সহেলী দত্ত,নিজস্ব প্রতিনিধিঃ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকেই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের অস্তিত্ব মুছে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছিল। এবার রাষ্ট্রপতির বাসভবন বঙ্গভবনের হল থেকে সরিয়ে ফেলা হয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ছবি। সোশ্যাল মিডিয়ায় এমনই একটি পোস্ট করে জানান অন্তর্বর্তী সরকারের সদ্য নিযুক্ত উপদেষ্টা মেহফুজ আলম। অন্যদিকে বাংলাদেশ স্কুল পাঠ্যক্রমে আরবি ভাষাকে যুক্ত করা হয়েছে। যা ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পড়ুয়াদের পড়তে হবে। যদিও উচ্চমাধ্যমিকের বাংলা পাঠ্যবই থেকে চারজন লেখকের লেখা বাদ দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে শেখ মুজিবর রহমান, মহম্মদ জাফর ইকবাল, মহাদেব সাহা আরও একজন লেখকের নাম বিবেচনাধীন অবস্থায় রয়েছে। বাদ দেওয়ার কারণ এরা ফ্যাসিবাদীদের অনুগত। মুজিবরের ভাষা আন্দোলন নিয়ে রচনা বায়ান্নর দিনগুলো থাকবে না ২০২৫ এর পাঠ্য বইয়ে। এই খবর প্রকাশ্যে আসতে ক্ষোভ ফুঁসছে পদ্মাপারের নাগরিকরা। ক্ষোভ তৈরি করেছে আওয়ামী লীগের কর্মী সমর্থকদের মধ্যে। কিছুদিন আগে গুলিস্তানে জিরো পয়েন্টে ইউনুস সরকারের বিরুদ্ধে পথে নেমেছিলেন আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীরা। সেখানে তাদের বিক্ষোভ প্রস্তুত ছিল ইউনুস সরকারের পুলিশ। শেষমেষ বিক্ষোভকারীদের উপর লাটিচার্জ করে পুলিশ। চলে ধড়পাকড়। এরপরই মুজিবরের লেখা পাঠ্যবই থেকে সরানো, যেন একটার পর একটা ঘটনার মাধ্যমে আওয়ামী লীগের কর্মীদের মনে আঘাত করা হচ্ছে। এই বিষয়ে মেহফুজ আলম সোশ্যাল মিডিয়ায় তার পোস্টে লেখেন,
বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে ৭১ সালের পরবর্তী ফ্যাসিস্ট শেখ মুজিবর রহমানে ছবি সরানো হয়েছে। এটা লজ্জার যে, আমরা ৫ অগাস্টের পর বঙ্গভবন থেকে তার ছবি সরাতে পারিনি। জুলাই মাসের চেতনা বেঁচে থাকা পর্যন্ত তাকে আর কোথাও দেখা যাবে না।
অন্যদিকে, অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পরই জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে নির্দেশ দেয়, পাঠ্যসূচিকে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের চেতনা অনুযায়ী করতে হবে। অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে জানান হয়েছে
শেখ মুজিব এবং তার মেয়ে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে যা করেছেন সেটা আওয়ামী লীগকে স্বীকার করতে হবে। ১৯৭২ সালের অগণতান্ত্রিক সংবিধান, দুর্ভিক্ষ, কোটি কোটি টাকা পাচার এবং হাজার হাজার ভিন্নমতাবলম্বী ও বিরোধীদের বিচারবহির্ভূত হত্যার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে।
ছাত্র আন্দোলনের জেরে গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের ১৫ বছরের শাসনের অবসান হয়। দেশ ছাড়তে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। তারপর থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ও ম্যুরাল ভেঙে ফেলা হয়।
অন্যদিকে বাংলাদেশের আইন উপদেষ্টা কিছুদিন আগেই জানিয়েছেন দেশে জুলাই অগাস্ট মাসে গণহত্যা চালিয়ে যারা পালিয়ে আছেন। তাঁদের ধরার জন্য ইন্টারপোলের মাধ্যমে রেড নোটিস জারি করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতার করে বাংলাদেশে নিয়ে আসার জন্য সর্বোচ্চ পদক্ষেপ নেওয়া হবে। অর্থাৎ আওয়ামী লীগকে ভেঙে ফেলার জন্য বদ্ধপরিকর হয়ে আছে বাংলাদেশের অন্তরবর্তী সরকার। তবে দেশে আওয়ামী লীগের পরিস্থতি আগামী দিনে কী হবে তা সময় সাপেক্ষ ব্যাপার।