নাজিয়া রহমান, সাংবাদিক: অবশেষে কি শান্ত হল মধ্যপ্রাচ্য? ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা থেকে এমনই ইঙ্গিত মিলেছে।মঙ্গলবার রাতে যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দিয়েছে ইজরায়েলের মন্ত্রিসভা। যাতে অবশেষে আশার আলো দেখা মিলছে। ইজরায়েলের মন্ত্রিসভার যুদ্ধবিরতির পক্ষে ভোট দেওয়ার পর নীতিগত ভাবে এই চুক্তি অনুমোদন করেছেন বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। গতবছর থেকে শুরু হওয়া কয়েক হাজার মানুষের রক্ত ঝরার পর অবশেষে যুদ্ধবিরতি। জানা গেছে এই যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত ইজরায়েলের হামলায় শুধুমাত্র লেবাননে মৃত্যু হয়েছে ৩৮০০ জনের। পাশাপাশি আহত হয়েছে অন্তত ১৬ হাজার মানুষ। এমন কি যুদ্ধবিরতি চুক্তির আগে মঙ্গলবার দুপুরেও লেবাননে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইজরায়েল। এর পর রাতে যুদ্ধবিরতির পক্ষে সম্মতি দেন নেতানিয়াহু।চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার পর এক্স হ্যান্ডেলে এই বিষয়ে বার্তা দেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেন। তিনি লেখেন, ‘আজ আমার কাছে মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে অত্যন্ত ভালো একটি খবর রয়েছে। ইজরায়েল ও লেবাননের প্রধানমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা হয়েছে। এর পর অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানাচ্ছি, ইজরায়েল ও হেজবোল্লার মধ্যে ধ্বংসাত্মক যুদ্ধ শেষ করতে আমেরিকার প্রস্তাব মেনে নিয়েছে দুই পক্ষ।’ এরপর দেখা যায় ২৭ নভেম্বর স্থানীয় সময় ভোর ৪টে থেকে লাগু হয়েছে এই যুদ্ধবিরতি। জানা গেছে আগামী দুমাস হেজবুল্লা ও ইজরায়েল একে অপরের উপর কোনও রকম হামলা চালাবে না। এও জানা যেগে পরিস্থিতি অনুযায়ী মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে। যদিও এই যুদ্ধ বিরতির মূল কারিগর দুটি দেশ। আমেরিকা ও ফ্রান্স। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুও এই চুক্তি সম্পন্ন হওয়ার জন্য আমেরিকাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তবে তিনি হুঁশিয়ারিও দিয়ে জানিয়েছেন,যুদ্ধবিরতি সম্পন্ন হলেও এর মেয়াদ কতদিন থাকবে তা নির্ভর করছে লেবাননের উপর। যদি কোনওভাবে এর শর্ত লঙ্ঘন করা হয় সেক্ষেত্রে কড়া জবাব দিতে দ্বিধা করবে না তাঁরা। দুটি দেশের যুদ্ধবিরতি চুক্তির শর্তে যা বলা হয়েছে, হিজবুল্লাহ ও অন্যান্য সন্ত্রাসী সংগঠন ইজরায়েলের নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকি হয়ে উঠবে না। লেবাননে হেজবোল্লা তাদের সন্ত্রাসবাদী সংগঠন নতুন করে তৈরি বা বাড়াতে পারবে না। আগামী ৬০ দিনের মধ্যে, লেবানন নিজেদের এলাকা নিয়ন্ত্রণের জন্য নিরাপত্তাবাহিনী মোতায়েন করতে পারবে। যদি হেজবোল্লা বা অন্য কোনও সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ইজরায়েলের জন্য ঝুঁকির কারণ হয়ে ওঠে সেক্ষেত্রে আত্মরক্ষার অধিকার থাকবে ইজরায়েলের। তবে যাই হোক এই যুদ্ধ বিরতিতে কিছুটা আশার আলো দেখাচ্ছে দুই দেশের মানুষকে। এই বিরতিতে মধ্যপ্রাচ্যে খানিকটা শান্তি ফিরবে বলে মত যুদ্ধ বিশেষজ্ঞমহলের।