পৌষালী উকিল, প্রতিনিধি : পদত্যাগ করে দেশছাড়ার পর শেখ হাসিনার অবস্থান নিয়ে জলঘোলা অব্যাহত। হাসিনার আশ্রয়স্থল স্পষ্ট না হলেও তাঁর মানসিক অবস্থান কি ছিল, তা নিয়ে খানিকটা ধারণা পাওয়া গেল হাসিনাপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের কথায়।
পদত্যাগ ও দেশত্যাগের আগে শেষ কি কথা হয়েছিল মার সঙ্গে হাসিনাপুত্রের? এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাত্কারে সজীব জানালেন সেই কথা। তিনি বলেন, “দেশের জন্য এতকিছু করার পরও তাঁর বিরুদ্ধাচারণ করল দেশবাসী। বাংলাদেশকে দরিদ্র্য, পতন ও দুর্নীতির দেশ থেকে একটা উন্নত দেশে তৈরি করেছিলেন মা শেখ হাসিনা। মা জানান দেশের এই পরিস্থিতিতে তিনি অত্যন্ত হতাশ হয়েছেন।“ আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, “বর্তমানে তাঁর রাজনীতিতে আসার কোনো পরিকল্পনা নেই৷ রাজনীতি থেকে তিনি এবার অব্যাহতি চান।“
পদত্যাগের সিদ্ধান্ত একদিন আগে নেওয়া হলেও তা তখন ঘোষণা করা হয়নি বলে জানিয়েছেন হাসিনাপুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়৷ তিনি বলেন, “মা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন একদিন আগে৷ আমরা কয়েকজন শুধুমাত্র জানতাম যে তিনি ঘোষণা করবেন, তিনি পদত্যাগ করছেন এবং সংবিধান অনুযায়ী যাতে একটি ট্রানজিশন অব পাওয়ার হয় সেটাই ছিল ওনার প্ল্যান৷ তবে যখন আন্দোলনকারীরা ওই গণভবনের দিকে মার্চ করা শুরু করল তখন আমরা ভয়ে বললাম যে, আর সময় নেই৷ তোমার এখনই বেরিয়ে যেতে হবে৷”
“যেই দেশের জন্য এত পরিশ্রম করেছেন, এত উন্নয়ন করেছেন, সেই দেশের মানুষ তাঁকে এভাবে অপমান করে বের করে দেবে, তাঁর ওপর আক্রমণ করতে যাবে, এটা আমরা কেউ কল্পনা করতে পারিনি।“ দুঃখপ্রকাশ করে বলেন হাসিনা পুত্র।
হাসিনার পদত্যাগ ও দেশত্যাগের পিছনে কি কোনও বিদেশি শক্তির হাত রয়েছে? এ নিয়ে শেখ হাসিনার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় জানিয়েছেন, “বাংলাদেশের এই অবস্থার পিছনে আমেরিকার হাত থাকার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেওয়া যায় না। আমেরিকা বাংলাদেশে শক্তিশালী সরকার চায় না। ওরা চায়, একটা দুর্বল সরকার থাক। এমন একটা সরকার থাক, যাদের ওরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে। ওরা শেখ হাসিনাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি।“ বলেন সজীব।
সজীব আরও দাবি করেন, “মা এখনও পর্যন্ত কোনও দেশেই রাজনৈতিক আশ্রয় চাননি। উনি রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন বলে যে কথা বলা হচ্ছে, তা ঠিক নয়। উনি কোথাও আশ্রয় চাননি। তাই ব্রিটেন বা ইউএসএ তাঁর আবেদনে সাড়া দেননি বলে যে সব কথা উঠছে, তা ঠিক নয়।“
“তবে বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে মা’র আর কোনও আগ্রহ নেই। আমার মা এমনিতেই অবসরের কথা ভাবছিলেন, এটাই প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শেখ হাসিনার শেষ দফা হতো।“ জানিয়ে দেন সজীব।