মাম্পি রায়, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশজুড়ে আন্দোলনের আবহে চাপের মুখে পদত্যাগ করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সূত্রের খবর, সোমবার দুপুরে বাংলাদেশের অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনার সদর দফতরে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। সেই বৈঠকের পরই সোমবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। এরপরই চপারে করে বোন রেহানার সঙ্গে বাংলাদেশ ছাড়েন তিনি। আগরতলা হয়ে ভারতে ঢুকে দিল্লি হয়ে লন্ডনের উদ্দেশে যেতে পারেন শেখ হাসিনা। দিল্লিকে সেফ প্যাসেজ হিসেবে ব্যবহার করে শেখ হাসিনা (Sheikh Hasina) লন্ডন যাচ্ছেন বলেও শোনা যায়। কিন্তু পরে জানা যায় ব্রিটেনের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় চাইলেও সেই আবেদন খারিজ করে ব্রিটেন সরকার।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদত্যাগ এবং দেশত্যাগের পর জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ-জামান। আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি ঘোষণা করেন যে, প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার আবেদনও জানান। এই অশান্তি চলতে থাকলে অর্থনৈতিকভাবে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বলে জানান সেনাপ্রধান। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে আলোচনার মাধ্যমে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করবে সেনা। বাংলাদেশে আন্দোলনকারী পড়ুয়া এবং রাজনৈতিক কর্মীদের বিরত থাকার আবেদনও জানান। প্রতিটি হত্যার বিচার হবে বলেও আশ্বাস দেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার উজ-জামান।
তবে সেনাপ্রধানের কথায় কান দেয়নি আন্দোলনকারীরা। চরম অশান্তি এবং জারি থাকা কার্ফুকে উপেক্ষা করে রাজপথে নামে লক্ষ লক্ষ মানুষ। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে স্লোগান তুলে রাস্তায় নামে তারা। বাংলাদেশের জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের মূর্তির উপর উঠে ছেনি হাতুড়ি দিয়ে মূর্তি ভাঙতেও দেখা যায় উন্মত্ত জনতাদের। এখানেই শেষ নয়, ঢাকা সহ একাধিক জায়গায় আওয়ামি লিগের কার্যালয় ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। ধানমন্ডিতে ৩/এ আওয়ামি লিগের সভাপতি শেখ হাসিনার কার্যালয়েও আগুন ধরানো হয়। শেখ হাসিনার বাসভবনে ঢুকে তছনছ করে উন্মত্ত জনতা। শেখ হাসিনার বিছানায় শুয়ে পড়ে আনন্দ করতে দেখা গিয়েছে তাদের। হাসিনার বাসভবনের বিভিন্ন দামী জিনিসপত্র তুলে নিয়ে যায় বিক্ষোভকারীরা।
অশান্ত পরিস্থিতির আবহে অনেকেই সেদেশ ছাড়তে শুরু করেছেন। সীমান্ত পেরিয়ে বাংলার উদ্দেশে আসছেন বহু বাংলাদেশি। পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে। পেট্রাপোল, ঘোজাডাঙা সহ সমস্ত সীমান্তে চলছে বিশেষ নজরদারি। এরইমধ্যে বাংলাদেশ ইস্যুতে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, বিষয়টা ভারত সরকারের অধীন। ভারত সরকার যা নির্দেশ দেবে, সেটাই মানবে রাজ্য সরকার।