অনুসূয়া দাস, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ চাঁদের মাটিতে পালকের মতো অবতরণ করে এর আগে ইতিহাস রচনা করেছিল ভারত। এবার নয়া মাইল ফলক ছোঁয়ার পালা ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর (ISRO)…
চন্দ্রযান ৩ (Chandrayaan 3) যেখানে তার ভাবনা শেষ করেছিল। ঠিক তারপর থেকেই নতুন ভাবনা শুরু করেছে ইসরো। মহাকাশ গবেষণার নতুন উচ্চতায় পৌঁছতে চলেছে এবার ভারত। চন্দযান ৩-র পর এবার চন্দ্রযান ৪। আগের থেকে কতটা এগিয়ে ইসরোর এই নতুন পরিকল্পনা? চাঁদে অবতরণ করা এবং সুরক্ষিতভাবে পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার বিশেষ পদক্ষেপ এই অভিযানের মাধ্যমে
চন্দ্রযান ৪ কী করবে ?
১. এই মিশনে আরোহী ও অবতরণের বিশেষ বৈশিষ্ট্য থাকবে
২. পৃথিবীতে আনা হবে চাঁদের পাথর ও মাটি
৩. উন্নত এলভিএম-৩ রকেটের সাহায্যে উৎক্ষেপন করা মিশনটির লক্ষ্য চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণ করা
৪. চন্দ্রযান ৪ চাঁদের মাটির নমুনা সংগ্রহ করবে এবং পৃথিবীতে নিয়ে আসবে
৫. চন্দ্রকক্ষপথে জটিল ডকিং এবং আনডকিং অপারেশনগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে
কীভাবে কাজ করবে চন্দ্রযান ৪ ?
১. চন্দ্রযান-৪ দুটি ধাপে উৎক্ষেপণ করা হবে
২. প্রথম বার ব্যবহার করা হবে এলভিএম-৩
৩. দ্বিতীয় ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হবে পিএসএলভি
৪. চন্দ্রযান-৪-এ পাঁচটি আলাদা আলাদা যান(রোভার এবং রেঞ্জার)থাকবে
ইসরো ২০১৮ সালে শুক্র অভিযানের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছিল। স্থির হয়েছিল, ২০২৩ সালের মধ্যেই পৃথিবীর দ্বিতীয় নিকটতম গ্রহে পাঠানো হবে মহাকাশযান। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ইসরোর বিজ্ঞানীরা চন্দ্রযান অভিযান নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। অবশেষে এবার শুরু হল চন্দ্রযান-৪ এর পরিকল্পনা।
চন্দ্রযান ৪-র জন্য বরাদ্দ
চন্দ্রযান ৩-র সাফল্যের পরে মোদী সরকার চন্দ্রযান ৪-র জন্য ৩৬ মাসের মিশন টাইমলাইন সহ ২,১০৮ কোটি টাকা বরাদ্দ করে। মিশনটিতে দুটি মহাকাশযানের স্ট্যাক থাকবে। যার প্রতিটিতে পাঁচটি মডিউল থাকবে। স্ট্যাক ১ চন্দ্রের নমুনা সংগ্রহের উপর ফোকাস করবে চন্দ্রযান ৪।
মহাকাশ অভিযানের যে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ভারতের, সেই অভিলক্ষ্যে পৌঁছতে চন্দ্রযান ৪-র অভিযানের গুরুত্ব অপরিসীম। চাঁদের মাটিতে পালকের মতো অবতরণ করে এর আগে ইতিহাস রচনা করেছিল ভারত। এবার নয়া মাইল ফলক ছোঁয়ার পালা ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরোর।
এবারের এই গবেষণা ইসরোর জন্য যথেষ্ট চ্যালেঞ্জের। কারণ মহাকাশ প্রযুক্তি গবেষণার ক্ষেত্রে ভারত কতটা এগিয়েছে তাও এই অভিযান প্রমাণ করবে। চাঁদের মাটিতে নোঙর করা, সেখানে নেমে নমুনা সংগ্রহ করা এবং সেখান থেকে বেরিয়ে এসে পুণরায় পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ভেদ করে মাটি ছোঁয়া । প্রতিটা পদক্ষেপ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।এই অভিযান আরও এক কারনে গুরুত্বপূর্ণ… এই অভিযানে ভারতের নিজস্ব পরিচিতি গড়ে উঠতে চলেছে। অন্যের উপর নির্ভরশীল না থেকে নিজেই স্পেস স্টেশন তৈরির লক্ষ্য রয়েছে ভারতের। ২০৩৫ সালের মধ্যে সেই কাজে সফল করতে চায় ভারত।
কবে চাঁদে পাঠানো হবে চন্দ্রযান ৪ ?
২০২৭ সালে চন্দ্রযান ৪ চাঁদে পাঠাতে চাইছে ভারত। চন্দ্রযান ৪ পাঠানোর ক্ষেত্রে রয়েছে এক নতুনত্ব। এক খণ্ডে নয়, দুখণ্ডে চাঁদে পৌঁছবে এই মহাকাশযান। যা এর আগে কখনও হয়নি।চন্দ্রযান ৪ এতটাই ভারী হবে যা ভারতীয় কোনও রকেট তাকে একসঙ্গে চাঁদে পাঠাতে পারবে না। তাই এইভাবে দুখণ্ডে ভাগ করে চন্দ্রযান ৪ কে পাঠানো হবে চাঁদে। সেখানে দুটি অংশ নিজেদের মধ্যে জুড়ে যাবে।
ভারতীয় শিল্প জগৎ. শিক্ষা জগৎ যুক্ত হচ্ছে এই অভিযানে। তাই এতে কর্মসংস্থানের আরও সুযোগ তৈরি হবে বলে মনে করা হচ্ছে। দেশীয় প্রযুক্তির উপর ভরসা করেই চন্দ্রযান ৪-র লক্ষ্য নিয়েছে ইসরো (ISRO)।চন্দ্রযান ৪ অভিযানের সায় দিল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। চন্দ্রযান ৪ সফল হলে, আমেরিকা, রাশিয়া ও চিনকে টেক্কা দেবে ইসরো।