নারায়ণ দে, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ঘূর্ণিঝড় ডানায় ( Dana Cyclone) লণ্ডভণ্ড ওড়িশা। দীর্ঘ এলাকা জুড়ে গাছ উপড়ে, ইলেকট্রিক পোস্ট ভেঙে গিয়েছে। ভদ্রক-জুড়ে বন্ধ একাধিক রাস্তাঘাট। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় উদ্ধারকাজ চালাচ্ছে দুর্যোগ মোকাবিলা বাহিনী।
মধ্যরাতে ওড়িশার ভিতরকণিকা ও ধামরার মাঝে ল্যান্ডফল করে ঘূর্ণিঝড় ডানা। ভদ্রক, কেন্দ্রপাড়া, বালেশ্বর, জগৎসিংপুর জেলাগুলিতে ঝড়ের গতিবেগ ছিল প্রায় ১১০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টায়। শুক্রবার সকাল ১০টায় আইএমডি (IMD) জানায়, ঘূর্ণিঝড় ডানার ল্যান্ডফল প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। প্রায় সাড়ে ৮ ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চালিয়েছে ডানা। তবে হাওয়ার দাপট কমলেও বৃষ্টি কমার নাম নিচ্ছে না। ঘূর্ণিঝড়টি ক্রমেই নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। শনিবারের মধ্যে এই আবহাওয়াও কেটে যাবে বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন। কিন্তু এরমধ্যেই ব্যপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের একাংশ।
ধামরা, ভিতরকণিকা জুড়ে অহরহ গাছ উপড়ে গিয়েছে। কোথাও বাড়ির ছাদে ভেঙে পড়েছে গাছের মোটা ডাল। কোথাও আবার গোড়া থেকে উপড়ে গিয়েছে বিশাল মোটা গাছ। ইতিউতি ইলেক্ট্রিক পোস্টও ভেঙে গিয়েছে। তবে জিরো ক্যাজুয়ালটি মিশন নেওয়ায় প্রাণঘাতীর কোনও ঘটনা ঘটেনি ওড়িশায়। মুখ্যমন্ত্রী মোহন চরণ মাঝি জানান, ১৯৯৯ সালের সুপার সাইক্লোনে প্রায় ১০ হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন। ওই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েই আগে থেকে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল ওড়িশা সরকার। তিনি জানান, মাত্র চার দিনে প্রায় ছয় লক্ষ মানুষকে নিরাপদ আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এই কাজে অংশ নিয়েছিল এনডিআরএফ (NDRF), ওডিআরএফ (ODRF), এমনকী আশা কর্মীরাও। ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল একটি ছবি। যেখানে এক বৃদ্ধাকে পিঠে তুলে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন এক আশাকর্মী।
ওড়িশায় জিরো ক্যাজুয়ালটি মিশন সফল হলেও একজনের প্রাণ গিয়েছে বাংলায়। দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার পাথরপ্রতিমায় ঝড়ের সময় ইলেক্ট্রিকের কাজ করতে গিয়ে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আড়াই লক্ষেরও বেশি মানুষ ত্রাণশিবিরে আশ্রয় নিয়েছে। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় যুদ্ধকালীন তৎপরতায় মেরামত ও উদ্ধারকাজ চলছে।