গোটা বাংলার আজ মন খারাপ কারণ বাস্তবে আজ ‘উমা’র বিসর্জন। প্রয়াত পথের পাঁচালীর দূর্গা উমা দাশগুপ্ত। সোমবার সকালে সকালে বাইপাসের এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
সায়ন্তিকা ব্যানার্জি, সাংবাদিক: সমস্ত অপুকে অপেক্ষায় রেখে চিরনিদ্রায় দূর্গা। একসঙ্গে আর রেলগাড়ি দেখতে যাওয়া হবে না কোনদিন। উমা দাশগুপ্তের প্রয়াণ যেন একনিমেষে ছোট বেলার অনেক স্মৃতিই নিয়ে চলে গেল।
কয়েক বছর আগে ক্যানসার হয়েছিল তার। তার পর শুরু হয় চিকিৎসা। প্রাথমিকভাবে চিকিত্সায় সাড়াও দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই মারণরোগ আবারও শরীরে বাসা বাঁধে তার। লড়াই চললেও শেষ রক্ষা হল না। চিকিত্সার জন্য তাকে ভর্তি করানো হয়েছিল বাইপাসের ধারের এক বেসরকারি হাসপাতালে। সেখানেই সোমবার সকাল ৮টা নাগাদ শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন উমাদেবী।
‘পথের পাঁচালী’ তার প্রথম এবং শেষ সিনেমা। কোনও দিন অভিনয় করেননি আর। কারণ তিনি মনে করেছিলেন যে দূর্গাকে মানুষ মারা যেতে দেখেছেন তাকে আবার অভিনয় করতে দেখলে কোথাও গিয়ে দূর্গা চরিত্রটির সঙ্গে অবমাননা করা হবে তবে নিজের অন্তরে আজীবন যাপন করেছেন দূর্গাকে।
উমা দাশগুপ্ত শৈশব থেকেই থিয়েটার করতেন। যে স্কুলে পড়তেন, সেখানকার প্রধানশিক্ষকের সঙ্গে সত্যজিৎ রায়ের পরিচয় ছিল। আর সেই শিক্ষকের মাধ্যমেই সত্যজিৎবাবু আবিষ্কার করেছিলেন ‘পথের পাঁচালি’র দুর্গাকে। যদিও তার বাবা চাননি মেয়ে সিনেমায় আসুক। তবে শেষমেশ উমার পরিবারকে রাজি করিয়ে নেন পরিচালক। সিনেপর্দায় দুর্গার মৃত্যু শুধু অপুর মনে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করেছিল তাই নয়, দুর্গার মৃত্যু কাঁদিয়েছিল আপামর দর্শককূলকেও।
আজ গোটা বাংলার আরও একবার চোখ ভিজে যাওয়ার পালা। আজ যে বাংলার উমার বিদায়…