রিয়া দাস, নিজস্ব প্রতিনিধিঃ ফের জ্বলছে বদলের বাংলাদেশ। ঢাকার ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, কবি নজরুল সরকারি কলেজ ও সোহরাওয়ার্দী কলেজে হামলা ও ভাঙচুরের রেশ কাটতে না কাটতেই এবার ঢাকার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা। আহত দুপক্ষের বেশ কয়েকজন। কয়েকদিন আগেই বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলার ঘটনা সামনে এসেছে। একাধিক আন্দোলনকারীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ। অন্তর্বর্তী সরকারের ১০০ দিন পূরণ উপলক্ষেই কয়েকদিন আগে জাতির উদ্দেশ্যে ভাষণ দেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। সেখানেই তিনি হিন্দুদের উপরে হামলার ঘটনাকে অতিরঞ্জিত বলে উল্লেখ করেন। তবে তারই মধ্যে এই শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে ফের উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশ।
কীভাবে ঘটল ঘটনা ?
রবিবার রাজধানী ঢাকার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলে বিটাক মোড়ে রাত ১১টা থেকে সংঘর্ষ শুরু হয়। রাত ২টো ১৬ মিনিট পর্যন্ত দফায় দফায় সংঘর্ষ চলে বলে জানা গিয়েছে। বাংলাদেশ ট্রেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হলের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা প্রথম তাদের ওপর হামলা করেছে। এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও সেখানে জড়ো হতে থাকে। সেই সময় দুপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের খবরে পুলিশ এলেও দুপক্ষের তোপের মুখে তারা চলে যায় বলে জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
তারা আরও জানান, সংঘর্ষের সময় প্রথমে পুলিশ উপস্থিত হলেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হয়নি। পরবর্তীতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আসার পর দুপক্ষের মাঝে অবস্থান নেয় ও সংঘর্ষ থামানোর চেষ্টা শুরু করে। এই ঘটনায় বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৫ জন গুরুতর আহত হয়েছেন বলে জানা যায়। তবে এই সংঘর্ষের কারণ কি তা এখনও জানা যায়নি। এই দুই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংঘর্ষের ঘটনায় পুরো এলাকায় আতঙ্ক তৈরি হয়েছে।
সংঘর্ষের সূত্রপাত
সংঘর্ষের কারণ সম্পর্কে নানা তথ্য পাওয়া গেছে। সূত্রে খবর, চা পান করা নিয়ে কথা কাটাকাটির জেরে সংঘর্ষে জড়িয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বুটেক্সের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, পলিটেকনিকের লতিফ হলের কয়েকজন ছাত্র আজিজ হলে এসে রাজনৈতিক তৎপরতা চালালে উত্তেজনা শুরু হয়। পলিটেকনিকের কয়েকজন জানান, লতিফ হল থেকে চার-পাঁচ শিক্ষার্থী আজিজ হলে গেলে তাদের মারধর করা হয়। অনেকে বেরিয়ে গেলেও একজনকে আটকে রাখা হয়। এতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয় ও সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়।
ঢাকার তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার অফিসার ইনচার্জ মহম্মদ গাজী শামিমুর রহমান জানান, বাংলাদেশ টেক্সটাউল বিশ্ববিদ্যালয়ের ও ঢাকার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় কয়েকজন আহতও হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে। আহতদের ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এলাকাটি ঘিরে রেখেছে। পরিস্থিতি শান্ত না হওয়া পর্যন্ত তারা অবস্থান করবেন বলে সূত্রের খবর।