পৌষালী উকিল, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ আরজি করকাণ্ডে সোশ্যাল মিডিয়ায় অপপ্রচার। ছেলের হয়ে মুখ খুললেন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তৃণমূল বিধায়ক সৌমেন মহাপাত্র। “ছেলের নাম জড়ালো, কুত্সা রটালো দলেরই নেতারা। কাক কখনও কাকের মাংস খায়না। কিন্তু এখন খায়।“ বিস্ফোরক মন্তব্য করে কেঁদে ফেললেন সৌমেন মহাপাত্র।
আর জি কর কাণ্ডে জড়িত তৃণমূলের এক প্রভাবশালী নেতার ছেলে৷ কয়েকদিন ধরে সামাজিক মাধ্যমে এমনই এক লেখা সহ ছবি ভাইরাল। ৩ জন চিকিৎসক পড়ুয়ার ছবি ঘোরাফেরা করছে। অভিযোগ উঠছে, তাঁরাই এই ঘটনার নেপথ্যে জড়িত। তাঁদের মধ্যে একজনের ছবি-নাম-সহ পোস্ট করে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তিনি পূর্ব মেদিনীপুরের প্রাক্তন মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রর ছেলে। কিন্তু এ দাবির সত্যতা কতটা? এবার মুখ খুললেন খোদ প্রাক্তন মন্ত্রী।এ নিয়ে প্রাক্তন মন্ত্রী বলছেন, “আরজি কর কাণ্ডে যে ভাবে অপপ্রচার হচ্ছে আমি বা আমার পরিবার জনরোষের শিকার হতে পারি। জনরোষ বুঝবে না কোনটা আমার ছেলে, কোনটা নয়, গণপিটুনির শিকার হতে পারি আমরা।”
অন্যদিকে, আরজি করকাণ্ডে ঘোলাজলে মাছ ধরতে নেমেছেন অনেকেই। গত কয়েকদিনে যেভাবে দাগিয়ে দেওয়া হচ্ছে, ওই যুবক সৌমেন মহাপাত্রের ছেলেকে, তাতে সামাজিক ভাবে বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে তৃণমূলের প্রাক্তন মন্ত্রীকে। তাঁকে করা হচ্ছে একাধিক প্রশ্নও। চরম মানসিক নির্যাতনে দিনরাত কাটাতে হচ্ছে প্রাক্তন মন্ত্রী ও তাঁর পরিবারকে। মঙ্গলবার পাঁশকুড়ায় নিজ বাস ভবনে চোখের জলে সাংবাদিক সম্মেলন সৌমেন মহাপাত্রের। দলের বিরুদ্ধে স্বস্ত্রীক ক্ষোভ প্রকাশ প্রাক্তন মন্ত্রীর।
সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তমলুকের বিধায়ক সৌমেনকুমার মহাপাত্র জানান, “আর জি কর মেডিকেল কলেজ এবং হাসপাতালে ছাত্রী মৃত্যুর ঘটনায় যে নাম সামনে আনা হচ্ছে তা সত্য নয়। আমার ছেলের নাম বোধিস্বত্ব মহাপাত্র। সে ২০১৭ সালে পাশ আউট৷ বর্তমানে পাঁশকুড়া-১ পীৎপুর ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বিএমওএইচ হিসাবে পরিষেবা দিয়ে চলেছে। যে মেয়েটি মারা গিয়েছে, সে আমার মেয়ের মতো। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আমরাও চাই সঠিক তদন্ত হোক।“
“তদন্তের স্বার্থে আমি, আমার ছেলে ও পরিবার সর্বতোভাবে সাহায্য করব। তবে এতদিন আমরা যেনে এসেছি কাক কাকের মাংস খায়না। একটা প্রবাদ বাক্য। কিন্তু এখন খায়। তাঁর ছেলের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরা হয়েছে তা তার দলের নেতৃত্বরাই করেছে”। ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দেন সৌমেন মহাপাত্র।
দীর্ঘদিন ধরে সৌমেনকুমার মহাপাত্র দলের গুড বুক থেকে দূরে রয়েছেন। পুরোটাই চক্রান্ত করে তাদের পরিবারকে ফাঁসানোর চেস্টা চালানো হচ্ছে। তাঁর পরিবারকে এইভাবে কালিমালিপ্ত করার ঘটনায় মর্মাহত হয়ে পড়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা তমলুকের বিধায়ক সৌমেনকুমার মহাপাত্র এবং পাঁশকুড়া পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা পাঁশকুড়া শহর মহিলা তৃণমূল নেত্রী সুমনা মহাপাত্র। তবে তাঁরা মনে করেন এইভাবে কালিমালিপ্ত করা যায় না। সত্যিটা সামনে আসবে সঠিক তদন্তে।