পৌষালী উকিল, প্রতিনিধি : ফের এক কোটা বিরোধী আন্দোলন। তবে এটা কোটার মধ্যে কোটার বিরোধিতা। আর এবারেরটা বাংলাদেশে নয়, নিজেদের দেশেই। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরোধিতায় ভারত বনধের ডাক দেয় দলিত ও আদিবাসী সংগঠন। কি কারণে বনধ এবং কি সেই সুপ্রিম রায়, বনধের প্রভাবই বা কতটা পড়ল, জানতে হলে পড়তে হবে পুরো প্রতিবেদন।
কারা কি কারণে ডাকে বনধ ?
সম্প্রতি সংরক্ষণ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরোধিতায় বুধবার ভারত বনধের ডাক দেয় NACDAOR বা ন্যাশনাল কনফেডারেশন অফ দলিত অ্যান্ড আদিবাসী সংস্থা। তফসিলি জাতি, জনজাতি এবং পিছিয়ে পড়া শ্রেণির হয়ে কথা বলতেই বনধ ডাকে তারা। সমাজবাদী পার্টি, বহুজন সমাজ পার্টি, চন্দ্রশেখর আজাদের ভীম সেনা সহ একাধিক দল এই বনধকে সমর্থনও জানায়।
সুপ্রিম রায়ে কি বলা হয় ?
সম্প্রতি কোটার মধ্যে কোটার পক্ষে রায় দেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় সহ ৭ সদস্যের বেঞ্চের মধ্যে ৬ জন। শীর্ষ আদালত একটি মামলার রায়ে জানায়, তফসিলি জাতি এবং জনজাতি সমাজের মধ্যে যাঁরা আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল তাঁদের সংরক্ষণ বাতিল করে দেওয়া হোক। পরিবর্তে তফসিলি জাতি এবং জনজাতি সমাজের আর্থিক স্ল্য়াবে যাঁরা একেবারে নীচে রয়েছেন, সেই অতি পিছিয়ে পড়া অংশকেই চিহ্নিত করে তাঁদের বাড়তি সুবিধা দেওয়ার পক্ষে রায় দেয় শীর্ষ আদালত।
এনএসিডিএওআর-র দাবি,
• সুপ্রিম রায় প্রত্যাখ্যান করুক কেন্দ্রীয় সরকার
• সরকারি ও বেসরকারি শূন্যপদ পূরণ করা হোক
• শুধু কেন্দ্রই নয় রাজ্য সরকারও তা করুক
• ন্যায়বিচার এবং সমতা রক্ষা করা হোক
• নতুন আইন প্রণয়ন করা হোক
• সুপ্রিম রায় অনগ্রসর শ্রেণির সাংবিধানিক অধিকার খর্ব করছে
• অবিলম্বে জাত-ভিত্তিক তথ্য প্রকাশ করা হোক
বনধের প্রভাব কেমন পড়ল ?
দেশজুড়ে বনধের ডাকে ব্যাপক সাড়া। ১৪ ঘণ্টার এই ভারত বনধের ব্যাপক প্রভাব পড়ল বিহার, রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ-সহ দেশের একাধিক রাজ্যে। প্রতিবেশী রাজ্য বিহারের দ্বারভাঙা ও আরাতে ট্রেন আটকে দিলেন আন্দোলনকারীরা। জাহানাবাদ, সহরসা ও পূর্ণিয়া জেলায় একাধিক জাতীয় সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। জেহানাবাদের এরকি গ্রামের কাছে পাটনা-গয়া প্রধান সড়ক NH-৮৩-এ ২ ঘন্টা জ্যাম ছিল। কেন্দ্রীয় সরকার ও সুপ্রিম কোর্টের বিরুদ্ধে উচ্চস্বরে স্লোগান দেওয়া হয়। এ সময় পুলিশের সঙ্গে বনধ সমর্থকদের ধস্তাধস্তি হয়। পুলিশ ৫ জনকে আটক করে। পটনা থেকে জয়পুর- ভারত বনধে বিপর্যস্ত জনজীবন, ট্রেন রোকো, রাস্তায় বিক্ষোভ। তবে দিল্লিতে বনধের কোনও প্রভাব পড়তেই দেখা যায়নি।
সম্প্রতি এক কোটা আন্দোলন থেকেই গণ অভ্যুথ্থানের ঘটনা ঘটেছিল বাংলাদেশে। তারপরই রণক্ষেত্র পরিস্থিতি তৈরি হয় সেখানে। তবে কি এবার ভারতে ?