সঞ্জু সুর, সাংবাদিক ঃ সোশ্যাল মিডিয়ায় বায়ো বদলের পর এবার দলীয় পদ ছাড়তে চাইলেন কুনাল ঘোষ। ইতিমধ্যেই তিনি এই বিষয়ে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কে জানিয়েছেন বলেই খবর।
বৃহস্পতিবার রাত নটা নাগাদ নিজের এক্স হ্যান্ডেল এ একটি পোস্ট করেন তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক এবং মুখপাত্র কুনাল ঘোষ। সেই পোস্ট নিয়ে ইতিমধ্যেই জল গড়িয়েছে বহুদূর। শুক্রবার সকালে সেই পোস্টটি মুছে দেন কুনাল ঘোষ। সেই সঙ্গে সঙ্গে নিজের এক্স হ্যান্ডেলের বায়োতে বদলও আনেন তিনি। এদিন সকালে দেখা যায় কুনাল ঘোষের এক্স হ্যান্ডেলের বায়োতে লেখা রয়েছে সাংবাদিক ও সমাজসেবী। বায়োতে এই বদল নিয়ে যখন জল্পনা ছড়াচ্ছে তখন জানা যায় তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক ও মুখপত্র পদ ছাড়তে চাইছেন কুনাল ঘোষ। সূত্রের খবর ঘনিষ্ঠ মহলে নিজের ক্ষোভ ও অভিমানের কথা জানিয়েছেন তিনি। কিন্তু কি নিয়ে ক্ষোভ বা অভিমান কুনাল ঘোষের ? খোঁজ নিয়ে জানা গেল, বৃহস্পতিবার উত্তর কলকাতা তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে একটি সাংগঠনিক বৈঠক ডাকা হয়েছিল।
মূলত ১০ মার্চ ব্রিগেড সমাবেশকে কেন্দ্র করেই এই বৈঠক ডাকা হয়েছিল। এই বৈঠকের পৌরহিত্য করেন উত্তর কলকাতার জেলা সভাপতি তথা সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কুনাল ঘোষের যে ‘মধুর’ সম্পর্ক তা সম্বন্ধে সকলেই অবহিত। ফলে উত্তর কলকাতার সাংগঠনিক বৈঠকে ডাক না পাওয়ায় কিছুটা ক্ষোভ থেকেই এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই ক্ষোভটা অভিমানে বদলে যায় আজ সকালে। অভিমানের কারণ হলো শুক্রবার পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় তৃণমূল কংগ্রেসের দুটি সংগঠনিক জেলা নিয়ে বৈঠক ছিল। কাঁথি ও তমলুক লোকসভা কেন্দ্রকে নিয়ে এই সাংগঠনিক বৈঠকেও ডাক পাননি কুনাল ঘোষ। ঘনিষ্ঠ মহলে কুনাল ঘোষের বক্তব্য, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচন পরবর্তী সময় গত প্রায় আড়াই বছর ধরে হলদিয়া, তমলুক, কাঁথি প্রভৃতি জায়গায় তিনি দলের পক্ষ থেকে সাংগঠনিক কাজে ব্যস্ত ছিলেন। নিয়ম করে প্রতি সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন তিনি ওই এলাকায় সময় কাটিয়েছেন। তারপরেও এই বৈঠকে তাঁকে না ডাকায় তিনি অভিমানহত। মনে করা হচ্ছে এই কারণেই দলের দুটি পথ থেকে সরে যেতে চেয়ে ইচ্ছা প্রকাশ করে দলনেত্রী ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কে জানিয়েছেন কুনাল ঘোষ। ইতিমধ্যেই নিজের সরকারি নিরাপত্তা রক্ষীকে ছেড়ে দিয়েছেন তিনি। তবে সূত্রের খবর, কুনাল ঘোষ দলকে এটাও জানিয়েছেন যে পদ ছেড়ে দিলেও তিনি দলের সঙ্গেই থাকবেন এবং দল যা কাজ দেবে সেটা তিনি করবেন। লোকসভা নির্বাচন ঘোষণার খুব একটা বেশি দেরী নেই। তার আগে দলের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মুখপত্র ও রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কে নিয়ে এই জল্পনায় যে কিছুটা অস্বস্তিতে পড়বে তৃণমূল কংগ্রেস তা বলাই বাহুল্য।