সঞ্জু সুর, সাংবাদিক : জাতীয় নির্বাচন কমিশনের অন্যতম কমিশনার অরুণ গোয়েল হঠাৎ করে পদত্যাগ করায় একটা জটিল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এই অবস্থায় আগামি ১৫ তারিখ কমিশনার নিয়োগ নিয়ে বৈঠকে বসতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কমিশন সূত্রে এমনই খবর পাওয়া যাচ্ছে। এদিকে নির্বাচনের জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতির কাজটাও সেরে রাখছে নির্বাচন কমিশন। সেই কাজের অঙ্গ হিসাবে সোমবার দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে অবজারভারদের নিয়ে বৈঠক সেরে ফেললো জাতীয় নির্বাচন কমিশন। উপস্থিত ছিলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার।
এবারের নির্বাচনে সারা দেশে প্রায় ২১৫০ জন অবজারভার নিয়োগ করতে চলেছে নির্বাচন কমিশন। মোট ৯০০ জন সাধারণ পর্যবেক্ষক, ৪৫০ জন পুলিশ পর্যবেক্ষক ও ৮০০ জন ব্যয় বিষয়ক পর্যবেক্ষক থাকছেন এই দলে। মূলতঃ আইএএস, আইপিএস, আইআরএস পদমর্যাদার আমলারাই ভোট পরিচালনার কাজে অবজারভার হিসাবে কমিশনকে সহায়তা করবে। সোমবারের বৈঠকে কমিশনের পক্ষ থেকে প্রধান কমিশনার রাজীব কুমার বিশদে জানিয়ে দেন যে নির্বাচনে অবজারভারদের দায়িত্ব ও কর্তব্য কি কি। ‘ডুজ এন্ড ডোন্টস’ হিসাবে মোট নয় দফা নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। যে কেন্দ্রের দায়িত্বে তিনি থাকবেন সেই কেন্দ্রে সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে, যে গাড়ি ব্যবহার করবেন তাতে যেন জিপিএস ট্র্যাকিং ডিভাইস লাগানো থাকে।
মিটিং, মিছিল, সভা করার ক্ষেত্রে সব রাজনৈতিক দলকেই সমান সুযোগ যাতে দেওয়া হয় সেটা নিশ্চিত করবেন পর্যবেক্ষকরা। কোনও রাজনৈতিক দলের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করা যাবে না। অবজারভারদের দেখতে হবে যাতে কেন্দ্রিয় বাহিনী ও রাজ্য পুলিশ নিরপেক্ষ থেকে সঠিকভাবে আইনি কাজ করে। ভোটের দিন যত বেশি সম্ভব বুথে পৌঁছে যেতে হবে, ভোটারদের আস্থা অর্জনের জন্য যা যা প্রয়োজন তা করতে হবে, প্রয়োজনে স্থানীয় স্তরে ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে তাদের অভাব অভিযোগ শুনতে হবে। কমিশনের চোখ ও কান হিসাবে কাজ করতে হবে কমিশন নিযুক্ত পর্যবেক্ষকদের। স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করানোর ক্ষেত্রে এই পর্যবেক্ষকদের ভূমিকা যথেষ্ট। ফলে তাঁদেরকে সবকিছু সঠিকভাবে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্যই সোমবার এই বৈঠক করা হলো। প্রসঙ্গতঃ ইতিমধ্যেই ইলেকশন কমিশনের ফুল বেঞ্চ দেশের প্রতিটি প্রদেশে গিয়ে প্রস্তুতির কাজ খতিয়ে দেখে নিয়েছে। সেই প্রস্ততির অঙ্গ হিসাবে অবজারভারদের সঙ্গে বৈঠককে বলা যেতে পারে শেষ প্রস্তুতি বৈঠক। সোমবার এই বৈঠক হয়ে যাওয়ার অর্থ নির্বাচনের দিন ঘোষণার জন্য প্রস্তুত জাতীয় নির্বাচন কমিশন, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।