সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক- কলকাতা বন্দর এলাকায় পরিত্যাক্ত সিআইএসএফ কোয়ার্টার থেকে উদ্ধার হয় ৩৫ বছর বয়সী দুর্গা সরখেলের দেহাংশ। ঘটনা তদন্তের গ্রেফতার করা হয় মৃতার ভাসুরকে। পরবর্তীকালে উদ্ধার করা হয় দেহের অবশিষ্ট অংশ। ঘটনার তদন্তভার হাতে নেয় কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের হোমিসাইড শাখা। শেষমেশ উঠে আসে চাঞ্চল্যকর তথ্য। চাকরির জটিলতা কাটানোর জন্যই ভাইয়ের বউকে খুন করে ভাসুর নীলাঞ্জন সরখেল। নীলাঞ্জন রেলের কর্মী হিসেবে চাকরি করতেন। দুর্নীতির কারণে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। সেই চাকরিকে আবার ফিরে পাওয়ার জন্যই দুর্গাকে বলি দেওয়া হয় বলে পুলিশের জেরায় তথ্য উঠে আসে। দীর্ঘদিন ধরেই তারাপীঠে যাতায়াত ছিল নীলাঞ্জন সরখেলের।
চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়ার পর তারাপীঠ যাওয়া আসা তার বেড়ে যায়। বেড়ে যায় তার পুজা- অর্চনাও। তারাপীঠে এক সাধুর সঙ্গে পরিচয় হলে সে নীলাঞ্জনকে তন্ত্রসাধনার উপদেশ দেয়। যে বয়সী, যে গোত্রীয় মহিলার বলি দিলে চাকরির সমস্যা মিটে যাবে তার সঙ্গে দুর্গার প্রচুর মিল পেয়েছিলেন নীলাঞ্জন। সেই জন্যই দুর্গাকে বলি দেওয়ার জন্য বেছে নেয় তাঁর ভাসুর। নির্দিষ্ট দিনের নির্দিষ্ট সময়ে বলি দেওয়ার কথা ছিল দুর্গাকে। তবে দুর্গার স্বামী হঠাৎ রিহ্যাব থেকে পালিয়ে আসার জন্য তড়িঘরি দুর্গাকে কেটে টুকরো টুকরো করতে বাধ্য হয় নীলাঞ্জন। যেখানে দুর্গার দেহের টুকরো ফেলা হয় সেখানে যজ্ঞও করেন নীলাঞ্জন বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। ইতিমধ্যেই নীলাঞ্জন এর বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছে দুর্গাকে কেটে টুকরো করার সমস্ত ধারালো অস্ত্র। বাড়িতে অসুস্থ শাশুড়ি ও মানসিক রোগী ননদ থাকায় তারা খুনের বিষয়টা বুঝতে পারেনি। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনার চার্জশিট খুব তাড়াতাড়ি আদালতে পেশ করা হবে বলে লালবাজার সূত্রে জানা গেছে।