নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক: এবার প্রাথমিকেই হবে পঞ্চম শ্রেণীর পাঠ। এই নিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করল স্কুল শিক্ষা দপ্তর। রাজ্যের ২৩৩৫ প্রাথমিক স্কুলে ২০২৫ সাল থেকেই পঞ্চম শ্রেণির পঠনপাঠন হবে। শিশুদের বিনামূল্যে এবং বাধ্যতামূলক শিক্ষার অধিকার আইন, ২০০৯ অনুযায়ী এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিক্ষা দপ্তরের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষক সংগঠন। বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডলের বক্তব্য, দেশের বিভিন্ন রাজ্যে প্রাথমিক স্কুলেই পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। এ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম ছিল পশ্চিমবঙ্গ। কয়েক বছর ধরেই পঞ্চম শ্রেণীকে প্রাথমিকের আওতায় আনার ভাবনা চিন্তা চলছিল কিন্তু তা কার্যকারী হল এবার। এই নির্দেশিকাকে স্বাগত জানালেও তাঁর প্রশ্ন বিদ্যালয়গুলিতে যথেষ্ট পরিকাঠামো আছে তো? যথেষ্ট সংখ্যক শিক্ষক আছেন তো?’’
এছাড়াও শিক্ষকমহলের বক্তব্য, এর জন্য পর্যাপ্ত পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে যার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। যথেষ্ট সংখ্যক শিক্ষক নেই। কোথাও আবার গ্রুপ-ডি, গ্রুপ-সি কর্মচারীও নেই। তাই শিক্ষার অধিকারের কথা বলা হলেও প্রকৃত শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে শিশুরা। প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলিতে সার্বিক পরিকাঠামোর উন্নয়ন, পর্যাপ্ত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী নিয়োগের ব্যবস্থা অবিলম্বে কর দরকার বলেও মত তাঁদের। রাজ্যের প্রকাশিত স্কুলগুলির তালিকায় রয়েছে কলকাতার ৫২টি স্কুল। এ ছাড়াও হুগলির ১০৮টি, হাওড়ার ১৪৫টি, জলপাইগুড়ির ২৭টি, বাঁকুড়ার ৪৫টি, বীরভূমের ১১৯টি, কোচবিহারের ২৫টি, দক্ষিণ দিনাজপুরের ১৭টি, মালদহের ২২৯টি, মুর্শিদাবাদের ৪৬৭টি, নদিয়ার ১৪০টি, উত্তর ২৪ পরগনার ১৯৮টি, পশ্চিম মেদিনীপুরের ৬৫টি, পূর্ব বর্ধমানের ৮৩টি, পূর্ব মেদিনীপুরের ৬১টি, পুরুলিয়ার ২৪টি, উত্তর দিনাজপুরের ৭৯টি, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ৩২৭টি এবং পশ্চিম বর্ধমানের ৮৭টি প্রাথমিক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি যোগ করা হবে নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকে।
শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর, রাজ্যে ২০১৮-১৯ সালে শুরু হয়েছিল পঞ্চম শ্রেণিকে প্রাথমিকে আনার প্রক্রিয়া। বিগত কয়েক বছরে প্রায় ১৮ হাজার স্কুলে প্রাথমিকে পঞ্চম শ্রেণি যুক্ত করা হয়েছে। তবে বেশ কিছু সময় ধরে এই কাজ বন্ধ ছিল। আবার সেই প্রক্রিয়া চালু করা হল। এবার ২,৩৩৫টি প্রাথমিক স্কুলে পঞ্চম শ্রেণী যুক্ত করার বিজ্ঞপ্তি জারি করল শিক্ষা দফতর। আর এটা হওয়ার পর মোট সংখ্যা দাঁড়াল ২০ হাজারের মতো। বাকি রইল আরও ৩০ হাজার মতো স্কুল। পরিকাঠামো উন্নয়নের উন্নয়নের পাশাপাশি ধাপে ধাপে সেগুলিকেও যুক্ত করা হবে বলে জানা গেছে।