নাজিয়া রহমান, প্রতিনিধি: বাংলাদেশের আটটি দিবস বাতিলের সিদ্ধান্ত অন্তর্বর্তী সরকারের। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বাতিল হওয়া আটটি দিবসের মধ্যে পাঁচটিই শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের জন্ম ও মৃত্যু সংক্রান্ত। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেই মহম্মদ ইউনিস ১৫অগস্ট জাতীয় শোক দিবসের ছুটির দিন বাতিল করেন। ১৯৭৫ সালে ওই দিনে সেনা অফিসারেরা সপরিবার হত্যা করেছিলেন তৎকালীন রাষ্ট্রপতি তথা জাতীর জনক শেখ মুজিবুর রহমানকে। তাই ১৫ অগস্ট দিনটি জাতীয় শোক দিবস হিসেবে হত। এই দিনটি যেমন ছুটির তালিকা থেকে বাতিল করা হয়েছে তেমনি আরও সাতটি দিন বাতিল করা হলো।
এর মধ্যে ৭ মার্চ। ১৯৭১ সালে ওই দিন ঢাকার জনসভায় শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম স্বাধীন বাংলাদেশের ডাক দিয়ে বলেন, ” এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম। ২০১৭ সালে ইউনেস্কো মুজিবের ওই ভাষণকে বিশ্বের গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ্য ঐতিহ্য হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। ঐতিহাসিক ৭ মার্চ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। দিবসটিকে ‘ক’ শ্রেণিভুক্ত হিসেবে ঘোষণা করে মন্ত্রিপরিষদ ।সেই থেকেই ৭মার্চ দিনটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ দিবস হিসেবে পালিত হয়। ১৭ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম দিবস ও জাতীয় শিশু দিবস, ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ভাই শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামালের জন্মবার্ষিকী, ৮ আগস্ট শেখ হাসিনার মা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী, ১৮ অক্টোবর শেখ হাসিনার ছোট ভাই শেখ রাসেল দিবস। ৪ নভেম্বর জাতীয় সংবিধান দিবস ও ১২ডিসেম্বর স্মার্ট বাংলাদেশ দিবস। কিন্তু ৭ মার্চ, ১৭ মার্চ, ১৫অগস্ট, ৪ নভেম্বরের ছুটি বাতিল নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন তুলেছেন বহু মানুষ। আবার অনেকে মনে করছেন, ৭ মার্চের ছুটি বাতিল করে মুক্তিযুদ্ধকেই অস্বীকার করল ইউনিস সরকার। ৭ মাট্চের সেই ঐতিহাসিক ভাষণে মুজিবুর রহমান পাকিস্থানি সেনার বিরুদ্ধে যুদ্ধের ডাক দিয়েছিলেন। মুজিবুরের মুখে শোনা গেছিল’৷ প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোল। তোমাদের যাককিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা করতে হবে।” তিনি আরও বলেন”আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না। আমরা এদেশের মানুষের অধিকার চাই। আর যদি একটা গুলি চলে আর যদি একটা হত্যা করা হয়, আমি যদও হুকুম দিতে নাও পারি – তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবিলা কর। রক্ত যদি দিয়েছি, রক্ত আরও দেব। এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ। ” অন্যদিকে ১৯৭২ ৪ নভেম্বর। সদ্য স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধান চালু হয়। সেই সংবিধানে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি প্রকাশ করা হয়। যেখানে মূলনীতি হিসেবে জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গনতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষর কথা উল্লেখ রয়েছে। বাংলাদেশর নতুন অন্তর্বর্তী সরকার সংবিধান সংশোধন কমওশন গঠন করা হয়েছে। অনেকেই আবার দাবি তুলেছে নতুন সংবিধান রচনার। তাই ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, ৪নভেম্বরের ছুটি বাতিল করে নতুন সংবিধান প্রনয়নের পথে দাঁচ্ছে ইউনুস সরকার।