মাম্পি রায়, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ মধুরেণ সমাপয়েত। তাও আবার বিধানসভায়। রাজ্য বিধানসভায় শাসক বিরোধী দলের এমন সৌজন্য হালফিলে দেখেনি বঙ্গবাসী।
বাংলা ভাগের প্রস্তাব নিয়ে এক সুর শোনা গেল শাসক এবং বিরোধী শিবিরের গলায়। বিরোধী দলনেতার প্রস্তাব মেনে নেওয়ার পক্ষে সওয়াল করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি লিখে উত্তরবঙ্গের কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলিকে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে যুক্ত প্রস্তাব দিয়েছেন বালুরঘাটের সাংসদ তথা শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। এর থেকেই বাংলা ভাগ বিতর্কের সূত্রপাত।
সোমবার এই ইস্যুতে অর্থাত্ বাংলাভাগে বিরোধীদের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা শুরু হয় বিধানসভায়। প্রস্তাবটি বিধানসভায় পেশ করেন রাজ্যের পরিষদীয় মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। নাম না করে কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী তথা বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে আক্রমণ শানান তিনি।
প্রস্তাবের বিপক্ষে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বলেন, রাজ্য থেকে নির্বাচিত সাংসদ, মন্ত্রী কখনও রাজ্য বিভাজনের কথা বলেননি। মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে অখণ্ড পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নের প্রস্তাব আনার জন্য অনুরোধ করেন শুভেন্দু অধিকারী।
তারপরই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, পশ্চিমবঙ্গ এক থাকবে। আমি শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়কে বলব, বিরোধী দলনেতার প্রস্তাব যুক্ত করা হোক। শুভেন্দুর সঙ্গে সহমত পোষণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, বাংলার অনেক মানুষ বাংলায় না থাকলেও তারা বাংলায় বিনামূল্য়ে স্বাস্থ্যসাথী পান, রেশন তোলেন। আমরা কোনও ভাগাভাগি করি না। আমি ইউনাইটেড ইন্ডিয়ার পক্ষে। পশ্চিমবঙ্গ এক থাকবে। আমরা ভাঙতে দেব না। অধ্যক্ষ অনুমতি দিলে বিরোধী দলনেতার বক্তব্য প্রস্তাবে যুক্ত করুন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, আমরা পশ্চিমবঙ্গ সরকার শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন পালন করি। কারণ আমরা মনে করি বিভেদ বা বিচ্ছেদ নয়। সবাই একসঙ্গে থাকুক। আমরা একতার পক্ষে।
শুভেন্দুকে উদ্দেশ্য করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমি একজনের বাড়ি গিয়েছি বলে আপনাদের আপত্তি আছে ? আপনি চা খেতে ডাকলে আপনার বাড়িতেও যাবো। অসুবিধা কোথায় ?
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, বিরোধিতা করবো, কাদা ছোড়াছুড়ি নয়। আমি দেশ- রাজ্য দুটোকেই ভালোবাসি। শোভনদেব দা কে বলবো শুভেন্দু যা বলেছেন সেটা যুক্ত করুন।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহমত পোষণ করতেই খুশি হয়ে টেবিল চাপড়ান বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এখানেই শেষ নয়। এই প্রথম বিধানসভায় রাজ্য সঙ্গীতেও যোগ দেয় বিজেপি। যা এককথায় নজিরবিহীন।