নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক: প্রচন্ড গরমে হাঁসফাঁস করছে রাজ্যবাসী। এই গরমে মানুষ তার কষ্টের কথা মুখ ফুটে বলতে পারে। কিন্তু যারা অবলা জীব তাদের কষ্টের কথা বুঝে নিয়ে তাদের জন্য ব্যবস্থা নিতে হয়। শহর কলকাতার তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে। চলছে তাপপ্রবাহ। এই অবস্থায় কেমন আছে আলিপুর চিড়িয়াখানার পশুপাখীরা।
এপ্রিল মাস পড়তে না পড়তেই বাড়তে শুরু করেছে তাপমাত্রার পারদ। বৈশাখী দহনে পুড়ছে দক্ষিণবঙ্গ। সকাল হতে না হতেই মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে সূর্যের তেজ। প্রবল তাপপ্রবাহে বাড়ির বাইরে বেরনো দায়। এই প্রখর রোদের তেজে শহরবাসীর যেখানে নাজেহাল পরিস্থিতি। সেখানে কেমন আছে আলিপুর চিড়িয়াখানার পশুপাখিরা। বর্তমানে আলিপুরে পশুপাখির সংখ্যা ৫০০শোরও বেশি। এই গরমে তাদের জন্য নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। প্রবল তাপের হাত থেকে পশুপাখিদের রক্ষা করতে প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম দুটি উপায়ই অবলম্বন করেছে কর্তৃপক্ষ। পশুদের খাঁচায় আগে থেকেই গাছপালা লাগিয়ে বন্য পরিবেশকে তুলে ধরা হয়েছে। যাতে গাছের স্নিগ্ধ ছায়ায় তারা বনের পরিবেশ অনুভব করতে পারে। তাছাড়া এই গরমে প্রতিটি খাঁচাতে জলের পরিমান বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভল্লুক এবং ক্যাঙ্গারুর খাঁচায় বসানো হয়েছে কুলার। কুলারের ঠান্ডা হাওয়ায় গরম থেকে রেহাই মিলবে বলে বক্তব্য কর্তৃপক্ষের। ২৩০টি সিসিটিভির মাধ্যমে পশুপাখিদের উপর প্রতিনিয়ত নজরজারি চলছে। অধিকর্তা নিজে সবটা নজরে রাখছেন।
গরমে পশুপাখিদের জন্য যে সমস্ত বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।শরীর ঠান্ডা রাখতে রসালো ফল খাওয়ানো হচ্ছে । ব্রাজিল ও সাইবেরিয়া থেকে আসা পাখিদের জন্য চলছে হাইস্পিড ফ্যান।
খাঁচার মধ্যে বেশি করে জলের ব্যবস্থা থাকছে ।
পাখিদের খাঁচার ভিতর কৃত্রিম বৃষ্টি করা হচ্ছে।
শরীর ঠান্ডা রাখতে ভাল্লুককে দই খাওয়ানো হচ্ছে।বাঘ-সিংহের মাংসের দৈনিক বরাদ্দ মাংসের পরিমান এক থেকে ২ কেজি করে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।প্রত্যেক প্রাণিকে ওআরএস দেওয়া হচ্ছে।
প্রচন্ড রোদে পশুপাখীরাও দিনের বেশিরভাগ সময় প্রকাশ্যে আসছে না। খাঁচার ভেতরে রেস্ট রুমেই থাকছে। বাঘ, জাগয়ার, সিংহ বা অন্যান্য পশুপাখিরা খাঁচার মধ্য শীতল জায়গায় লুকিয়ে বা ঘুমিয়ে থাকছে। এই সময় চিড়িয়াখানায় বছরের অন্য সময়ের তুলনায় দর্শক সংখ্যা অনেকটায় কমে যায়। তবুও যারা আসছেন তারা এই গরমে পছন্দের পশু বা পাখিটিকে দেখতে না পেয়ে হতাশ হচ্ছেন।
এপ্রিলের এই বেনজির দাবদাহের সঙ্গে লড়তে পশুপাখিদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা, বিশেষ ডায়েট চার্ট ফলো করছে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ । তবে শুধু এপ্রিল মাস নয়, মে – জুন মাসের গরমেও পশুপাখিরা যাতে কষ্ট না পায় সেদিকেও থাকবে চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষের বিশেষ নজরদারি।