অনুসূয়া দাস, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বিস্ফোরণে রক্তাক্ত লেবানন। তবে লেবাননের উপর এই হামলা কেন ইজরায়েলের? লেবাননের উপর ক্ষোভ কি গত বছরের অক্টোবর থেকেই? মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতির আহ্বান কি মানবে ইজরায়েল- হেজবোল্লা? যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে কে কে সই করল ? শেষ কোথায়… জানা নেই কারোর। অশান্তি অব্যাহত পশ্চিম এশিয়ায়। একের পর এক আঘাত, পাল্টা আঘাতে ক্ষতবিক্ষত বেশ কয়েকটি এলাকা।
ইজরায়েল ও হেজবোল্লা। গত জুলাই মাস থেকে যাদের মধ্যে সংঘাত তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে । একের পর এক রকেট হামলা। লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যা। এই ঘটনাতেই আগুনে ঘৃতাহুতি পড়ে সেপ্টেম্বর মাসে। তখন থেকেই লেবাননে হামলার ধার বাড়ায় ইজরায়েল। প্রথমে পেজার, তারপর একে একে ওয়াকি-টকি, টেলিফোনের মতো ইলেকট্রনিক ডিভাইসের মতো বিস্ফোরণে রক্তাক্ত হয় লেবানন।গত ১১ মাসে একের পর এক আক্রমনে গাজা কার্যত নরককুণ্ডে পরিণত হয়েছে। ইজরায়েলের আক্রমণে হামাস কার্যত কোনঠাসা হয়েছে । এবার উদ্বেগ লেবানন নিয়ে।
কী কারণে এবারের যুদ্ধ
গত বছর ৭ অক্টোবর থেকে ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইনের হামাসের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। গাজা ওয়েস্ট ব্যাঙ্ক মিলিয়ে মারা গেছেন হাজার হাজার মানুষ। নিহতদের মধ্যে আবার একটা বড় অংশ শিশু। গোড়া থেকেই এই যুদ্ধে প্যালেস্তাইন ও হামাসকে সমর্থন করে আসছে লেবানন। সেই আবহেই লেবাননে একের পর এক হামলা চালানো শুরু করে ইজরায়েল। লেবাননের দক্ষিণ ও পূর্ব অংশে হেজবোল্লার ১১০০ টি ঠিকানায় চলে হামলা। বেইরুটে চলে রকেট হামলা।গাজাযুদ্ধে হামাসের সমর্থনে রয়েছে ইরানের মদতপুষ্ট জঙ্গি সংগঠন হেজবোল্লা। বহুবার তারা ইজরায়েলে রকেট হামলা চালিয়েছে। তাই বহুদিন ধরেই হেজবোল্লাকে কড়া হুঁশিয়ারি দিচ্ছিল তেল আভিভ। গত কয়েকদিন ধরে সন্ত্রাসের জাল ছিঁড়তে এই শিয়া জঙ্গি গোষ্ঠীকে টার্গেট করে লেবাননে আগুন ঝরাচ্ছে ইজরায়েলি ফৌজ।
তৎপর লেবানন প্রশাসন
লেবানন প্রশাসন জানিয়েছেন বুধবার পর্যন্ত ইজরায়েলের হামলায় আহত হন ৪০০-র কাছাকাছি।
ইজরায়েলের সেনাপ্রধান বলেন…যুদ্ধবিমানের আওয়াজ শুনতে পাওয়া যাচ্ছে। সারাদিন অভিযান চালানোর পর শত্রুর দেশে প্রবেশ করার কথা বলেন তিনি। হেজবোল্লাকে অপদস্ত করতে সমস্তরকম প্রয়াস চালিয়ে যাওয়ার কথা জানানো হয় ইজরায়েলের সেনাপ্রধানের তরফে।লেবাননের এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্ধিগ্ন আন্তর্জাতিক মহল।
ইজরায়েল ও হেজবোল্লার মধ্যেকার যুদ্ধ পরিস্থিতি ক্রমশ বাড়তে থাকায় লেবাননে অস্থায়ী যুদ্ধ বিরতির আহ্বান জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এই আহ্বানে সায় জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও তাদের অন্যান্য মিত্র দেশগুলো।১১টি দেশ ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই সমস্যার কূটনৈতিকভাবে সমাধানের জন্য সুযোগ করে দিতে অবিলম্বে ২১ দিন যুদ্ধ বন্ধ রাখার প্রস্তাব দিয়েছে।একটি যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, এই ধরনের যুদ্ধ অসহনীয় । যা মধ্যপ্রাচ্যের আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেবে। এর কোনটিই লেবানন ও ইজরায়েলের স্বার্থে নয়।যৌথ বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছে যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ফ্রান্স , জার্মানি, ইতালি, জাপান, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য ও কাতার।যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবএল এমন সময় যখন ইজরায়েলের সামরিক বাহিনীর প্রধান তাঁর সৈন্যদের বলেছিলেন, হেজবোল্লাকে লক্ষ্য করে লেবাননে ব্যাপক বিমান হামলা তাদের জন্য শত্রুদের এলাকায় প্রবেশের পথ তৈরি করে দিতে পারে।এবার দেখার বিষয়, কোন পথে মোড় নেয় হেজবোল্লা-ইজরায়েলের যুদ্ধ।