নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক: ফের ঘর্ণিঝড়ের তান্ডব চলতে পারে বঙ্গের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে। বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া নিম্নচাপকে ঘিরে এমনই আশঙ্কার মেঘ দেখছেন আবহাওয়াবিদেরা। পূর্ব -মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপটি ক্রমশ তার শক্তি বাড়াচ্ছে। ২২অক্টোবর এটি গভীর নিম্নচাপে পরিনত হবে। ২৩ তারিখে এটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। ২৪ তারিখ মধ্যরাতে এটি ল্যান্ড ফলের সম্ভাবনা। পূরী আর সাগরদ্বীপের কাছে ল্যান্ডফল হবে বলেই জানাচ্ছে হওয়া অফিস।ঘূর্ণিঝড় তৈরি হলে, তার সরাসরি প্রভাব পড়তে পারে বাংলা ও ওড়িশার উপকূলে।ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিলে এটির নাম হবে ‘দানা’। ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার পর এটি উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হবে।
আবহওয়াবিদের মতে,বৃহস্পতিবার অর্থাৎ ২৪ অক্টোবর সকালেই বাংলা ও ওড়িশার উপকূলের কাছাকাছি পৌঁছে যাবে ঘূর্ণিঝড়।বাংলার সাগরদ্বীপ এবং ওড়িশার পুরীর মধ্যবর্তী কোনও জায়গায় ভূভাগে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড়। স্থলভাগে আচড়ে পড়ার পর ঘন্টায় এই ঝড়ের গতিবেগ থাকতে পারে ১০০ থেকে ১১০ কিমি। দমকা হাওয়া বইতে পারে ১২০ কিলোমিটার বেগে প্রতি ঘণ্টায়। বুধবার থেকে দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সব জেলাতেই হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে।কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত ভাবে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বৃহস্পতি ও শুক্রে দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, হাওড়া, হুগলি, কলকাতা ও বাঁকুড়ায় দুই-এক জায়গায় অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এই আট জেলাতেই ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব লক্ষ্য করা যাবে। সোমবার থেকেই আন্দামান সাগর উত্তাল হতে শুরু করেছে। সে ক্ষেত্রে মৎস্যজীবীদের সোমবার থেকেই আন্দামান সাগরে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত পূর্ব ও মধ্য বঙ্গোপসাগরে মৎস্যজীবীদের না যাওয়ার জন্য সতর্ক করা হয়েছে। আবহাওয়াবিদের মতে,
বুধবার থেকে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার উপকূলে ঘন্টায় ৪০-৫০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। ক্রমশ বাড়বে এই হওয়ার গতিবেগ। বুধবার বিকেল থেকেই বাংলা ও ওড়িশা উপকূলের কাছাকাছি সমুদ্র উত্তাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছে আলিপুর আবহাওয়া দফতর। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত তা আরও বেশি উত্তাল হওয়ার সম্ভাবনা। সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরেও বুধবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এই ঝড়ের ফলে ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা প্রবল। কাঁচাবাড়ি যেমন ভেঙে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে তেমনই গাছপালা ভেঙে পড়া, বিদ্যুৎ সংযোগ এবং সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ারও আশঙ্কাও রয়েছে।পাশাপাশু ঝড়ে টিনের শেড উড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থাকছে। তাই আগে থেকেই সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছে হাওয়া অফিস।