অনুসূয়া দাস, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ দুমাসে কার্যত বাংলাদেশ থেকে উবে যাওয়া আওয়ামী লীগের নেতারা ইউনূসকে ঘিরে কেন বিক্ষোভ দেখালেন? অন্য়দিকে মহম্মদ ইউনূসকে স্বাগত জানাতে হাজির হলেন বিএনপির সদস্যরা । ভিন্ন দুই মেরুর ভিন্ন ছবি কীসের ইঙ্গিত বহন করছে…? কোন সমীকরণে এগোচ্ছে পড়শি দেশ বাংলাদেশের রাজনীতি?
শেখ হাসিনার দল আওয়ামী লীগ। ছাত্র-জনতার গণ আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটেছে। হাসিনা দেশ ছেড়ে যাওয়ার পর কার্যত বাংলাদেশ থেকে অদৃশ্য হয়ে যায় দল। টানা ১৫ বছর দাপটের সঙ্গে থাকা দলটির অনেক নেতারাই গ্রেফতার হয়েছেন। আবার অনেকেই পলাতক।
এত খণ্ড বিখন্ড ঘটনাক্রমের মাঝে বছর ঘুরে এসেছে যুক্তরাষ্ট্র নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশন। যেখানে টানা ১৫ বছর অংশগ্রহণ করেছেন হাসিনা। বাংলাদেশের সরকার প্রধান হিসাবে সরকার এই অধিবেশনে যোগ দিয়েছিলেন মুজিব কন্যা । তবে আগের ১৫ বছরের থেকে এ বছরের ছবিটা অনেকটাই আলাদা। তবে যদিও অনেকটা বলা ভুল। কার্যত পুরোটাই আলাদা।
এবারে সেই অধিবেশনে আর যোগ দেননি হাসিনা। তার বদলে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসাবে যোগ দেন মহম্মদ ইউনূস।সামনে এসেছে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে নানা হত্যাকাণ্ডের অভিযোগ। শুধুই যে হত্যাকাণ্ড, এমনটাও নয়, হত্যাকাণ্ডের পাশাপাশি রয়েছে আরও নানান অভিযোগ। যার সংখ্যাটা প্রায় দেড়শোর দোরগোড়ায়।
দাপুটে বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে এখন দেশ ছেড়ে থাকতে হচ্ছে ভারতে। সরকার পতনের পর গোপালগঞ্জ বাদে দেশে কিংবা বিদেশে কোথাও আওয়ামী লীগের নেতা থেকে কর্মীদের উপস্থিতি খুব একটা চোখে পড়েনি। প্রায় কেটেছে দুমাস। এই দুমাস পরে অবশেষে প্রথমবারের মতো তাঁদের দেখা গেল যুক্তরাষ্ট্রে।অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান হিসাবে জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দেন ড. ইউনূস। অধিবেশনের আগে বিমানবন্দরে ইউনূসকে দেখে দেখা যায় বিক্ষোভ।সেই বিক্ষোভ কোথায় দেখা যায় জানেন… নিউইউর্কের জন এফ কেনেডি বিমানবন্দরে ড. ইউনূসকে দেখে বিক্ষোভ দেখান আওয়ামী লিগের নেতা কর্মীরা।
একদিকে যখন ড. ইউনূসকে দেখে বিক্ষোভ প্রতিবাদে আওয়ামী লীগের সদস্যরা। অন্যদিকে বিএনপির তরফে দেখা গেল অন্য ছবি। ইউনূসকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে জড়ো হন বিএনপির নেতা থেকে কর্মীরা। দুই ভিন্ন মেরুর সদস্যদের উপস্থিতির কারনে বিমানবন্দরে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করতে দেখা যায় সেখানে।
এই পরিস্থিতিতে কী বলছেন. আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা….তাঁদের দাবি, শেখ হাসিনার বৈধ সরকারকে দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে উৎখাত করা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে থেকে এক নেতা বলেন, আবার শেখ হাসিনাকে ফিরিয়ে নিয়ে এসে, বাংলাদেশকে আবার আগের মতো সমৃদ্ধ করা হোক। আর সেই সমৃদ্ধ বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য দাবি জানানো হয় তাঁদের তরফে।
আওয়ামী লীগ যাতে আগামী নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে, তার জন্য দাবি জানান কোনও কোনও নেতা ও কর্মীরা। অন্যদিকে বিএনপির নেতা কর্মীরা বলছেন, ড. ইউনূস যতদিন জাতি সংঘের অধিবেশনে থাকবেন, ততদিনই মাঠে থাকবেন তাঁরা। শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে কেউ কেউ বিচারের দাবিও জানান। অন্যদিকে, কেউ তো আবার হাসিনাকে গ্রেফতারেরও দাবি জানান।
গত বছর শেখ হাসিনা যখন জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দেন, তখন তাঁর সফর সঙ্গী ছিলেন ১৪৬ জন। আর এবারে হাসিনার জায়গায় অধিবেশনে যোগ দেবেন ড. ইউনূস। তাঁর সফর সঙ্গী কতজন রয়েছেন জানেন? সেই সংখ্যাটা কি ছাপাতে পারল হাসিনার সফর সঙ্গীর থেকে। না… এবারে তা হল না। কারন এবারে ড. ইউনূসের সফর সঙ্গী মাত্র ৫৭ জন। জানানো হয় একান্ত প্রয়োজনীয় ব্যক্তি ছাড়া কাউকেই তালিকাভুক্ত করা হয়নি।