রিয়া দাস, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ পাকিস্তানের মাটিতে নতুন করে গড়া হবে হিন্দু মন্দির। ৬৪ বছরের পুরানো মন্দির গড়ার জন্য প্রায় ১ কোটি পাকিস্তানি রুপি বরাদ্দ করেছে সরকার, ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার সমান। ইতিমধ্যেই মন্দিরের কাজের জন্য শুরু হয়ে গিয়েছে তোড়জোড়।
পাকিস্তানের পঞ্জাব প্রদেশে ইরাবতীর পশ্চিম তীরে নারওয়াল জেলার জাফরওয়াল শহর সেখানেই রয়েছে ৬৪ বছর পুরানো ওই বাওলি সাহিবের মন্দির। পাকিস্তানের ইভাকুই ট্রাস্ট প্রপার্টি বোর্ড সূত্রে খবর, ১৯৬০ সালে শেষবার ওই মন্দিরে উপাসনা হয়েছিল। তার পর থেকে এত দিন জীর্ণ, পরিত্যক্ত অবস্থাতেই পড়ে ছিল এই মন্দিরটি। এবার সেই মন্দিরকেই ফের পুনর্নির্মাণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। বর্তমানে নারওয়াল জেলায় হিন্দু মন্দির একটিও নেই। এই মন্দিরে শেষবার উপাসনা হয়েছিল ১৯৬০ সালে। তারপর থেকে এই মন্দিরটি পরিত্যক্ত অবস্থাতেই পড়ে ছিল বলে জানা গিয়েছে। সেখানে কোনও হিন্দু মন্দির না থাকায় নারওয়াল জেলার সংখ্যালঘু হিন্দুরা বাড়িতেই পূজার্চনা করেন। কেউ কেউ আবার উপাসনার জন্য বাধ্য হয়ে সুদূর শিয়ালকোট কিংবা লাহোরের মন্দিরে যান। তবে এই শহরে বাস করেন প্রায় ১৪৫৩টি হিন্দু পরিবার। অন্যদিকে পরিসংখ্যান বলছে, পাকিস্তানে অন্তত ৭৫ লক্ষ হিন্দুরা বসবাস করেন। স্বাধীন দেশ হিসেবে পাকিস্তান আত্মপ্রকাশ করার পর নারওয়াল জেলায় সরকারি হিসাবে অন্তত ৪৫টি হিন্দু মন্দির ছিল। দিনের পর দিন রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে একে একে সব মন্দির ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে। তবে এই পরিস্থিতিতেও বিগত ২০ বছর ধরে বাওলি সাহিবের মন্দিরটি সংস্কারের দাবি জানিয়ে এসেছে পাক ধর্মস্থান কমিটি। এবার সংখ্যালঘু হিন্দুদের সেই দাবি মেনেই মন্দির সংস্কারের কাজে হাত দিল পাক সরকার।
মন্দির চত্বরের আড়াই বিঘা জমিতে সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। মন্দিরের পুরনো প্রাচীরটিও নতুন করে গড়া হবে। সংস্কারের পর মন্দিরটির রক্ষণাবেক্ষণের ভার তুলে দেওয়া হবে পাক ধর্মস্থান কমিটির হাতে। গোটা প্রক্রিয়ায় অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন সে দেশের সুপ্রিম কোর্টের একক সদস্য কমিশনের চেয়ারম্যান শোয়েব সিদ্দল ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য মনসুর মসীহ। পাক ধর্মস্থান কমিটির সভাপতি সাওয়ান চন্দ বলেন, মন্দির পুনর্নির্মাণ হলে নারওয়ালের হিন্দুদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হবে। তাদের ধর্মীয় আচার পালনের জন্য বহু দূর পাড়ি দিয়ে আর অন্য জেলায় যেতে হবে না। বর্তমানে আড়াই বিঘা জমিতে সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে সবটাই করা হবে। অন্যদিকে, পাক সরকারের এই উদ্যোগে খুশি নারওয়াল জেলার মানুষেরা।