পৌষালী উকিল, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ কোটা আন্দোলন থেকে হাসিনা হঠাও। কোটা সরলেও আন্দোলন থামেনি বাংলাদেশে। হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগ থেকে ইউনুসের প্রধান উপদেষ্টা হওয়া। বাংলাদেশের দিকে দিকে জনরোষ। গণভবন থেকে সংসদ ভবনে লুঠপাট। সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, ধ্বংস। বঙ্গবন্ধুর মূর্তি ও সংগ্রহশালা ভাঙচুর থেকে তাঁর মূর্তিতে প্রস্রাব। আওয়ামী লীগের সদস্য ও হিন্দুদের ওপর নির্যাতন। সবুজ শস্য শ্যামলা বাংলাদেশের মানচিত্রে ধূসর ছবির সংযোজন। এই কদিনে কী দেখেনি বাংলাদেশ?
জাতীয় শোক দিবস বাতিল
দেশজুড়ে তৈরি হওয়া বিক্ষোভের মুখে পড়ে ৫ অগাস্ট প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়েন মুজিবকন্যা শেখ হাসিনা। ভাঙচুর থেকে লুট, কিছই বাদ পড়েনি। উত্তপ্ত বাংলাদেশে পুড়িয়ে ফেলা হয় ধানমণ্ডিতে থাকা বঙ্গবন্ধুর সংগ্রহশালা। এই ইস্যুকে সামনে রেখেই ১৫ অগাস্ট ফের উত্তপ্ত হতে পারে বাংলাদেশ। কারণ ওই দিনই হত্যা করা হয়েছিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। হাসিনার ভাইরাল হওয়া ফোন কল থেকে হাসিনা পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের এক ভিডিও বার্তা সবেতেই সেই ইঙ্গিত মিলেছে। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে প্রতিবছর জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয় বাংলাদেশজুড়ে। এবারে উত্তপ্ত পরিস্থিতির জেরে সেই শোক দিবসেই পড়ল কোপ। জাতীয় শোক দিবস বাতিল করে দিলেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস।
মার্চ টু ঢাকা, আওয়ামী লীগ মহড়া
১৫ অগাস্ট ফের মার্চ টু ঢাকা। তবে এবার হাসিনা হঠাওয়ের দাবিতে নয়। এবার বঙ্গবন্ধুকে শ্রদ্ধা জানাতে মার্চ টু ঢাকা। ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পোড়া সংগ্রহশালায় ফুল দিয়ে আসার পাশাপাশিই চলবে বিশৃঙ্খল বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ। জাতির পিতার স্মৃতিকে বাংলাদেশ থেকে মুছে ফেলার যে ষড়যন্ত্র চলছে তার বিরোধিতায় সরব হবেন আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা।
গণপ্রতিবাদ কর্মসূচির আহ্বান
অন্যদিকে, আওয়ামী লীগের এমন জমায়েতের পাল্টা গণপ্রতিবাদ কর্মসূচির আহ্বান করছে অভ্যুত্থানের মূল পক্ষ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন মঞ্চ। তাদের সমর্থন করেছে হাসিনা শাসনে কুঁকড়ে থাকা বলীয়ান বিএনপি ও জামাত ইসলামিম-সহ বিভিন্ন সংগঠন। তাদের অভিযোগ, বিদেশি শক্তির মদতে শেখ হাসিনা বাংলাদেশের ক্ষমতা পুনরায় দখল করতে মরিয়া। ফলে ১৫ অগাস্ট ঢাকায় ফের সংঘর্ষের তীব্র আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
আওয়ামী লীগ ভারতে বসে অভ্যুথ্থান
এদিকে বিএনপির দাবি, ভারতে বসেই নাকি অভ্যুথ্থানের চেষ্টা চালাচ্ছে আওয়ামী লীগ। হাসিনার নেতৃত্বেই গোপন ডেরা থেকে হচ্ছে সেই কাজ। বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ (প্রিন্স) বলেছেন, ‘ছাত্র অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট ও স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। আমরা এখন একটি গণতান্ত্রিক পদ্ধতির মধ্য দিয়ে হাঁটছি। কিন্তু এই পতনের মধ্যেই যে আমাদের পথ কুসুমাস্তীর্ণ বা সব বিজয় এসে গেছে, তা ভাবার কারণ নেই। কারণ, এখনো ষড়যন্ত্র চলছে। আন্দোলনকে নস্যাৎ করার জন্য প্রশাসনের মধ্য দিয়ে বা বিচার বিভাগে বা বিভিন্ন বাহিনীর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রেতাত্মারা ষড়যন্ত্র করছে। শেখ হাসিনা ভারতে বসে থেকে ষড়যন্ত্র করছেন।’