পৌষালী উকিল, প্রতিনিধিঃ ৪৬ বছর পর খুলল পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের রত্নভান্ডার। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী, বৃহস্পতিবার সকালে নির্দিষ্ট শুভ মুহূর্ত ৯ টা ৫১ মিনিট থেকে রত্নভান্ডারের ভিতর সম্পদ সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়। ১১ জন প্রবেশ করেন রত্ন ভান্ডারে। হাইকোর্ট নিযুক্ত কমিটির সদস্য বিশ্বনাথ রথ, শ্রী মন্দিরের মুখ্য প্রশাসক অরবিন্দ পাধি, বাছাই সেবায়েত, এএসআই কর্তা ডিবি গদানায়ক ছাড়া এবার পুরীর গজপতি রাজা দিব্য সিংহদেবও রত্নভান্ডার পরিদর্শনে যান। দলে রয়েছেন ২ জন সর্প বিশেষজ্ঞও। এই মন্দিরের সেবায়েতরা বলে থাকেন, জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার এই বিশাল রত্নভান্ডার আগলে রাখে ২ টি বিষধর সাপ।
অনেকেই ভেবেছিলেন ১৪ জুলাই রত্নভান্ডার খোলা হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সেই তথ্য সম্পূর্ণ ভুল। কারণ ওই দিন রত্নভান্ডার খুলতে গিয়েও ফিরে আসতে হয়েছিল হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ওড়িশা সরকারের তৈরি করা কমিটির ১১ জন সদস্যকে। যে তালা তিনটি ছিল, তার চাবি না থাকায় সেগুলি ভেঙে নতুন করে তালা লাগিয়ে আসা হয়। সেই চাবি ট্রেজরিতে রাখা হয়। সেই চাবি নিয়েই খোলা হল রত্নভান্ডার। করা হল অডিট।
পুরীর রাজা জগন্নাথ দেবের প্রধান সেবায়েত বলে চিহ্নিত। কলিঙ্গ সাম্রাজ্যের যে রাজাদের যুদ্ধ জয়ের বিপুল সম্পদ ভিতর ভান্ডারের রক্ষিত, তিনি তাঁদের উত্তরপুরুষ। ১৯৭৮ সালের পর ফের রত্নভান্ডারের সব সম্পদ জরিপ হওয়ার কথা।
রত্নভান্ডারে অডিটের দিন অবশ্য ভান্ডারের সব সম্পদ শ্রী মন্দিরের অস্থায়ী স্ট্রংরুম খটসাজ ঘরে সরানো হয়েছে। ১৩০০-রও বেশি রকমের গয়না রয়েছে এই রত্নভান্ডারে। নতুন এসওপি মেনে রত্নভান্ডার খোলার আগে থেকেই নিশ্চিদ্র নিরাপত্তায় মোড়া হয় গোটা মন্দির চত্বর। দীর্ঘক্ষণ বন্ধ রাখা হয় মন্দির। ৯ টা ৫১ মিনিট থেকে সাড়ে ১২ টা পর্যন্ত চলে অডিটের কাজ। প্রাপ্ত গয়না অস্থায়ী ভল্টে রাখা হয়। গোটা রত্নভান্ডার খালি করে এএসআইয়ের স্থাপত্যবিদদের হাতে তুলে দেওয়ার কথা। শ্রী মন্দিরের স্থাপত্য রক্ষায় রত্নভান্ডার মেরামতি জরুরি বলে মনে করছেন স্থাপত্যবিদরা।
শেষবার রত্নভান্ডারের অডিট হয়েছিল ১৯৭৮ সালে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী জানা যায়, সেকান বহু কাঠের সিন্দুক রয়েছে। যেগুলো চওড়ায় ৯ ফুট, উচ্চতায় ৩ ফুট। ১ হাজার ৩৩৩ রকমের অলঙ্কার রয়েছে। যার মধ্যে ৪৫৪ ধরনের খাঁটি সোনার গয়না। কিছু গয়নার ওজন আবার ১ কেজিরও বেশি। মোট সোনার অলঙ্কারের ওজন প্রায় ১২ হাজার ৮৮৩ ভরি। ২৯৩ রুপোর অলঙ্কার রয়েছে। যার ওজন প্রায় ২২ হাজার ১৫৩ ভরি। যদিও পরে মেরামতির সময় এর মধ্যে থেকে বেশ কিছু অলঙ্কার বের করা হয়েছিল জগন্নাথ দেবের নতুন অলঙ্কারের জন্য।
আরও পড়ুন : মুন্নাভাইয়ের রুস্তম বাস্তবে !