সহেলী দত্ত, সাংবাদিকঃ পুরীতে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রার মূর্তি কাঠের তৈরি। তবে হিন্দু দেব-দেবীদের মূর্তি সাধারণতঃ পাথর বা ধাতুর সাহায্যে বানান হয়। কলিঙ্গ রাজ্যের রাজা ইন্দ্রদ্যুম্নর ইচ্ছায় শুরু হয়েছিল জগন্নাথ মন্দির ও বিগ্রহ নির্মাণের কাজ। পরে ব্রক্ষ্মার পরামর্শে পুরীর সমুদ্রে নিম গাছের যে গুঁড়ি ভেসে আসে, তাই দিয়েই শুরু হয় মূর্তি তৈরির কাজ। তবে কাঠ দিয়ে মূর্তি নির্মাণ একরকম সম্ভব ছিল না। সেই সময় পথ দেখিয়েছেন স্বয়ং ভগবান বিষ্ণু। ভগবানের আদেশেই কারিগরী দেবতা বিশ্বকর্মা ছদ্মবেশে রাজার কাছে উপস্থিত হয়ে মূর্তি বানানর দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন।
তবে মূর্তি শুরুর আগে কিছু শর্ত রেখেছিলেন ভগবান বিশ্বকর্মা। তিনি বলেছিলেন বন্ধ দরজার অন্তরালে তিনি মূর্তি তৈরি করবেন। তিনি যতক্ষণ না চাইবেন ততক্ষণ দরজা খোলা যাবে না। তাঁর অনুমতি ছাড়া দরজা খোলা হলে, মূর্তি বানানর কাজ অসম্পূর্ণ রেখে তিনি বিদায় নেবেন। এরপরই বিশ্বকর্মা শুরু করেন মূর্তি বানানর কাজ। এরপর দীর্ঘদিন কেটে গেলেও দরজা খোলেননি বিশ্বকর্মা। অবশেষে নিজের কৌতূহল আটকে রাখতে না পেরে দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করেন রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন। তাঁকে সেইসময় মূর্তি বানানর কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। রাজা আদেশ অমান্য করায় বিশ্বকর্মাও আর জগন্নাথের মূর্তিতে আর হাত দিতে নারাজ।
এরপর নিজের কাজে অনুতপ্ত হন রাজা ইন্দ্রদ্যুম্ন। রাজা এবং তাঁর স্ত্রীর তপস্যায় ভগবান বিষ্ণু স্বয়ং প্রকট হয়ে তাঁকে ওই রূপে পুজো করার নির্দেশ দেন। বলা হয়, হাত থাকলে তাঁর একটি নির্দিষ্ট সীমা থাকে। তবে যেহেতু সে জগতের নাথ সেকারণেই তার হাত না থাকাই ভালো। ভগবান নিজেই ওই রূপে পুজিত হতে চেয়েছিলেন। তাই সেই কারণে হাতহীন জগন্নাথের পূজা করা হয় পুরীতে।
আরও পড়ুন : পুরীর রথযাত্রার মাহাত্ম্য