পৌষালী উকিল, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ যেকোনও দেশের উন্নতির জন্য ট্যাক্স জরুরি। কারণ সাধারণের ট্যাক্সের টাকা দিয়েই সরকার মানুষের জন্য বিদ্যুৎ, গ্যাস, পেট্রোলিয়াম, রাস্তা, রেল, এয়ারপোর্ট, হাসপাতাল, স্কুলে ভর্তুকি দিয়ে থাকে। কিন্তু অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের অনেকেরই বক্তব্য, দেশের ব্যক্তিগত ইনকাম ট্যাক্সের কী প্রয়োজন ? এই ট্যাক্সের টাকা মানুষের হাতে থাকলে তা ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতে পারতেন তাঁরা। এই মতামত ঠিক না ভুল তা নিয়ে বিতর্ক তো চলতেই থাকবে। তবে জুলাইয়ের মাঝামাঝিই দেশের পূর্ণাঙ্গ বাজেট।
২৩ জুলাই দেশের সাধারণ বাজেট। বাজেট পেশ করবেন নরেন্দ্র মোদীর ৩.০ সরকারের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন। আগের ২বার সংখ্যাগরিষ্ঠতার সরকারেই বাজেট পেশ করেছিল বিজেপি। এবার অবশ্য বিজেপির তা নেই সংসদে। দেশ থেকে একপ্রকার নির্বাচনী ধাক্কা পেয়েই এবার সরকার গড়েছে বিজেপি। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি তারা। মিত্রদের সহায়তায় সরকার গড়েছেন মোদী। সে কারণে এই বাজেটের ওপর বিশেষ নজর থাকবে আমজনতা থেকে বিরোধীদের। ভারতের অর্থনৈতিক অগ্রাধিকারের সম্ভাব্য পরিবর্তনগুলিকে তুলে ধরবে বলেই আশা করা হচ্ছে।
এবার কেন্দ্রের বাজেট পেশের সময় বিশেষভাবে নাক গলাতে পারেন শরিকরা। জনতার না পাওয়া অংশ ও মনের ক্ষোভ তুলে ধরতে পারেন তাঁরা। ফলে এই বাজেট নিয়ে প্রত্যাশাও যথেষ্ট। সম্প্রতি সংসদের বিশেষ অধিবেশনের যৌথভাষণে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু তাঁর ভাষণে উসকে দিয়েছেন সেই প্রত্যাশা। তিনি বলেছিলেন, এই সরকারের আমলে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ করা হবে। সরকারের নীতি ও দূরদর্শিতা প্রকাশ পাবে এই বাজেটে। গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক ও সামাজিক সিদ্ধান্তের পাশাপাশি ঐতিহাসিক পদক্ষেপও দেখা যাবে এই বাজেটে।
চলতি বছর লোকসভা নির্বাচন হয়েছে। যার জেরে পয়লা ফেব্রুয়ারি ভোট অন অ্যাকাউন্ট পেশ হয়েছিল সংসদে। এরপর লোকসভা ভোটে জিতে তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসে মোদী সরকার। তৃতীয় দফায় প্রথম পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ করতে চলেছেন নির্মলা সীতারমন। ইতিমধ্যেই আসন্ন বাজেটের বিষয়ে অর্থনীতিবিদ এবং ভারতীয় শিল্পের কর্ণধার সহ বিভিন্ন স্টেক হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। রাজস্ব ঘাটতির কথা মাথায় রেখে আসন্ন বাজেটে ব্যক্তিগত করের হার কমাতে পারে কেন্দ্র। বাজেট নিয়ে বিভিন্ন শিল্প সংস্থার বেশ কিছু দাবি রয়েছে। কেন্দ্রকে তারা প্রস্তাব দিয়েছে–
এসবের মাঝেই আবার অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের একাংশ বাজেটে রোবট ট্যাক্স চালু করার প্রস্তাব দিয়েছেন। রোবট ট্যাক্স কী ? এই ট্যাক্স হল এমন এক ব্যবস্থা, যার ফলে AI-এর জন্য কাজ চলে যাওয়া মানুষদের ফের কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে। সরকারি সূত্র বলছে, ১৫ লক্ষ টাকার বেশি উপার্জনকারীদের করে ছাড় দিতে পারে মোদী সরকার। বছরে ১০ লক্ষ টাকা উপার্জনকারীদের করে ছাড় দিতে পারে কেন্দ্র। সরকার এই বাজেটে নিউ ট্যাক্স রিজিমে ইনকাম ট্যাক্সে ছাড়ের সীমা ৩ লক্ষ টাকা থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত করতে পারে।
শূন্য থেকে ৩ লক্ষ টাকা উপার্জনে কোনও কর দিতে হয় না। ৩-৬ লক্ষ টাকা উপার্জনে ৫ শতাংশ, ৬-৯ লক্ষ টাকা উপার্জনে ১০ শতাংশ, ৯-১২ লক্ষ টাকা উপার্জনে ১৫ শতাংশ, ১২-১৫ লক্ষ টাকা উপার্জনে ২০ শতাংশ এবং ১৫ লক্ষ টাকার উপর উপার্জনে ৩০ শতাংশ কর দিতে হয়।
শূন্য থেকে আ়ড়াই লক্ষ টাকা উপার্জনে কোনও কর দিতে হত না। আড়াই থেকে ৫ লক্ষ টাকা উপার্জনে ৫ শতাংশ, ৫-১০ লক্ষ টাকা উপার্জনে ২০ শতাংশ এবং ১৫ লক্ষ টাকার উপর উপার্জনে ৩০ শতাংশ কর দিতে হত পুরোনা আয়কর পরিকাঠামোয়।
অন্যদিকে, এবারের বাজেটে পেনশন নিয়েও বড় ঘোষণা হতে পারে। এবারের বাজেটে সরকারি কর্মচারীদের ৫০ শতাংশ পেনশনের গ্যাব়্যান্টি দেওয়া হতে পারে বলে মত রাজনৈতিক মহলের একাংশের। যদিও এ বিষয়ে এখনও কোনও ইঙ্গিতই দেয়নি কেন্দ্রীয় সরকার।
আরও পড়ুন : Copa America 2024 : মেসির হাসি-কান্নার সাক্ষী থাকল ফুটবলবিশ্ব