রিয়া দাস, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ উত্তপ্ত বাংলাদেশ। হাসিনা সরকারের পতন ও তারপর অন্তর্বর্তী নতুন সরকার গঠনের পরও সেই অশান্তি কমছে না। নতুন সরকার গঠনের আগে থেকেই আক্রমণের মুখে পড়েছে সংখ্যালঘু হিন্দুরা। আজও তা অব্যাহত। এই হামলা বন্ধের পাশাপাশি শান্তি ফেরানোর দাবিতে পথে নামেছে সংখ্যালঘু হিন্দুরা। শনিবার ঢাকা ও চট্টগ্রামের রাস্তায় হাজার হাজার হিন্দু নেমে প্রতিবাদ করেন। বাংলাদেশে অচলাবস্থার জেরে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত সেখানকার হিন্দুরা। মন্দিরের পাশাপাশি বাড়িতেও হামলা চালানো হয়েছে। কোনও কোনও সংখ্যালঘুদের হত্য়া করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ।
যতদিন যাচ্ছে ক্রমশ হিন্দুদের উপর অত্যাচার বেড়ে চলেছে
পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাংলাদেশের হিন্দুদের সংখ্যা অনেকটাই কম। তথ্য় অনুযায়ী, বাংলাদেশে হিন্দুদের মোট জনসংখ্যা প্রায় ৭.৯৭ শতাংশ। বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৭ কোটি। অথার্ত হিন্দু বসবাস করেন ১.৩৫ কোটি। কিন্তু এমন অনেক এলাকা আছে যেখানে হিন্দুদের জনসংখ্য়া প্রায় ২০ শতাংশ বলে জানা গিয়েছে। তবে ক্রমাগত হামলার ফলে হিন্দুদের জনসংখ্যার উপর প্রভাব পড়েছে।
১৯৫১ সালে বাংলাদেশে হিন্দুদের সংখ্যা ছিল প্রায় ২২ শতাংশ। এরপর থেকে হিন্দুদের সংখ্যা ক্রমশ কমতে থাকে। সূত্র মারফত জানা যাচ্ছে, জামাতের মতো সংগঠমগুলো হিন্দুদের উপর নির্মম অত্যাচার করে চলেছে। যার কারণে বিপুল সংখ্যক মানুষ বাংলাদেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ১৯৮৮ সালে ইসলামিক দেশ হিসেবে ঘোষণা করে বাংলাদেশ। ফলে বহু হিন্দু সেই সময় বাংলাদেশ ছাড়তে বাধ্য হয়। ২০১১ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে অর্পিত সম্পত্তি আইন চালু ছিল। এর অর্থ দেশ ছেড়ে আসা সম্পত্তি দখল করার অধিকার ছিল সরকারের। এই আইনের খেসারত হিন্দুদের দিতে হয়। বাংলাদেশের প্রায় প্রতিটি হিন্দু পরিবার এই আইনের জন্য সঙ্কটে পড়েছিল। এই আইনে বর্তমানে কিছু সংশোধন করা হয়। তবে হিন্দুরা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে নিশ্চিত হতে পারেনি। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ থেকে ভারতে লাখ লাখ শরণার্থী এসেছিলেন। তারপর থেকে ভারতে বাংলাদেশি শরণার্থীদের নিয়ে বিভিন্ন দাবি উঠেছে।
২০০৪ সালে ইউপিএ সরকার দাবি করে, প্রায় ১২ লক্ষ বাংলাদেশের নাগরিক অবৈধভাবে ভারতে বসবাস করছে। ২০১৬ সালে সেই সংখ্যা বলা হয় ১৬ থেকে ২০ লক্ষ। ২০১৮ সালে প্রায় ৪০ লক্ষ বলে সরকারের তরফে দাবি করা হয়। এখন বাংলাদেশে এই অচলাবস্থার মধ্যে ফের হিন্দুরা সেই দেশ ছেড়ে পালিয়ে আসতে চাইছেন। ভারতে আসার কাতর আর্তি জানাচ্ছেন বাংলাদেশি হিন্দুরা। সম্প্রতি এমনই দৃশ্য দেখা গিয়েছে কোচবিহারে। এছাড়াও জলপাইগুড়ি, উত্তর দিনাজপুরেও এই একই দৃশ্য দেখা গিয়েছে। তবে প্রতি ক্ষেত্রেই সীমান্তে তাদের আটকেও দিচ্ছে বিএসএফ।