সুচারু মিত্র, সাংবাদিক: লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় সংসদ সংখ্যা কমেছে বিজেপির। কিন্তু শতাংশে বিচার করলে মাত্র চার শতাংশ ভোট যদি নিজেদের দিকে ফেরানো যেত তাহলেই ফলাফলটা অন্যরকম হতো বলেই বিজেপির পর্যালোচনা বৈঠকে বারবার উঠে এসেছে। আর এবার ফের অমিত শাহের হাত ধরেই সংগঠনে ঝাঁকুনি দিতে চাইছে বঙ্গ বিজেপি। রাজ্যে ছয় কেন্দ্রের উপনির্বাচনের আগে অমিত শাহের সফর ছিল সেই কারণেই তাৎপর্যপূর্ণ। আর সফরে এসেই স্পষ্টবার্তা অমিত শাহের ২০২৬ সালে বাংলায় পরিবর্তন চাইলে এখন থেকেই বিজেপিকে আরো সুদৃঢ় সংগঠন করতে হবে, প্রত্যেকটা বুথে ,প্রত্যেকটা মণ্ডলে একশ করে সদস্য চাই। যারা ১০০ সদস্য করতে পারবেন না তাদের নেতৃত্বে থাকার প্রয়োজন নেই এমনই বার্তা দিয়ে গেলেন অমিত শাহ।
এবার সেই সূত্র ধরেই এবার এগোচ্ছেন সুনীল বানসাল অমিতাভ চক্রবর্তীরা তারাও দলের বিভিন্ন স্তরে জানিয়ে দিয়েছেন সদস্য সংখ্যা করার টার্গেট এক কোটি। কারণ চার শতাংশ ভোট নিজেদের দিকে ফিরিয়ে আনতে পারলেই কেল্লাফতে করা যাবে ২০২৬ এ বাংলার নির্বাচনে। তবে কোন জল মেশানো রিপোর্ট নয়, অতীতেও দেখা গিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের মন রাখতে জল মেশানো রিপোর্ট দিয়েছে বিজেপি। কিন্তু দেখা গেছে আদতে সক্রিয় সদস্য সংখ্যা সেভাবে নেই। তাই এবার অবিশ্বাস স্পষ্ট বার্তাই দিয়ে গিয়েছেন ইজেডসিসির বৈঠকে। কোন জল মেশানো রিপোর্ট যেন কেন্দ্রকে পাঠানো না হয়,যা রয়েছে সেটাই দিতে হবে। সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি অমিত শাহ এবার নির্দেশ দিয়েছেন দলের পুরনো নেতাদের মাঠে নামানোর জন্য।
এই সদস্য সংগ্রহ অভিযানে এখন মূল দায়িত্ব শমিক ভট্টাচার্য। ইতিমধ্যেই দলীয় তরফে নির্দেশ করা হয়েছে পুরনো নেতাদের লিস্ট বানিয়ে তাদেরকেও সক্রিয় করতে হবে। ইতিমধ্যেই দিলীপ ঘোষ ,রাহুল সিনহাকে আহ্বান জানিয়েছেন শমিক ভট্টাচার্য। তবে আরও বহু পুরনো নেতা রয়েছে যারা ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে দলের সঙ্গে দূরত্ব অনেকটা বাড়িয়েছেন। ফলে সেই সমস্ত নেতাদের লিস্ট তৈরি করে তাদেরকে এক্টিভ করার দায়িত্ব নিতে হবে দলের বর্তমান নেতৃত্বকেই। আর প্রত্যেক মাসেই সাংগঠনিক রিপোর্ট সুনীল বানসাল মারফত পৌঁছে দিতে হবে দিল্লির নেতৃত্বের কাছে। কিন্তু আবার সাবধান বাণী অমিত শাহের কোন জল মেশানো রিপোর্ট যেন না দেওয়া হয় শীর্ষ নেতৃত্বকে, ফলে সদস্য সংগ্রহ অভিযানকে সামনে রেখেই এখন থেকেই তৎপরতা বঙ্গ বিজেপি শিবিরে। মিসড কল তো বটেই এমনকি নমো অ্যাপ এছাড়াও জায়গায় জায়গায় ক্যাম্প করে সদস্য সংগ্রহ অভিযান করার কথা বলা হয়েছে। বুথে যারা অন্তত ১০০ করে সদস্য করতে পারছেন না সেই সমস্ত মণ্ডলের নেতাদের কপালে যে দুঃখ রয়েছে তা স্পষ্টতই জানিয়ে দেয়া হয়েছে নেতৃত্বের তরফে। অমিত শাহের বার্তা পাওয়ার পর এখন বিজেপি উঠে পড়ে লেগেছে এক দিকে সদস্য সংগ্রহ অভিযানকে সফল করতে, আর অন্যদিকে পুরনো নেতাদের আবার পথে নামিয়ে সংগঠনকে চাঙ্গা করতে। কিন্তু এই দুদিক দিয়েই কি ২০২৬ এর বাংলা নির্বাচনে বাজিমাত করতে পারবে বিজেপি?.. তা হয়তো বলে দেবে সময়।