশ্ন পাচারের অভিযোগে অভিযুক্ত পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা বাতিলও করেছে পর্ষদ।
অনলাইন পেমেন্ট থেকে শুরু করে বহু ক্ষেত্রে কিউআর কোডের চল রয়েছে। প্রয়োজনীয় নানা তথ্য জানা যায় কিউআর কোড স্ক্যান করলেই। সেই বিষয়টিকেই এবার জুড়ে দেওয়া হয়েছিল মাধ্যমিকের প্রশ্নপত্রের সঙ্গে। পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে প্রশ্নপত্রের পাতার ছবি। জানা যায়, মালদহ থেকে ছড়িয়েছিল ছবিটি। সেই ছবিতেই দেখা যায় প্রশ্নপত্রের উপর বেশ কয়েকটি কিউআর কোড রয়েছে। বর্তমানে সর্বভারতীয় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সিরিয়াল নম্বরের ব্যবহার হয়। ‘ইউনিক কিউআর কোড’-এর মাধ্যমে এই সিরিয়াল নম্বর ব্যবহার করা হয়। তবে এই কিউআর কোড যে কোনও মোবাইল বা ডিভাইস থেকে তা স্ক্যান করা যাবে না। বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমেই শুধুমাত্র তথ্য জানা যাবে। সেই পদ্ধতিই এবার অবলম্বন করে পর্ষদ।
প্রত্যেকটি পরীক্ষার্থীর প্রশ্নপত্রে আলাদা আলাদা কোড রয়েছে। ফলে কোন পরীক্ষার্থী কোন প্রশ্নপত্র পেয়েছে, তার সব তথ্য থাকছে পর্ষদের কাছে। আর ভাইরাল হওয়া প্রশ্নপত্রের কিউআর কোড স্ক্যান করে পর্ষদ কর্মীরাই জানতে পারেন কোন জায়গার কোন পরীক্ষার্থীর হাতে ওই প্রশ্নপত্র পড়েছিল। কোন স্কুলে ওই প্রশ্নপত্র পৌঁছেছিল, তাও জানা যায় সিরিয়াল নম্বর থেকে। আর এই পদ্ধতির সাহায্যে অতি সহজে অভিযুক্তদের চিহ্নিত করা হয়।