রিয়া দাস, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশে আপাতত অন্তর্বর্তী সরকার চলছে। তবে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, স্থায়ী সরকার কবে পাবে বাংলাদেশের মানুষ। ২৫ অগাস্ট রবিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। আর সেখানেই তিনি স্পষ্ট করেন এ বিষয়ে। পাশাপাশি যে স্বৈরাচারের পতনের জন্য ছাত্র জনতা একদিন পথে নেমেছিল তাদের সেই স্বপ্ন যে ব্যর্থ হবে না সেকথাও জানিয়ে দেন তিনি। তিনি বলেন, ফ্যাসিবাদ ও স্বৈরাচারের হাতে দেশের সব প্রতিষ্টান ধ্বংস হয়েছে। এমনকি বিগত দিনে যিনি প্রধানমন্ত্রী ছিলেন তাঁর পিওনও কীভাবে ৪০০ কোটি টাকার মালিক হয়েছিলেন তার কথাও তুলে ধরেন তিনি। দেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে তাঁর নিজের, পরিবারের ও দলের কিছু মানুষের স্বার্থ হাসিলের পথ তৈরি করা হয়েছিল। তবে সেই সঙ্গে তিনি এই নতুন বাংলাদেশ কীভাবে এগিয়ে যাবে তারও দিশা দেখান। দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকার কতটা কঠোর অবস্থান নিচ্ছে সেকথাও তিনি তুলে ধরেন।
রবিবার ইউনুস বলেন, বাংলাদেশের ছাত্র-জনতা যেদিন চাইবেন, বিদায় নেবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। একইসঙ্গে তিনি জানান, কবে দেশে আবারও নির্বাচন হবে তা একেবারেই রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত। ফলে সে সিদ্ধান্ত রাজনৈতিক দলগুলিকেই নিতে হবে। কবে নির্বাচন হবে বাংলাদেশে, তার কোনও সুষ্ঠু পথরেখা জাতির উদ্দেশে নিজের প্রথম বক্তৃতায় দিতে পারলেন না অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। তবে তিনি বলেছেন, সংস্কার প্রক্রিয়ার অঙ্গ হিসাবে তাঁরা নির্বাচন কমিশনেরও সংস্কার করবেন। কমিশনকে যে কোনও সময়ে নির্বাচনের জন্য তৈরি রাখবেন। তবে সেই কাজ কবে থেকে শুরু হবে, তার কোনও ইঙ্গিত দেননি ইউনুস। ২৪ অগাস্ট বিএনপি-র মহাসচিব মির্জা ফফরুল ইসলাম আলমগির অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে বলেন, “সুষ্ঠুভাবে একটা নির্বাচন করে নির্বাচিত সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার জন্য এই সরকার গঠিত হয়েছে। মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার নির্বাচনী পথরেখা নিয়ে কী ভাবছে, তা স্পষ্ট করে জানাক।‘’
৮ অগাস্ট বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে শপথ গ্রহণ করেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনুস। ২৫ অগাস্ট প্রথম দেশের মানুষের উদ্দেশে বার্তা দেন তিনি। সেখানে তিনি দেশবাসীর উদ্দেশ্যে বলেন, কোন কোন কাজ প্রাথমিকভাবে এই অন্তর্বর্তী সরকারের কাছ থেকে মানুষ প্রত্যাশা করছেন তার তালিকা প্রকাশ করা হোক। সেই মতো কাজ করে যাবে এই অন্তর্বর্তী সরকার। তিনি কথা বলতে গিয়েও ঐক্যের কথাও বলেন। তাঁর কথায়, “আমি জাতীয় ঐক্যে বিশ্বাস করি। এ জন্য সরকার কাজ করবে। কৃষির উন্নয়নে কাজ করবে সরকার। সংস্কারের অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশন সংস্কার করা হবে।“ বড় চ্যালেঞ্জ ইউনুসের সামনে। তবে শেষ পর্যন্ত সেই স্বপ্ন কতটা পূরণ হয় সেটাই এখন দেখার।