সুজিত চট্টোপাধ্যায়, এডিটর ইন চিফ: তকভিল ফ্রান্সের অভিজাত বর্গের লোক হয়েও বলেছিলেন, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া কোনও সমাজে একবার শুরু হলে তাকে ঐতিহাসিকভাবে আটকে রাখা সম্ভব নয়। একটা গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা বা সংবিধানকে চক্রান্ত করে সাময়িকভাবে উল্টে দেওয়া সম্ভব কিন্তু তাতে গণতান্ত্রিক সমাজের উত্থান প্রক্রিয়াকে অবরোধ করা সম্ভব নয়।
১৯৭২ সালে বাংলাদেশে সংবিধান লাগু হওয়ার পর পরই ১৯৭৫ সালে মুজিব হত্যা। জেনারেল জিয়া ক্ষমতায় আসীন হন। সংবিধান সংশোধন করে আবারও বাংলাদেশ গণতান্ত্রিকভাবে উঠে দাঁড়ায়। এরপর হুসেন মহম্মদ এরশাদের শাসনকাল। বাংলাদেশ জুড়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পর হাসিনা সরকার একচ্ছত্র ক্ষমতা ভোগ করে। ১৫ বছরের শাসনকালকে বিএনপি স্বৈরাচারী হিসাবে চিহ্নিত করলেও রাজপথের আন্দোলনে তারাই ছিল অগ্রভাগে। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ থেকে ছাত্রজনতার একাংশ ক্ষমতায় এসেছে। কিন্তু তার সাংবিধানিক বৈধতাকে বার বার চ্যালেঞ্জ জানাচ্ছে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের শিরদাঁড়া ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করেছে ড. ইউনুসের সরকার।
সংবিধানের যে অংশ অন্তর্বর্তী সরকারের পছন্দ, সেটা তারা মানছে। যেটা স্বার্থবিরোধী, তাই নিয়ে চলছে না মানার প্রতিযোগিতা। এমতাবস্থায় রাষ্ট্রপতি থেকে সেনাপ্রধান নিশ্চিতভাবে সংবিধান রক্ষার দায়িত্ব নেবেন। অপর দিকে অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম উপদেষ্টা নাহিদ হাসান জানিয়েছেন গুরুত্বপূর্ণ সংবিধান সংশোধনের জন্য রাজনৈতিক দলগুলির ঐক্যমত প্রয়োজন। অর্থাৎ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ কীভাবে পুনর্জাগরণ হবে, তাই নিয়েই চলছে চর্চা।