বছর কয়েক আগে কোভিডের সময় নতুন একটি শব্দবন্ধ প্রথম শোনা যায়। পরিযায়ী শ্রমিক। অর্থাৎ এক রাজ্যের মানুষ যখন অন্য রাজ্যে গিয়ে কায়িক শ্রমের মাধ্যমে তার জীবিকা নির্বাহ করেন, তাদের উদ্দেশ্যে এই পরিযায়ী শ্রমিক শব্দটি ব্যবহার করা হয়। সেই সময়েই জানা গিয়েছিলো আমাদের রাজ্য থেকে এমন প্রচুর পরিযায়ী শ্রমিক ভিন রাজ্যে যান কিছু রোজগারের আশায়। বৃহস্পতিবার জানা গেল আমাদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গের এমন পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ২১ লক্ষের কিছু বেশি।
সঞ্জু সুর, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ- রাজ্যের কত মানুষ পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে বাইরের রাজ্যে গিয়েছেন ? রাজ্য বিধানসভায় আইএসএফ বিধায়ক নওসাদ সিদ্দিকীর এই প্রশ্নের উত্তরে রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক লিখিত উত্তর দিয়েছেন। সেই উত্তর অনুযায়ী ৩১ মে’২০২৪ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ থেকে ভিন রাজ্যে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা হল ২১ লক্ষ ৫৯ হাজার ৭৩৭ জন। তবে আমাদের রাজ্য থেকে যেমন ভিন রাজ্যে যাওয়া পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা এত বেশি ঠিক তেমনি বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকির করা অতিরিক্ত প্রশ্নের উত্তরে মন্ত্রী মলয় ঘটক জানান, ভিন রাজ্য থেকে এরাজ্যে আসা পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ১ কোটি।
প্রসঙ্গত, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ২০২৩ সালের ১৬ মে পরিযায়ী শ্রমিকদের প্রকৃত অবস্থান জানার জন্য এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের সহায়তা করার জন্য ‘পরিযায়ী শ্রমিক কল্যান প্রকল্প’ নামে একটি সরকারি প্রকল্পের সূচনা করা হয়। এমনকি ২৮ জুলাই’২০২৩ তারিখে পশ্চিমবঙ্গ পরিযায়ী শ্রমিক ওয়েলফেয়ার বোর্ড গঠন করা হয়। এই প্রকল্পের মাধ্যমে সরকারি খাতায় নথিভুক্ত যে কোনো পরিযায়ী শ্রমিকের স্বাভাবিক মৃত্যুতে ৫০ হাজার টাকা, দুর্ঘটনা জনিত মৃত্যুতে ২ লক্ষ টাকা, ভিন রাজ্য থেকে মৃতদের রাজ্যে ফিরিয়ে আনার জন্য এককালীন ২৫ হাজার টাকা দেওয়া সহ আরও বেশকিছু সহায়তা প্রদান করা হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য এইসব সুযোগ সুবিধা তৈরি করার পাশাপাশি বিভিন্ন সময় আবেদন করেছেন যেন এ রাজ্যের মানুষ পরিযায়ী শ্রমিক হিসাবে বাইরের রাজ্যে না গিয়ে এরাজ্যেই কাজ করেন। তবে মুখ্যমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি ও সাহায্য প্রদান করার পরেও গত এক বছরে রাজ্যের পোর্টালে নথিভুক্ত পরিযায়ী শ্রমিকের সংখ্যা চমকপ্রদ।
রাজ্যের ২৩ টি জেলার মধ্যে।
কোন জেলা থেকে কত পরিযায়ী শ্রমিক ভিন রাজ্যে রয়েছে ?
১) আলিপুরদুয়ার-১৫,২৯৬
২) বাঁকুড়া-৩৮,০৭৪
৩) বীরভূম-৯৪,১৯৪
৪) কোচবিহার-১,৪৪,৫৫
৫) দক্ষিণ দিনাজপুর-২৭,৯২৯
৬) দার্জিলিং-৯,৯৩৬
৭) হুগলী-৬০,৮৩৭
৮) হাওড়া-৫৮,৯৭৪
৯) জলপাইগুড়ি-৩০,২৯০
১০) ঝাড়গ্রাম-১০,৪৭৩
১১) কালিম্পং-৩,৪০৯
১২) কলকাতা-২৭৭
১৩) মালদহ-২,৬৯,৬৮৭
১৪) মুর্শিদাবাদ-৩,৬৬,৩৩৮
১৫) নদীয়া-১,৫৯,৭৪১
১৬) উঃ ২৪ পরগনা-১,২৬,৪৬০
১৭) পশ্চিম বর্ধমান-৩,৭৫২
১৮) পশ্চিম মেদিনীপুর-১,৬৭,২৪২
১৯) পূর্ব বর্ধমান-১,১০,৯১১
২০) পূর্ব মেদিনীপুর-১,৫৫,৬৩৪
২১) পুরুলিয়া-৪৬,৫৭৯
২২) দক্ষিণ ২৪ পরগনা-১,৩৯,৬৩৯
২৩) উত্তর দিনাজপুর-১,১৯,৫১০