ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক : বেআইনি নির্মাণ নিয়ে আরো কঠোর থেকে কঠোরতর অবস্থান নিল কলকাতা হাইকোর্ট। কলকাতার পর এবার হাওড়া। কোনরকম অনুমোদন ছাড়াই তৈরি হয়েছিল একটি ৫ তলা আবাসন। শুধু তাই নয় সেই আবাসনটিতে প্রত্যেকটি ফ্ল্যাট ৩০ থেকে ৪০ লক্ষ টাকা দরে বিক্রি করে দেয় প্রোমোটার। এবার সেই প্রোমোটারকে ১ কোটি টাকা জরিমানার নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অমৃতা সিনহা। এখানেই শেষ নয় ওই আবাসনের বাসিন্দাদের তিন মাসের মধ্যে আবাসন টি খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি। আবাসনটি খালি হয়ে গেলেই অবিলম্বে সেটি ভেঙে ফেলতে হবে বলেও নির্দেশে জানিয়েছেন বিচারপতি।
হাওড়ার কালীপ্রসাদ চক্রবর্তী লেনে গড়ে উঠেছিল ওই বেআইনি নির্মাণটি। নির্মাণটিকে কেন্দ্র করে মামলা দায়ের হয়। অভিযোগ মামলা চলাকালীনই একতলা থেকে সেটিকে পাঁচ তলায় রূপান্তরিত করে দেন প্রোমোটার। এদিন মামলার শুনানিতে ফের গার্ডেনরিচের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বিচারপতি বলেন, ‘আদালত এতদিন নরম ছিল তাই এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। যে পরিস্থিতি এসে দাঁড়িয়েছে তাতে আদালত আর কোন বেআইনি নির্মাণকে রেয়াত করবে না।’ ওই আবাসন কি খালি করতে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন আবাসনে থাকা পাঁচটি ফ্ল্যাটের বাসিন্দারা। তাদের দাবি ছিল তারা ব্যাংক লোন করে সর্বস্ব দিয়ে ফ্ল্যাট গুলি কিনেছেন। ফ্ল্যাটটি খালি করতে তাদের অন্তত এক বছর সময় দেয়া হোক। কিন্তু সেই আবেদন পত্র পাঠ খারিজ করে দিয়েছেন বিচারপতি। বিচারপতি সিনহা বলেন, ‘আপনারা নিজেদের প্রশ্ন করুন এখন যদি গোটা বেআইনি নির্মাণটি ভেঙে পড়ে তাহলে আপনাদের কি অবস্থা হবে? আদালত নির্দেশ দেওয়ার আগে নিজেরাই ওই আবাসন ঠিক খালি করে দিন।’ এরপরই প্রোমোটারের আইনজীবির উদ্দেশ্যে বিচারপতি বলেন, ‘আপনি এই আবাসনের বাসিন্দাদের বোকা বানিয়েছেন আবার তাদের অন্যত্র পুনর্বাসন দেওয়ার কথা বলছেন। আদালত ভালই বুঝতে পারছে আবারো কোন বেআইনি নির্মাণে এদের নিয়ে ওঠাবেন। আপনাকে কোন ভাবেই রেয়াত করবে না আদালত।’
এরপরই নির্দেশে প্রোমোটার কে। ২ এপ্রিল মামলার পরবর্তী শুনানি। যদি জরিমানার অর্থ জমা না দেওয়া হয় সেক্ষেত্রে প্রোমোটার কে বিপদে পড়তে হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিচারপতি সিনহা।