ষষ্ঠী চট্টোপাধ্যায়, সাংবাদিক: ২০২২ সালের আগস্ট মাস থেকে স্তব্ধ হয়ে রয়েছে স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (West Bengal Administrative Tribunal)। চেয়ারম্যান না থাকার কারণে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে চাকরি সংক্রান্ত ও তাদের নিয়োগ প্রক্রিয়া সংক্রান্ত মামলার শুনানি বন্ধ হয়ে পড়ে রয়েছে। স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালে মূলত রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানি হয়। ২০২৩ সালের মার্চ মাসে হাইকোর্টের বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডননির্দেশ দিয়েছিলেন দ্রুত চেয়ারম্যান নিয়োগ করে মামলা শুনানি গ্রহণ করতে হবে। সেই নির্দেশের এক বছর পেরিয়ে গেলেও আজও দরজা খোলেনি স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালের।
যেদিন মামলা শুনানিতে মামলাকারীদের পক্ষের আইনজীবী আশীষ কুমার চৌধুরী বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী ও বিচারপতি পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে জানান কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) হস্তক্ষেপ ছাড়া ঘুম ভাঙ্গানো যাবে না স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালে র। কলকাতা হাইকোর্ট যদি মামলাকারীদের ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তা না করে তাহলে তারা কোথায় যাবেন? হাইকোর্টেও যদি মামলা শুনানি না হয় তাহলে বিচার প্রার্থীরা বঞ্চনার শিকার হবে। আর এই সুযোগে রাজ্য সরকার একটার পর একটা অবৈধভাবে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালিয়ে যাবে।
মামলাকারীর আইনজীবী আশীষ বাবুর আবেদনের ভিত্তিতে বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী রাজ্য সরকারের আইনজীবী তপন মুখার্জির কাছে জানতে চান এই অভিযোগের আপনার কাছে কি উত্তর আছে? স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনালে রাজ্য সরকার কি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে? দীর্ঘদিন এভাবে চলতে পারেনা, রাজ্য সরকারকেই স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনাল চালানোর দায়িত্ব নিতে হবে মন্তব্য করেন বিচারপতি তপব্রত চক্রবর্তী।
মামলাকারীদের অভিযোগ ২০১৯ সালে আইসিডিএস সুপারভাইজারের (WB ICDS) জন্যে ২৯৫৪টি শূন্য পদের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ২ লক্ষ ৮৮ হাজার ৮৮০ জন এই পদের জন্য পরীক্ষায় বসে ছিলেন। এখনো পর্যন্ত ১৬২৯ জনকে নিয়োগ করা হয়েছে। বাকি শূন্য পদে আজও নিয়োগ করা হয়নি এ বিষয়ে মামলা করার জায়গা খুঁজে পাচ্ছেন না মামলাকারীরা। নিরুপায় তারা কলকাতা হাইকোর্টে দ্বারস্থ হন।
পরীক্ষায় মামলাকারীরা তাদের প্রাপ্ত নম্বর কমিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। সঠিক উত্তরের প্রথমে দেওয়ার পর পরে সেটা কেটে কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবং প্রাথমিকভাবে যে পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর এখনো পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পক্ষ থেকে বলে অভিযোগ।
পাবলিক সার্ভিস কমিশনের (WB Public Service Commission) এর কাছে প্রার্থীরা আবেদন জানান সমস্ত পরীক্ষার খাতা পুনর্মূল্যায়ন করতে হবে । কিন্ত তারই মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া চলতে থাকে। অবশেষে হাইকোর্টে দ্বারস্থ হয় মামলাকারীরা, তারা চেয়েছেন পুনর্মূল্যায়ন এবং স্বচ্ছ নিরপেক্ষ তদন্ত।
হাইকোর্টের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল তারা এই মামলা শুনতে পারবেন না, স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইবুনালকেই এই মামলা শুনতে হবে। কিন্তু আদালতের সেই নির্দেশ আজও কার্যকর হয়ে উঠতে পারেনি।