সঞ্জনা লাহিড়ী, সাংবাদিক- ২০২৪ লোকসভা নির্বাচনের পর থেকে নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে শুরু হয়েছিল নানান জল্পনা। রাজ্যে সংখ্যা গরিষ্ঠ হবে কোন দল তা নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয় রাজনৈতিক মহল থেকে আম জনতার মধ্যে। সেই সমস্ত হিসেব-নিকেশকে সামনে রেখে একাই ২৯ টি আসন পেয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। এমনকি নজিরবিহীন ব্যবধানে জয়লাভ করেছে শাসক দলের সেনাপতি অভিষেক বন্দোপাধ্যায়। ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রে তৃণমূলের ফলাফলে বিস্মিত গোটা রাজ্য। তবে এতো সংখ্যক ভোট পেয়েও দেশের মধ্যে ৫৪৩ টি আসনের মধ্যে ভোটের নিরিখে তিনি রয়েছেন ৬ নম্বরে। তাঁর আগে রয়েছেন ৫ প্রার্থী। দেখে নেওয়া যাক প্রথম ১০ জন প্রার্থীর তালিকা যাঁদের ভোটের ব্যবধান ছিল চোখে পড়ার মতো।
১) শঙ্কর লালওয়ানি (বিজেপি, ইন্দোর)- গোটা দেশে বিজেপি আশানুরূপ ফলাফল না করলেও ভোট ব্যবধানের তালিকায় শীর্ষে নাম রয়েছে মধ্যপ্রদেশের ইন্দোর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী শঙ্কর লালওয়ানির। ১১,৭৫,০৯২ টি ভোটের ব্যবধানে জয়ী তিনি। মোট প্রাপ্ত ভোট ১২,২৬,৭৫১টি। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছেন বহুজন সমাজ পার্টির প্রার্থী সঞ্জয় সোলাঙ্কি। তিনি পেয়েছেন মাত্র ৫১,৬৫৯ ভোট। এই আসনে শেষ মুহূর্তে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে বিজেপিতে যোগ দেন কংগ্রেস প্রার্থী।
২) রাকিবুল হুসেন (কংগ্রেস, ধুবরি)- ২০২৪- এর লোকসভায় যে দল আবারও ঘুরে দাঁড়িয়েছে তা হল কংগ্রেস। দেশে তাদের মোট আসন সংখ্যা ৯৯। অসমের ধুবরি লোকসভা কেন্দ্র থেকে ৯ লক্ষ ২০ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী প্রার্থী কংগ্রেসের রাকিবুল হুসেন। এআইইউডিএফ প্রার্থী বদরুদ্দিন আজমলকে পরাজিত করেন তিনি।
৩) শিবরাজ সিং চৌহান (বিজেপি, বিদিশা)- ভোট ব্যবধানের তালিকায় তৃতীয় স্থানে আবারও বিজেপি। মধ্যপ্রদেশের বিদিশা লোকসভা কেন্দ্রে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিজেপি প্রার্থী শিবরাজ সিং চৌহান ৮ লক্ষ ২১ হাজার ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী প্রতাপ ভানু শর্মাকে। শিবরাজ সিং চৌহান পেয়েছেন ১১,১৬,৪৬০ ভোট। প্রতাপ ভানু পেয়েছেন ২,৯৫,০৫২ ভোট।
৪) সি.আর পাতিল (বিজেপি, নভসারি)- গুজরাটের নভসারি কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী সি.আর পাতিল ৭ লক্ষ ৭৩ হাজার ভোটে হারিয়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী নৈশাদভাই ভূপতভাই দেশাইকে। সি.আর পাতিলের প্রাপ্ত ভোট পেয়েছেন ১০,৩১,০৬৫। দেশাইয়ের মোট ভোট ২,৫৭,৫১৪।
৫) অমিত শাহ (বিজেপি, গান্ধীনগর)- গুজরাটের গান্ধীনগর থেকে বিজেপি প্রার্থী ছিলেন অমিত শাহ। এই হেভিওয়েট প্রার্থী ৭ লক্ষ ৮৮ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন। অমিত শাহর মোট ভোট ১০.১০,৯৭২ টি। কংগ্রেস প্রার্থী সোনাল রমনভাই প্যাটেল পেয়েছেন মাত্র ২,৬৬,২৫৬ ভোট।
৬) অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (তৃণমূল কংগ্রেস, ডায়মন্ড হারবার)- পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের হয়ে সব থেকে বেশি ভোট প্রাপ্তি হয়েছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের। ডায়মন্ড হারবার আসনে তিনি ৭,১০,৯৩০ টি ভোটের ব্যবধানে জেতেন। বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ দাস ববিকে হারিয়েছেন তিনি। অভিষেক পেয়েছেন ১০,৪৮,২৩০ টি ভোট। বিজেপি প্রার্থী পেয়েছেন মাত্র ৩,৩৭,৩০০ ভোট।
৭) ডা. হেমাঙ্গ জোশী (বিজেপি, ভদোদরা)- গুজরাটের ভদোদরা কেন্দ্র থেকে বিজেপি প্রার্থী ডা. হেমাঙ্গ জোশী ৫,৮২,১২৬ টি ভোটে জেতেন। তিনি পেয়েছেন মোট ৮,৭৩,১৮৯ টি ভোট এবং কংগ্রেস প্রার্থী পেয়েছেন ২,৯১,০৬৩ টি ভোট।
৮) রাজপাল সিং যাদব (বিজেপি, পঞ্চমহল)- বিজেপি প্রার্থী রাজপাল সিং যাদব গুজরাটের পঞ্চমহল আসন থেকে নির্বাচনে লড়েন। কংগ্রেস প্রার্থী গুলাব সিং চৌহানকে ৫,০৯,৩৪২ টি ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেন। রাজপাল সিং যাদব পেয়েছেন মোট ৭,৯৪,৫৭৯ টি ভোট পাশাপাশি গুলাব সিং পেয়েছেন ২,৮৫,২৩৭ ভোট।
৯) পুরুষোত্তম ভাই রুপালা (বিজেপি, রাজকোট)- গুজরাটের রাজকোট লোকসভা কেন্দ্রে কংগ্রেস প্রার্থী পরেশ ধন্নিকে ৪,৮৪,২৬০ টি ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করেছেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পুরুষোত্তম ভাই রুপালা । রুপালা পেয়েছেন ৮,৫৭,৯৮৪ টি ভোট ও ধন্নি পেয়েছেন ৩,৭৩,৭২৪ ভোট।
১০) শশীকান্ত সেন্থিল (কংগ্রেস, তিরুভাল্লুর)- তামিলনাড়ুর তিরুভাল্লুর লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী ভি. বালাগণপতি ৫,৭২,১৫৫ টি ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছেন। কংগ্রেস প্রার্থী শশীকান্ত সেন্থিলের কাছে পরাজিত হন তিনি। সেন্থিল পেয়েছেন ৭,৯৬,৯৫৬ টি ভোট এবং বালাগণপতি পেয়েছেন ২,২৪,৮০১ টি ভোট।
আরও পড়ুন : পরাজয়ের পরেই দিলীপের অভিযোগ ‘কাঠিবাজির’