রিয়া দাস, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশের সরকার পরিবর্তনের পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনায় সেভেন সিস্টার্স। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মহম্মদ ইউনুসের একটি বক্তব্যের পর এটি ভাইরাল হয়। ভারতের সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক অনলাইন সাক্ষাৎকারে এই নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ মহম্মদ ইউনুস বলেন, বাংলাদেশকে কেউ অস্থিতিশীল করতে চাইলে চারদিকে অসন্তোষ ছড়িয়ে পড়বে। বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব দিকে থাকা যে রাজ্যগুলি রয়েছে তাদের মধ্যে মূলত মেঘালয়, ত্রিপুরা, আসাম, মিজোরাম. মণিপুর, নাগাল্যান্ড এবং অরুণাচল প্রদেশ। এই ৭টি রাজ্যই সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত। বিশ্লেষকরা মনে করেন, তালিবান আফগানিস্তান দখলের পর ভারত জম্নু-কাশ্মীর নিয়ে যেমন চিন্তিত ঠিক তেমনই চিন্তিত সেভেন সিস্টার্স নিয়ে। এই সেভেন সিস্টার্স নিয়ে কেন চিন ভারতের টানাটানি ? ইতিমধ্যেই সেভেন সিস্টার্স প্রসঙ্গে ভারতকে সতর্ক করছে ব্রিটিশ সংস্থা আইআইএসএস।
এই সাতটি রাজ্যের মোট আয়তন ২,৬২,১৮৪ বর্গকিলোমিটার। যা ভারতের প্রায় ৭ শতাংশ এলাকা নিয়ে গঠিত। এই রাজ্যগুলি বিভিন্ন দিক দিয়ে একে অপরের উপর নির্ভরশীল। সংস্কৃতি, ধর্ম এক না হলেও নানা ক্ষেত্রেই রয়েছে তাদের মিল। এসব রাজ্যের অধিকাংশ মানুষই উপজাতি ও আদিবাসী।
সম্প্রতি ভারতের স্বাধীনতা দিবসে মণিপুর রাজ্যে কয়েক হাজার মানুষ নাগা পতাকা উড়িয়ে স্বাধীন ভূমির পক্ষে সমর্থন দিলে বিষয়টি বিশ্ববাসীর নজরে আসে এবং ভারত চিন সীমান্তে যখনই উত্তেজনা দেখা দেয় তখনই আলোচনায় উঠে আসে শিলিগুড়ি করিডোর। যা চিকেন নেক হিসেবে পরিচিত। ৬০ কিলোমিটার দীর্ঘ ও ২২ কিলোমিটার প্রসস্ত পশ্চিমবঙ্গের এই করিডোরটি ভারতের লাইফ লাইন। এই করিডোর হাতছাড়া হলে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে দেশটির বাকি অংশের সড়ক ও রেল যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। তাই চিন চাইছে এই করিডোরটি ভেঙে দিতে। অন্যদিকে ভারত দ্বিগুন নিরাপত্তা বাড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক গুরুত্ব রয়েছে এই ক্ষুদ্র করিডোরের। নেপাল ও ভূটাও শিলিগুড়ি করিডোরের উপর নির্ভরশীল। ভৌগলিক অবস্থানের জন্য চিনের খুবই কাছাকাছি এই করিডোর। ২০১৭ সালে ডুগলাম সীমান্তে উত্তেজনা ছড়িয়ে পরার পর শিলিগুড়ি করিডোরে ভারত বিপুল সংখ্যক সেনা মোতায়েন করে। একই সময় চিনা সেনাবাহিনীও সিকিমের কাছাকাছি তাদের শক্তি বৃদ্ধি করে। ওই সীমান্ত থেকে শিলিগুড়ির করিডোর আকাশপথে ৪০ থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরে। চিন চাইছে দূরত্ব আরও কমিয়ে আনতে। বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। শেখ হাসিনার পতনের পর বেশ চিন্তিত ভারত।